টপোলজিঅন্তরীকরন জ্যামিতিতে পৃষ্ঠতল হল দ্বিমাত্রিক ভাজ, এবং যেমন একটি "বিমূর্ত পৃষ্ঠতল" ইয়ক্লীডীয় স্থানে অনুবিদ্ধ থাকেনা। উদাহরণস্বরুপ, ক্লেইন বোতল এমন একটি পৃষ্টতল, যা আত্ম-প্রতিচ্ছেদ ছাড়া ত্রিমাত্রিক ইয়ক্লীডীয় স্থানে প্রকাশ করে যায়না, অর্থাৎ এটি ত্রিমাত্রিক স্থানে অনুবিদ্ধ থাকছে না।

একটি উন্মুক্ত ক্ষেত্র, যেখানে x, y ও z দেখানো হয়েছে।

সাধারণ ব্যাখ্যা

সম্পাদনা

গণিতে পৃষ্ঠতল একটি জ্যামিতিক গড়ন যা একটি সমতলের বিকৃতাবস্থার সদৃশ ঘটাতে পারে। সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ সাধারণ ত্রিমাত্রিক ইউক্লিডীয় স্থান R3 এ কঠিন বস্তুর সীমা থেকে উৎপন্ন হয়, যেমন গোলক। পৃষ্ঠতলের সঠিক সংজ্ঞা এর অনুষঙ্গের উপর নির্ভর করে। সাধারণত বীজগণিতীয় জ্যামিতিতে পৃষ্ঠতল নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, যেখানে টপোলজীঅন্তর্জলীয় জ্যামিতির ক্ষেত্রে এটা হয়না।

পৃষ্ঠতল হল দ্বিমাত্রিক স্থানঃ যার মানে হল পৃষ্ঠের উপরের ছুটন্ত কোন বিন্দু শুধু দুটি দিকে যাবে। অন্য কথায়, প্রত্যেক বিন্দুতে স্থানাঙ্ক স্থাকবে যাতে দ্বিমাত্রিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার সংজ্ঞা দেয়া যাবে। উদাহরণস্বরুপ, পৃথিবীর পৃষ্ঠতল দ্বিমাত্রিক স্থানের সদৃশ হয়, যা অক্ষ ও দ্রাঘিমা নিয়ে গঠিত, যা দ্বিমাত্রিক স্থানাংকের জোগাড় দেয়।

পৃষ্ঠতলের এই ধারণা পদার্থবিদ্যা, প্রকৌশল, কম্পিউটার গ্রাফিক্স এবং আরো অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরুপ উড়োজাহাজবায়ুগতিবিদ্যার ধর্ম জানার জন্যে এটি ব্যবহৃত হয়, বাতাসের পৃষ্টতল বরাবর প্রবাহ এক্ষেত্রে বিবেচনায়না আ হনায়।

