রানী তিষ্যরক্ষা (খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী) তৃতীয় মৌর্য সম্রাট অশোকের শেষ স্ত্রী ছিলেন। অশোকাবদান মতে অশোকের পুত্র এবং উত্তরাধিকারী কুনালকে অন্ধ করার জন্য তাকেই দায়ী করা হয়। [১] যদিও তার কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই।

তিষ্যরক্ষা
জন্মখ্রিস্টপূর্ব ২৬০-২৫০ অব্দ
মৃত্যুখ্রিস্টপূর্ব ২৩৫ অব্দ
দাম্পত্য সঙ্গীঅশোক
রাজবংশমৌর্য
অশোকের রাণী

জীবনের প্রথমার্ধ সম্পাদনা

ধারণা করা হয় যে তিষ্যরক্ষা অশোক প্রধান রাণী, অসান্ধিমিত্রের প্রিয় দাসী ছিলেন। তার কর্ত্রী মারা যাবার পরে, সে পাটলিপুত্র গিয়ে একজন দুর্দান্ত নর্তকী হন এবং তার নাচ এবং সৌন্দর্য দিয়ে রাজা অশোককে মুগ্ধ করেন। পরে, তিনি তাঁর উপপত্নী হয়েছিলেন এবং অশোকের পরবর্তী জীবনে তিনি তাঁর স্বাস্থ্যেরও যত্ন নেন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] [ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ]

কুনাল সম্পাদনা

এটাও বিশ্বাস করা হয় যে তার এবং অশোকের মধ্যে বয়সের পার্থক্যের কারণে, তিনি অশোকের পুত্র কুনালের প্রতি আকৃষ্ট হন যিনি ধর্মপ্রাণ ছিলেন। তৎকালীন মৌর্য সাম্রাজ্যে অবস্থানের কারণে তিষ্যরক্ষাকে কুনাল তার মা হিসাবে মানতেন। কুনালার কাছ থেকে প্রত্যাখ্যান পাওয়ার পরে, তিষ্যরক্ষা এতটাই রেগে গেলেন যে তিনি তাকে অন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে কুনালের চোখগুলি আকর্ষণীয় এবং সুন্দর ছিল এবং এটাই মূলত তিষ্যরক্ষাকে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট করেছিল। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] [ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ]

পটভূমি সম্পাদনা

রাধা গুপ্তের নেতৃত্বে চন্দ্রগুপ্ত সভা (মৌর্য সাম্রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী ( মহামান্য ) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুনাল তক্ষশীলা (তক্ষশিলা) বিদ্রোহকে বশীভূত করার জন্য এগিয়ে যান। এদিকে তিষ্যরক্ষা একটি ষড়যন্ত্র করেন। কুনালের বিজয়ের পরে ষড়যন্ত্রটি সফল হয়েছিল।

চক্রান্ত অনুসারে, অশোককে তক্ষশীলার গভর্নরের কাছ থেকে দুটি অত্যন্ত মূল্যবান রত্নের জন্য অনুরোধ করতে বলা হয়েছিল যা সবচেয়ে অসাধারণ বলে মনে করা হত। তিষ্যরক্ষার লেখা চিঠির গোপন অর্থ অশোক বুঝতে পারেন নি এবং তাই কুনালাকে ব্যাখ্যা করা হয় নি। যাইহোক, কুনাল অবিলম্বে চিঠির লুকানো অর্থ বোঝেন, কিন্তু তার পিতার প্রতি তাঁর আনুগত্য ও প্রেমের কারণে, তিনি তার নিজের চোখ অপসারণ করতে বাধ্য অনুভূত করেন। [২] তারপরে তিনি তাঁর দু'চোখা পটলিপুত্রের মাগধের দরবারে প্রেরণ করেন। অশোক তার ভুল বুঝতে পেরেছিল কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। তৎক্ষণাত রাধাগুপ্ত তিষ্যরক্ষার মৃত্যু দন্ডাদেশ প্রদান করেন। তবে ধারণা করা হয় যে, এই সংবাদটি জানতে পেরে তিষ্যরক্ষার আগেই আত্মহত্যা করেছিলেন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] [ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ]

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে সম্পাদনা

হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর দ্বিতীয় উপন্যাস "কাঞ্চনমালা" তে তিষ্যরক্ষাকে বিশিষ্ট ভূমিকায় উপস্থাপন করেছেন। তিষ্যরক্ষার গল্পটি বাঙালি লেখক সমরেশ মজুমদার তাঁর "সরণগাঁথা" উপন্যাসেও আনা হয়েছে, যদিও, অশোকের জীবন ঘিরে ভিন্ন আঙ্গিকে। একই গল্প নিয়ে বিশিষ্ট বাঙালি নাট্যকার অমিত মৈত্র 'ধর্মশোক' শিরোনামে একটি নাটকে তৈরি করেছিলেন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] [ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. John S. Strong (১৯৮৯)। The Legend of King Aśoka: A Study and Translation of the Aśokāvadāna। Motilal Banarsidass Publ.। পৃষ্ঠা 18। আইএসবিএন 978-81-208-0616-0। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১২ 
  2. "Know Everything about Samrat Ashoka and His Five Wives"National Views (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৯-১২। ২০১৮-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৩