তেজগাঁও কলেজ
তেজগাঁও কলেজ,ঢাকা, বাংলাদেশের ঢাকায়, ফার্মগেটে অবস্থিত একটি বেসরকারি কলেজ। উচ্চ মাধ্যমিক ছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা পরিচালনায় কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত।
![]() কলেজ লোগো | |
নীতিবাক্য | Be a Builder |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ইআইআইএন | ১০৮৫৩৩ |
অধ্যক্ষ | শামীমা ইয়াসমিন (ভারপ্রাপ্ত) |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ৪৫০+ |
অবস্থান | , |
শিক্ষাঙ্গন | ১৬ ইন্দিরা রোড, ফার্মগেট, ঢাকা |
ওয়েবসাইট | tejgaoncollege |
![]() |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে জনাব মাওলানা আবুল খায়েরের নিরলস কর্মপ্রচেষ্টায় ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা ইসলামিয়া হাই স্কুলে ঢাকা নাইট কলেজ নামে সর্বপ্রথম এই কলেজের যাত্রা শুরু। তখন কলেজটির সভাপতি ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী জনাব মফিজ উদ্দীন আহমেদ ও সম্পাদক ছিলেন জনাব শফিকুল ইসলাম। সেসময়ে কলেজের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল, শিক্ষকরা বিনা বেতনে ক্লাস নিতেন। তারপর প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে জনাব মফিজ উদ্দীন কলেজটিকে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় স্থানান্তর করেন। এখানে ১৮ মাস ক্লাস চলার পর আবার তেজগাঁও পলিটেকনিক হাই স্কুলে (বর্তমান তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়) স্থানান্তর করা হয়।
এখানে ক্লাস চলে ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। নানা প্রতিকূলতায় কলেজকে আবারও স্থানান্তর করা হয় তেজগাঁও শিল্প এলাকার আসাদুল হকের ক্রাউন লন্ড্রিতে। অব্যবহিত পরে অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে কলেজটিকে নিয়ে আসেন ফার্মগেটের বর্তমান আল-রাজী হাসপাতালে। এসময়ে 'ঢাকা নাইট কলেজ' নামটি পাল্টে বর্তমান 'তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা' নামটি রাখা হয়।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধের পর জনাব [তোফায়েল আহমেদ ] অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিলে কলেজটিকে স্থায়ী একটি নিবাস দিতে প্রাণান্ত প্রয়াস শুরু করেন। তিনি তৎকালীন ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীদের সহায়তায় ঢাকার ফার্মগেটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলেজ ও ছাত্রাবাসের জন্য জায়গা ক্রয় করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী জনাব ইউসুফ আলী কর্তৃক ১২টন ঢেউটিন দিয়ে প্রথমবারের মতো কলেজের নিজস্ব অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
১৯৯৮ সালে প্রফেসর মোঃ আবদুর রশীদ অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেবার পর থেকে পাল্টে যেতে থাকে কলেজের অবয়ব। নতুন নতুন বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স বিষয় চালু হতে থাকে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। শিক্ষক - শিক্ষার্থীদের কাছে স্বীকৃতি পান আধুনিক তেজগাঁও কলেজের রূপকার হিসেবে। বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ হারুন-অর-রশিদ ১২ এপ্রিল,২০২২ দায়িত্ব গ্রহন করেন। বর্তমানে কলেজটি ফার্মগেটের ১৬ নম্বর ইন্দিরা রোডে সাতটি নিজস্ব ভবন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।[১]
বিবরণ
সম্পাদনাতেজগাঁও কলেজ নিজস্ব একটি আটতলা(বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান প্রফেশনাল ভবন),তিনটি সাততলা,একটি ছয়তলা ও দুটি চারতলাবিশিষ্ট ভবন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই কলেজে সকাল ও বিকালে আলাদা শিফটে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী ছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অধ্যয়নের ব্যবস্থা রয়েছে। কলেজটিতে ছেলে-মেয়ে উভয়ের শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নির্ধারিত পোশাক বা ইউনিফর্ম রয়েছে, অবশ্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীর জন্য কোনো নির্ধারিত ইউনিফর্ম নেই।
কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা কমনরুম রয়েছে। কলেজ প্রাঙ্গনে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে একটি শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। এছাড়া কলেজের একটি ভবনের দোতলায় পূর্ণাঙ্গ একটি জামে মসজিদ রয়েছে। কলেজের নতুন ভবনের নিচতলায় একটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম বা মিলনায়তন রয়েছে। যার নামকরন করা হয়েছে প্রিন্সিপাল আবদুর রশীদ অডিটোরিয়াম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীভুক্ত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রেখে যাচ্ছে।
অনুষদসমূহ
সম্পাদনাতেজগাঁও কলেজে বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন এবং প্রফেশনাল কোর্সের ২৯টি আলাদা আলাদা বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা পরিচালনা করে আসছে। এই কলেজের বিভাগসমূহ হলো[২]:
১. কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) |
এছাড়াও রয়েছে:
- গার্হস্থ্য অর্থনীতি
- কম্পিউটার শিক্ষা
- সাচিবিক বিদ্যা ও অফিস ব্যবস্থাপনা
- প্রকৌশল অঙ্কন
গ্রন্থাগার ও পরীক্ষাগার
সম্পাদনাকলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সুবিধার্থে তেজগাঁও কলেজে একটি সুপরিসর গ্রন্থাগার রয়েছে। গ্রন্থাগারটি পালাক্রমে একাধিক গ্রন্থাগারিকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ানুগ ব্যবহারিক শিক্ষার প্রয়োজনে রয়েছে পরীক্ষাগার।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাকলেজের শিক্ষার্থীদেরকে সহশিক্ষা কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতে কলেজে বিভিন্ন সময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া ডিবেটিং ক্লাব, থিয়েটার ক্লাব, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট কার্যক্রমও পরিচালিত হয় কলেজে। এছাড়া বার্ষিক মিলাদ মাহফিল, বনভোজন আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা হয়।
শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদের সংগঠন "কোয়ালিটি ইম্প্রুভমেন্ট এন্ড ইন্টারন্যাশনাল টুরিস্ট ক্লাব" রয়েছে। প্রতি বছর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মান উন্নয়ন সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে থাকে।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
সম্পাদনা- শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি- রাজনীতিবিদ
প্রকাশনা
সম্পাদনাকলেজ থেকে অনিয়মিতভাবে অর্ণব নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হয়।