সংজ্ঞা ও উদাহরণ

সম্পাদনা

পৃষ্ঠতল বলতে এমন একটি টপোলজিক্যাল স্থান বোঝায় যার প্রত্যেক বিন্দু ইউক্লীডীয় প্লেন E4 এর কিছু উন্মুক্ত সাবসেট এর প্রতি একটি উন্মুক্ত নিকটস্থ হোমিওমরফিক হয়। এমন নৈকট্যতা এই হোমিওমরফিকতাকে স্থানাঙ্ক তালিকাও বলা হয়। এই তালিকার মাধ্যমে ইউক্লীডীয় সমতলের প্রমিত স্থানাঙ্ক নিকটস্থ উত্তরাধিকারী পায়। এসব স্থানাঙ্ককে ‘’’স্থানিক স্থানাঙ্ক’’’ বলে। আর তল বর্ণনাকারী হোমিওমরফিজম স্থানিক ইউক্লিডীয় হবে। এই বিষয়ের বেশীরভাগ লেখনীতে মনে করা হয় প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে যে টপোলজিক্যাল স্থান হিসেবে তল অশুন্য, দ্বিতীয়বার গনণাযোগ্য এবং হাউসডর্ফ। এটাও মনে করা হয় যে যে তলগুলো সম্পর্কিত। এই নিবন্ধের বাকী অংশে ধরা হবে (যদি নির্দিষ্ট করে দেয়া না থাকে) যে তল অশুন্য, হাউজডর্ফ, দ্বিতীয় গনণাযোগ্য ও সংযুক্ত। আরও সাধারনভাবে একটি সীমিত তল একটি হাউসডর্ফ টপলজিক্যাল স্থান যার প্রত্যেকটা বিন্দুর উন্মুক্ত নৈকট্য আছে যা C তে H2 এর কিছু উন্মুক্ত সাবসেটের প্রতি হোমিওমরফিক। এদের স্থানিক তালিকাও বলে। উপরের অর্ধেক তলের সীমা x অক্ষ। এই তালিকার মাধ্যমে তলের x অক্ষে একটি বিন্দু ম্যাপ করা যেতে পারে যাকে সীমাবিন্দু বলা যায়। এসব বিন্দুর সমষ্টিকে ঐ তলের সীমা বলা হয়, যা এক ম্যানিফোল্ড হওয়া প্রয়োজন, তার মানে বদ্ধ বাকের সমষ্টি। অপরপক্ষে, x অক্ষের ঠিক উপরে আকা বিন্দুকে অভ্যন্তরীন বিন্দু বলা যায়। আর সেই বিন্দুগুলোর সমষ্টিকে অভ্যন্তরীন বলে, যা সবসময় অশুন্য হয়। বদ্ধ চাকতি সীমাসহ তলের সাধারণ উদাহরণ। চাকতির সীমা বৃত্তাকার হয়। “তল” শব্দটি ব্যবহৃত হয় সীমাহীন তল বোঝাতে। নির্দিষ্টভাবে যে তলের সীমা শুন্য তাকে আমরা সাধারনভাবে তল বলে জানি। শুন্য সীমার তল যদি নিশ্ছিদ্র হয় তা বদ্ধ তল হয়। দ্বিমাত্রিক গোলক, দ্বিমাত্রিক টোরাস এবং সত্যিকার প্রক্ষিপ্ত সমতল বদ্ধ তলের উদাহরণ। মবিয়াস ট্রিপ এমন একটি তল যার ঘড়ির কাটার দিকের ঘূর্ণন ও তার বিপরীতে ঘূর্ণন স্থানীয়ভাবে আলাদা করা যায়, কিন্তু বিশ্বব্যাপী নয়। সাধারনভাবে তল উদীয়মান বলা যায় যদি এটি মবিয়াস স্ট্রিপের হোমিওমরফিক নকল ধারণ না করে;সজ্ঞানে এর দুটি পার্শ্ব থাকতে হবে। উদাহরণস্বরুপ, গোলক আর টোরাস উদীয়মান, কিন্তু প্রক্ষিপ্ত সমতল নয়, কারণ তারা মবিয়াস ট্রিপের হোমিওমরফিক হয়। ব্যবকলনবীজগানিতীক জ্যামিতিতে তলের টপোলজিতে আলাদা গঠন বসানো হয়। এই গঠন মসৃণ (যা একে তল থেকে ব্যবকলনীয় ম্যাপ পর্যন্ত সংজ্ঞায়িত করে), রিম্যানিয়ান ম্যাট্রিক (যা একে তলের উপর দৈর্ঘ্য ও কোন সংজ্ঞায়িত করে), জটিল (যা একে তল থেকে হোমিওমরফিক ম্যাপ পর্যন্ত সংজ্ঞায়িত করে) অথবা বিজগানিতীয় গঠন ( যার ফলে সিঙ্গুলারিটি খোজা যায় (যেমন চূড়া ও অন্তঃচ্ছেদ, যা শুধু টপোলজির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়না) হতে পারে।

তলের বাহ্যিক সংজ্ঞা ও স্থাপন

সম্পাদনা
 
একটি গোলকে প্যারামেট্রিকভাবে (x = r sin θ cos φ, y = r sin θ sin φ, z = r cos θ এর মাধ্যমে) অথবা পরোক্ষভাবে (x2 + y2 + z2r2 = 0 এর মাধ্যমে।)

ঐতিহাসিকভাবে, তলকে ইউক্লীডীয় স্পেসের সাবস্পেস হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হত। প্রায়শই সেসব তল কিছু নিশ্চিত ফাংশানের শুন্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, যা সাধারণত পলিনোমিয়াল ফাংশান। এরকম সংজ্ঞা থেকে ভাবা হত তল বিশাল কোন স্পেসের একটা অংশ, যাকে “বাহ্যিক” বলা হত। আগের অংশে, তলকে কিছু নির্ধারিত ধর্মের টপোলজিকাল স্পেস বলা হয় যার নাম হাউসডর্ফ ও স্থানীয়ভাবে ইউক্লীডীয়। এই টপোলজিক্যাল স্পেসকে অন্য স্পেসের সাবস্পেস ভাবা হয়না। এই হিসেবে বলা যায় উপরের সংজ্ঞাটি “অভ্যন্তরীন”। একটি তল “অভ্যন্তরীন” হলে তার ইউক্লীডীয় স্পেসের সাবস্পেস হওয়ার প্রয়োজন নেই। একটি তলকে অভ্যন্তরীনভাবে তল বলা গেলে তাকে বাহ্যিকভাবে তল নাও বলা যেতে পারে। যাই হোক, হুইটনি এম্বেডিং তত্ত্ব বলে সকল তলই ইউক্লীডীয় স্পেসে হোমিওমরফিকভাবে স্থাপিত হয়, আসলে E4 এ। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীন উভয় চেষ্টাই সাম্যাবস্থা মনে হয়। আসলে যেকোন নিশ্ছিদ্র তল যা উদীয়মান বা সীমা আছে তা E3 তে স্থাপন করা যায়, অপরদিকে নিশ্ছিদ্র, অনুদীয়মান, সীমাহীন প্রক্ষিপ্ত সমতল E3 তে স্থাপন করা যায়না। স্টাইনার তল, বয়েস তল, রোমান তল এবং ক্রস ক্যাপ E3 তে সত্যিকার প্রক্ষিপ্ত সমতলের মডেল, কিন্তু শুধুমাত্র বয়েস তলই ডুবন্ত তল। এ সব মডেলই তাদের মিথস্ক্রিয়ার বিন্দুতে ঐকিক। আলেক্সান্ডার শৃঙ্গীয় গোলক ত্রি গোলকে দ্বি গোলকের উদ্দীপ্ত স্থাপত্য।

 
একটি নট দেয়া টোরাস।

অন্য স্পেসে একটি তলের জানা স্থাপনাকে বাহ্যিক তথ্য হিসেবে মানা হয়। উদাহরণস্বরুপ টোরাসকে প্রমিত পদ্ধতিতে অথবা গ্রন্থিবদ্ধ পদ্ধতিতে E3 তে স্থাপন করা যায় (চিত্রানুযায়ী)। এরা হোমিওমরফিক, কিন্তু আইসোটপিক নয়। তারা টপোলজিক্যালি সাম্যাবস্থায় আছে কিন্তু তাদের স্থাপনা নয়। R2 থেকে উচ্চতর মাত্রা Rn দিকে একটি চলমান, ইনজেক্টেড ফাংশান এর চিত্রকে প্যারামেট্রিক তল বলে। এসব চিত্রকে এরকম বলার কারণ R2 এর দিকের x এবং y অক্ষের চিত্র। প্যারামিটার তল টপোলজিক্যাল তল নাও হতে পারে। তলের আবর্তন বিশেষ ধরনের প্যারামিটার তল। f যদি R3 থেকে R পর্যন্ত (যার গ্রাডিয়েন্ট শুন্যের কাছে) মসৃণ ফাংশান হয়, তবে f এর শুন্যের কেন্দ্রবিন্দু তলকে সংজ্ঞায়িত করে, একে অন্তর্নিহিত তল বলে। অদৃশ্য হওয়া গ্রাডিয়েন্টের শর্ত যদি পতিত হয়, তবে শুন্য কেন্দ্রবিন্দু একতা প্রদর্শন করে।

পলিগন থেকে গঠন

সম্পাদনা

প্রত্যেকটি বদ্ধ তল একটি জোড়সংখ্যক পার্শ্বের সজ্জিত পলিগন থেকে গঠন করা যায়, যাকে তলের গাঠনিক পলিগন বলে, এর কিনারার জোড় শনাক্তকরনের মাধ্যমে। উদাহরণস্বরুপ, নিচের প্রত্যেক পলিগন, সদৃশ লেবেলের দিক দিয়ে সাথে আটকানো, যাতে করে তীরগুলো একই দিকে দেখায়।

যেকোন গাঠনিক পলিগন এভাবেই লিখা যায়। যেকোন চূড়া থেকে শুরু করা হয়, আর যেকোন দিকে পলিগনের পরিধি দিয়ে যাওয়া হয় যতক্ষন পর্যন্ত শুরুর চূড়ায় না ফিরে আসা যাচ্ছে। এই ট্রাভার্সালের সময়, প্রত্যেক কিনারার লেবেল লিখে রাখা হয়, সূচক -১ রাখা হয় যদি কিনারার পয়েন্ট ট্রাভার্সের দিকের উল্টো হয়। উপরের চারটি মডেল হলঃ

  • গোলক:  
  • প্রক্ষিপ্ত সমতল:  
  • টরাস:  
  • ক্লেইন বোতল:  .

এই প্রকাশনা যা একটি তলের গাঠনিক পলিগন থেকে নেয়া হয় তা তলের (যার পলিগন কিনারা জেনারেটর হিসেবে লেবেল করা থাকে) গাঠনিক গ্রুপ এর ক্ষেত্রেও দেখা যায়। এটি সেইফার্ট-ভ্যান ক্যাম্পেন তত্ত্ব এর একটি প্রভাব। পলিগনের আট দেয়া কিনারা এক বিশেষ ধরনের স্থান ভাগফল ব্যবস্থা। এই ধারণা তলের নতুন অথবা বিকল্প গঠন তৈরী করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সংযুক্ত সারাংশ

সম্পাদনা

দুটি তল MN (যাদের M # N দ্বারা প্রকাশ করা হয়) এর সংযুক্ত সারাংশকে তাদের প্রত্যেকটি থেকে একটি চাকতি সরিয়ে এবং তাদের সীমা দিয়ে এটে যে ফল পাওয়া যায়, তা থেকে নেয়া হয়। চাকতির সীমা গোলাকার হয়, তাই সীমার উপাদানও গোলাকার হয়। M # N এর ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক সোমান্ড এর ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক এর উপাদানগুলোর যোগফল, বিয়োগ দুইঃ

 

গোলক S সংযুক্ত সারাংশ এর একটি অভিন্ন উপাদান যার মানে দাড়ায় S # M = M। এর কারণ একটি চাকতি সরানো মানে আরেকটি চাকতির থেকে যাওয়া, যা থেকে সরানো চাকতি প্রতিস্থাপন করে। টরাস T এর সাথে সংযুক্ত সারাংশকে অন্য সামেন্ড M এ '"হাতল" যুক্ত করার কারণ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। যদি M ঘূর্ণনযোগ্য হয়, তাহলে T # M ও হবে। এই সংযুক্ত সারাংশ মিশে যেতে পারে, তাই তলের সীমিত সমষ্টির সংযুক্ত সারাংশ ঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত আছে।

দুটি প্রক্ষিপ্ত সমতলের সংযুক্ত সারাংশ P # P, হল ক্লেইন বোতল K। এদের সংযুক্ত সারাংশ হল প্রক্ষিপ্ত সমতল ও টরাসের সংযুক্ত সারাংশের সাথে হোমিওমরফিক; ফর্মুলাটি হলঃ P # K = P # T। এভাবে তিনটি প্রক্ষিপ্ত সমতলের সংযুক্ত সারাংশ প্রক্ষিপ্ত সমতল ও টরাসের সংযুক্ত সারাংশের সাথে হোমিওমরফিক। প্রক্ষিপ্ত সমতলের সাথে জরিত সংযুক্ত সারাংশ অঘূর্ণনীয় হয়।

বদ্ধ তল

সম্পাদনা

বদ্ধ তল এমন একতি তল যা দৃঢ় ও সীমাহীন। উদাহরণঃ গোলক, টরাসক্লেইন বোতল এর মত স্থান। খোলা তলের উদাহরণ হলঃ চাকতি (যা একটি ছিদ্রযুক্ত গোলক); বেলন (যা দুটি ছিদ্রযুক্ত গোলক); এবং মবিয়াস ট্রিপ। যেকোন বদ্ধ ম্যানিফোল্ড এ, ইউক্লীডীয় স্থানে একটি তল স্থাপিত থাকে, যা পরম্পরাসূত্রে পাওয়া ইউক্লীডীয় টপোলজি এর সাপেক্ষে বদ্ধ থাকে, সেটা বদ্ধ তল নাও হতে পারে; উদাহরণস্বরুপ   এ স্থাপিত চাকতি যা সীমা ধারণ করে, এমন একটি তল যা টপোলজিকভাবে বদ্ধ, কিন্তু বদ্ধ তল নয়।

বদ্ধ তলের শ্রেনীবিন্যাস

সম্পাদনা
 
ঘুর্ণনযোগ্য বদ্ধ তলের উদাহরণ (বামে) ও সীমাযুক্ত তল (ডানে)। বামেঃ কিছু ঘুর্ণনযোগ্য বদ্ধ তল গোলক, টরাস ও ঘনকের তল। (ঘনক ও গোলক একে অপরের টপোলজিক্যাল সমাবস্থায় থাকে) ডানেঃ কিছু সীমাযুক্ত তল হল চাকতি, বর্গ তল, ও হেমিস্ফিয়ার তল। সীমা লাল বর্ণে দেখানো হয়েছে। এরা তিনটিই একে অপরের টপোলজিক্যাল সমাবস্থায় থাকে।

বদ্ধ তলের শ্রেণিবিন্যাস বর্ণনা করে যে যেকোন সংযুক্ত বদ্ধ তল নিচের তিনটির কিছু সদস্যের সাথে হোমিওমরফিক হয়ঃ

  1. গোলক;
  2. g টরির সংযুক্ত সারাংশ, কারণ  ;
  3. k প্রক্ষিপ্ত তলের সংযুক্ত সারাংশ, কারণ  

প্রথম দুই পরিবারের তল ঘূর্ণনযোগ্য। গোলক নিয়ে এই দুই পরিবারকে ০ টরির সংযুক্ত সারাংশ হিসেবে যোগ করা উপযুক্ত হবে। টরির g সংখ্যাটিকে তলের জেনাস। গোলক ও তলের ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক যথাক্রমে ২ ও ০, এবং সাধারণভাবে g সংযুক্ত সারাংশ হল 2 − 2g। তৃতীয় পরিবারের তল অঘূর্ণনীয়। প্রক্ষিপ্ত সমতলের ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক ১ হয়, এবং সাধারণভাবে k এর সংযুক্ত সারাংশ হল 2 − k

এর মানে দাড়ায় বদ্ধ তল নির্ণিত থাকে, হোমিওমরফিজম পর্যন্ত, দুটি তথ্য দ্বারাঃ ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক ও এর ঘূর্ননযোগ্যতা। অন্য কথায়, ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক এবং ঘূর্ণনযোগ্যতা হোমিওমরফিজম পর্যন্ত পুরোপরি শ্রেণিবদ্ধ।

বহুসংখ্যক সংযুক্ত উপাদানযুক্ত বদ্ধ তল তাদের প্রত্যেক সংযুক্ত উপাদানের শ্রেণী দ্বারা শ্রেণীবদ্ধ থাকে, এবং তা থেকে ধারণা করা হয় যে তল সংযুক্ত।

মনোয়েড গঠন

সম্পাদনা

এই শ্রেণিবিন্যাসকরনকে সংযুক্ত সারাংশের সাথে যুক্ত করতে হোমিওমরফিজম পর্যন্ত বদ্ধ তল সংযুক্ত সারাংশের ক্রিয়াকলাপে বিনিময় মনোয়েড গঠন করে, যেমনটা করে যেকোন স্থিত মাত্রার ম্যানিফোল্ড।এর পরিচয় হল এর গোলক, যেখানে প্রক্ষিপ্ত সমতল ও টরাস মনোয়েড গঠন করে, একটিমাত্র সম্পর্ক P # P # P = P # T, যাকে এভাবেও লিখা যায়ঃ P # K = P # T, যেখানে K = P # P। এই সম্পর্ককে ওয়ালথার ভন ডয়েক এর নামে ডয়েক তত্ত্ব ও বলা হয়, যিনি একে ১৮৮৮ সালে প্রমাণ করেন, এবং এর মত করেই ট্রিপল ক্রস তলকে ডয়েক তল বলে। জ্যামিতিকভাবে, টরাস (# T) সংযুক্ত সারাংশ একই তলের উভয় পার্শ্বেই হাতল যোগ করে, যেখানে ক্লেইন বোতল (# K) প্রক্ষিপ্ত সমতল (# P) এর সাথে সংযুক্ত সারাংশ একই ঘূর্ণনযোগ্য তলের বিপরীত পার্শ্বে হাতল যোগ করে; তল ঘূর্ণনযোগ্য নয়, তাই টরাস যোগ করা আর ক্লেইন বোতল যোগ করা যা এই সম্পর্ককে বর্ণনা করে।

সীমাযুক্ত তল

সম্পাদনা

সীমাযুক্ত সংকুচিত তল, একটি বদ্ধ তল যাতে অসীম সংখ্যক গর্ত আছে। এভাবে, একটি সংযুক্ত সংকুচিত তলকে সীমার উপাদান সংখ্যা ও সমানভাবে অনুরূপ বদ্ধ তলের জেনাস (সীমার উপাদান সংখ্যা, ঘূর্ণনযোগ্যতা, ও ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক) দিয়ে শ্রেনীবিন্যাস করা হয়। সংকুচিত তলের জেনাসকে অনুরূপ বদ্ধ তলের জেনাস দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। এই শ্রেণিবিন্যাসকরন প্রায় বদ্ধ তলের শ্রেণিবিন্যাসকরনের মতোইঃ বদ্ধ তল থেকে একটি চাকতি সড়ালে তা একটি সংকুচিত তলে পরিনত হ্য় যার সীমার উপাদান গোলাকার, আর k মুক্ত চাকতি সড়ালে তা সংকুচিত তলে পরিনত হ্য় যার সীমার উপাদান k সংখ্যক বিচ্ছিন্ন গোলাকার। গর্তগুলোর নির্ভুল অবস্থান অপ্রাসঙ্গিক, কারণ হোমিওমরফিজম গ্রুপটি হিসেবে যেকোন মাত্রার (কমপক্ষে ২) যেকোন সংযুক্ত ম্যানিফোল্ড এ কাজ করে। বিপরীতক্রমে, সংকুচিত তলের সীমা বদ্ধ ম্যানিফোল্ড এবং অতএব সীমিত সংখ্যক বৃত্তের বিচ্ছিন্নভাবে মিলিত থাকে; যা ওসব বৃত্তকে চাকতি দিয়ে পূরন করে এবং বদ্ধ তল তৈরী করে। এই অনন্য সংকুচিত ঘূর্ণনযোগ্য তলকে যার জেনাস g আর সীমার উপাদান k তাকে বেশীরভাগ   হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

রিম্যান তল

সম্পাদনা

সংকুচিত ২-ম্যানিফোল্ডের শ্রেনিবিন্যাসের উদাহরণ বলা যায় সংকুচিত রিম্যান তল এর এর শ্রেণিবিন্যাস - যার মানে সংকুচিত জটিল ১-ম্যানিফোল্ড। যেখানে প্রত্যেক জটিল ম্যানিফোল্ড ঘূর্ণনযোগ্য, প্রক্ষিপ্ত সমতলের সংযুক্ত সারাংশ জটিল ম্যানিফোল্ড নয়। এভাবে, সংকুচিত রিম্যান তলগুলোকে তাদের জেনাস অনুযায়ী টপোলকিক্যালভাবে চিহ্নিত করা হয়। জেনাস ম্যানিফোল্ডে গর্তের সংখ্যা গণনা করেঃ গোলকের জেনাস ০, টরাসের ১ ইত্যাদি।

অসংকুচিত তল

সম্পাদনা

অসংকুচিত তল শ্রেনিবদ্ধ করা কষ্টসাধ্য। সহজ উদাহরণ হল, অসংকুচিত তল বদ্ধ ম্যানিফোল্ডকে ছিদ্র করে পাওয়া যেতে পারে। অপরপক্ষে, সংকুচিত তলের উন্মুক্ত সাবসেট নিজেই অসংকুচিত তল; যেমন ধরা যাক গোলকে ক্যান্টর সেট এর কমপ্লিমেন্ট, যা ক্যান্টর ট্রি তল নামেও পরিচিত। যাই-হোক, প্রত্যেক অসংকুচিত তল সংকুচিত তলের সাবসেট হয়নাঃ দুটি ক্যাননিকাল বিপরীত উদাহরণ হল জ্যাকবের ল্যাডারলচ নেস মনস্টার, যা অসীম জেনাসের অসংকুচিত তল। একটি অসংকুচিত তল E(M) এর অশুন্য প্রান্তের ক্ষেত্র রয়েছে, যা তলের “অসীমের পথে যাওয়া” বর্ণনা করে। ক্ষেত্রটি (E(M)) সবসময়ই ক্যান্টর সেটের বদ্ধ সাবসেটের সাথে টপোলজিকভাবে সমতুল্য থাকে। M এর হয় সীমিত বা গুণনযোগ্য অসীম সংখ্যক হাতলের Nh , সেইসাথে সীমিত বা গুণনযোগ্য অসীম সংখ্যক প্রক্ষিপ্ত সমতলের Np । যদি Nh ও Np সীমিত হয়, তাহলে এই দুটি সংখ্যা প্রান্তের ক্ষেত্রের টপোলজিক্যাল ধরন। যদি উভয়ই যেকোন একটি অসীম হয় তাহলে M এর টপোলজিক্যাল ধরন নির্ভর করবে শুধু দুটি সংখ্যার উপরেই নয়, বরং কীভাবে এরা প্রান্তের ক্ষেত্রের দিকে অগ্রসর হয়। সাধারণভাবে M এর টপোলজিক্যাল ধরন E(M) এর চারটি সাবস্পেস দ্বারা নির্ণীত হয় যারা অসীম হাতল ও অসীম প্রক্ষিপ্ত সমতলের সীমাবিন্দু, শুধু হাতলের সীমাবিন্দু, প্রক্ষিপ্ত গোলকের সীমাবিন্দু অথবা এদের কারোই নয়।

তল যাদের দ্বিতীয় গণনযোগ্য নয়

সম্পাদনা

এখানে একটি টপোলজিক্যাল তল আছে যাদের যাদের গ্ণনযোগ্য ভিক্তি নেই। হয়ত সবচেয়ে সহজ উদাহরণ হল দীর্ঘ লাইনের বাস্তব সংখ্যার ক্ষেত্রের কার্তেশীয় ফল। অন্য একটি তল যার টপোলজির জন্য কোন গণনযোগ্য ভিক্তি নেই, কিন্তু এর এর অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য কোন “এক্সিওম অফ চয়েস” এর প্রয়োজন নেই, যা হল প্রিউফার ম্যানিফোল্ড, আর যা একে কেবল বাস্তব বিশ্লেষনাত্মক তল বলে দেখায়। ১৯২৫ সালে টাইবর র‍্যাডো প্রমাণ করেন যে অসংকুচিত রিম্যান তল দ্বিতীয় গণনাযোগ্য। বিপরীতে, প্রিউফার তলের অস্তিত্ব প্রমাণ করে যে দ্বিমাত্রিক জটিল ম্যানিফোল্ড আচ্ছে যার গূণনযোগ্য ভিক্তি নেই।

প্রমান

সম্পাদনা

বদ্ধ তলের শ্রেণিবিন্যাস ১৮৬০ সাল থেকেই জানা আছে আর এখন এর কিছুসংখ্যক প্রমাণ আছে। টপোলজিক্যাল ও সংযুক্ত করতে সক্ষম এমন প্রমাণ সাধারনভাবে কঠিম ফলের উপর নির্ভর করে যা বলে প্রত্যেক সংকুচিত ২ ম্যানিফোল্ড একটি সিমপ্লিসিয়াল জটিলতার প্রতি হোমোফোরিক হয়। শ্রেনীবিন্যাসের সবচেয়ে সাধারণ প্রমাণ হল তা-ই যা প্রত্যেক ট্রায়াঙ্গুলেট করা তলকে সাধারণ অবস্থা পর্যন্ত আনে। একটি সাধারণ প্রমাণ, যা সাধারণ অবস্থা বাদ দেয়, তা ১৯৯২ সালে জন কনওয়ে কর্তৃক আবিষ্কৃত হয়, যাকে উনি জিরো টলারেন্স প্রমাণ বলেন। একটি জ্যামিতিক প্রমাণ যা আরও শক্তিশালী জ্যামিতিক ফল দেয় সেটা হল ইউনিফর্মাইজেশন তত্ত্ব। এটা কেবল রিম্যান তলের ক্ষেত্রে ১৮৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে ফেলিক্স ক্লেইন, পল কবহ্যানরি পইনক্যায়ার কর্তৃক প্রমাণিত হয়েছিল।

জ্যামিতিতে তল

সম্পাদনা

পলিহেড্রা, যেমন ঘনক এর সীমা, জ্যামিতিতে দেখা প্রথম তল। মসৃণ তল সংজ্ঞায়িত করাটাও সম্ভব, যার প্রত্যেক বিন্দুর E2 এর কিছু উন্মুক্ত সেটের প্রতি নিকট ডিফিওমরফিক হবে। এই বর্ণনার ফলে তলের ক্ষেত্রে ক্যালকুলাস ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। দুটি মসৃণ তল ডিফিওমরফিক হবে যদি এবং কেবল যদি তারা হোমিওমরফিক হয়। এভাবেই বদ্ধ তলকে ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক ও ঘুর্ণনযোগ্যতা দিয়ে ডিফিওমরফিজম পর্যন্ত শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। মসৃণ তল যা রিম্যান মেট্রিক্স দিয়ে সজ্জিত তা ব্যবকলনীয় জ্যামিতি এর মৌলিক প্রয়োজন। একটি রিম্যান মেট্রিক জিওডেসিক, দূরত্ব, কোনক্ষেত্রফল এর ধারণা নিয়ে আসে। এটি গাউসিয়ান বক্রতার কথাও বলে, যা কোন নির্দিষ্ট বিন্দুতে একটি তল কতটুকু বাকা তা নির্দেশ করে। বক্রতা দৃঢ় জ্যামিতিক ধর্ম, তাতে তা তলের সাধারণ ডিফিওমরফিজম দ্বারা সংরক্ষিত থাকেনা। যাই হোক, বদ্ধ তলের জন্যে বিখ্যাত গাউস-বনেট তত্ত্ব বলে যে সম্পূর্ণ তল এর উপর গাউসিয়ান বক্রতা এর যোগজীকরন ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক দ্বারা নির্ণীত হয়।

 

এই ফল তলের জ্যামিতি ও টপোলজির মধ্যকার সম্পর্কের উদাহরণ দেয়। আরেক পথে তল জ্যামিতিতে আসতে পারে; জটিল ডোমেনের মধ্য দিয়ে। একটি জটিল ১-ম্যানিফোল্ড একটি মসৃণ ঘূর্ণনযোগ্য তল, যাকে রিম্যান তলও বলা হয়। যেকোন জটিল ননসিঙ্গুলার বীজগাণিতীক বক্রতা যাকে জটিল ম্যানিফোল্ড হিসেবে দেখানো হয় তা রিম্যান তল। প্রত্যেক বদ্ধ ঘূর্ণনযোগ্য তল একটি জটিল গঠন ধারণ করে। বদ্ধত ঘূর্ণনযোগ্য তলের উপর জটিল গঠন তলে রিম্যান মেট্রিক্সের কনফর্মাল তুল্য শ্রেনীর অনুরূপ হয়। ইউনিফর্মাইজেশন তত্ত্ব এর একটি সংস্করণ বলে যে ঘূর্ণনযোগ্য বদ্ধ তলের উপর যেকোন রিম্যানীয় মেট্রিক ধ্রুব বক্রতার অনন্য মেট্রিকের কনফর্মালভাবে তুল্য থাকে। এর ফলে টেইকমিউলার তত্ত্ব এর দিকে পৌছার একটি উপায়ের একটি শুরুর বিন্দু, যা ইউলার ক্যারেক্টারিস্টিক দ্বারা পাওয়া টপোলজিকাল তলের চেয়ে রিম্যান তলের সুন্দর শ্রেনীবিন্যাস দেয়। একটি ‘’জটিল তল’’ জটিল ২-ম্যানিফোল্ড এবং এভাবেই একটি বাস্তব ৪-ম্যানিফোল্ড; কিন্তু এই নিবন্ধের আলোকে তাকে তল বলা যায়না। একই অবস্থা জটিল সংখ্যার চেয়ে আলাদা ক্ষেত্রের উপরে বিজগাণিতীক বক্রতার দেয়া সংজ্ঞাও না, আবার বাস্তব সংখ্যার চেয়ে আলাদা ক্ষেত্রের উপরে বিজগাণিতীক বক্রতার দেয়া সংজ্ঞাও না।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  • Dyck, Walther (১৮৮৮), "Beiträge zur Analysis situs I", Math. Ann., 32: 459–512, ডিওআই:10.1007/bf01443580 

হোমিওমরফিজম পর্যন্ত শ্রেনিবিন্যাসের সহজ প্রমাণ

সম্পাদনা
  • Seifert, Herbert; Threlfall, William (১৯৮০), A textbook of topology, Pure and Applied Mathematics, 89, Academic Press, আইএসবিএন 0126348502 , English translation of 1934 classic German textbook
  • Ahlfors, Lars V.; Sario, Leo (১৯৬০), Riemann surfaces, Princeton Mathematical Series, 26, Princeton University Press , Chapter I
  • Maunder, C. R. F. (১৯৯৬), Algebraic topology, Dover Publications, আইএসবিএন 0486691314 , Cambridge undergraduate course
  • Massey, William S. (১৯৯১)। A Basic Course in Algebraic Topology। Springer-Verlag। আইএসবিএন 0-387-97430-X 
  • Bredon, Glen E. (১৯৯৩)। Topology and Geometry। Springer-Verlag। আইএসবিএন 0-387-97926-3 
  • Jost, Jürgen (২০০৬), Compact Riemann surfaces: an introduction to contemporary mathematics (3rd সংস্করণ), Springer, আইএসবিএন 3540330658 , for closed oriented Riemannian manifolds

ডিফিওমরফিজম পর্যন্ত শ্রেণিবিন্যাসের কিছু তাত্ত্বিক প্রমাণ

সম্পাদনা

অন্যান্য প্রমান

সম্পাদনা
  • Lawson, Terry (২০০৩), Topology: a geometric approach, Oxford University Press, আইএসবিএন 0-19-851597-9 , similar to Morse theoretic proof using sliding of attached handles
  • Francis, George K.; Weeks, Jeffrey R. (মে ১৯৯৯), "Conway's ZIP Proof" (পিডিএফ), American Mathematical Monthly, 106 (5), ডিওআই:10.2307/2589143, ২০১০-০৬-১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা, page discussing the paper: On Conway's ZIP Proof 
  • Thomassen, Carsten (১৯৯২), "The Jordan-Schönflies theorem and the classification of surfaces", Amer. Math. Monthly, 99: 116–13, ডিওআই:10.2307/2324180 , short elementary proof using spanning graphs
  • Prasolov, V.V. (২০০৬), Elements of combinatorial and differential topology, Graduate Studies in Mathematics, 74, American Mathematical Society, আইএসবিএন 0821838091 , contains short account of Thomassen's proof