উড়োজাহাজ বাতাসের চেয়ে ভারী অথচ উড্ডয়নক্ষম এক ধরনের আকাশযান। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এবং যুদ্ধে এটি ব্যবহৃত হয়। উড়োজাহাজ নামটি এসেছে উড় বা ওড়া এবং জাহাজ বা পোত শব্দদুটি একত্রিত করে। উড়োজাহাজকে আমেরিকা, কানাডাসহ অনেক স্থানে এয়ারপ্লেন ("airplane") বলে। আবার ব্রিটেনসহ কিছু এলাকায় অ্যারোপ্লেন নামে ডাকা হয়। ইংরেজিতে এই নামদুটি এসেছে গ্রিক αέρας (aéras-) ("air" বা "বাতাস") এবং গণিতের plane (তল) শব্দদুটি থেকে।[]

উড়োজাহাজ
যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ
আকাশযানের প্রকারভেদ
সংক্রান্ত নিবন্ধসমূহের অংশ
বাতাসের চেয়ে হালকা গ্যাসের সাহায্যে উড্ডয়নক্ষম (aerostats)
Unpowered Powered
বেলুন এয়ারশিপ
বাতাসের চেয়ে হালকা গ্যাস এবং অ্যারোডাইনামিক উর্দ্ধগতির সাহায্যে উড্ডয়নক্ষম
Unpowered Powered
হাইব্রীড এয়ারশীপ
অ্যারোডাইনামিক উর্দ্ধগতির সাহায্যে উড্ডয়নক্ষম (aerodynes)
Unpowered Powered
Unpowered fixed-wing Powered fixed-wing
গ্লাইডার
ঝুলন্ত গ্লাইডার
প্যারাগ্লাইডার
ঘুড়ি
• Powered airplane (aeroplane)
যন্ত্রচালিত ঝুলন্ত গ্লাইডারসমূহ
যন্ত্রচালিত প্যারাগ্লাইডার
Flettner airplane
Ground-effect vehicle
Powered hybrid fixed/rotary wing
টিল্টউইং
টিল্টরোটর
মনো টিল্টরোটর
মনো টিল্টরোটর রোটারী রিং
Coleopter
Unpowered rotary-wing Powered rotary-wing
Rotor kite অটোজাইরো
জাইরোডাইন ("হেলিপ্লেন")
হেলিকপ্টার
Powered aircraft driven by flapping
Ornithopter
Other Means of Lift
Unpowered Powered
হোভারক্রাফট
ফ্লাইং বেডস্টীড
Avrocar

আকাশে উড্ডয়ন সূত্র

সম্পাদনা

এর উর্দ্ধগতি এর ডানার সম্মুখগতির কারণে। এই ধরনের আকাশযানের উর্দ্ধগতি ঘূর্ণায়মান ডানা সংবলিত আকাশযানের মত ডানায় বা উপরে অবস্থিত পাখার ঘূর্ণনের কারণে সৃষ্ট হয় না যেমনটি হেলিকপ্টারে হয়। যদিও রকেট বা মিসাইল আকাশে উড়ে তথাপি তাদের উড়োজাহাজ বলা হয়না কারণ এগুলো ডানার সম্মুখগতি ব্যবহার না করে রকেট থার্স্ট এর সাহায্যে উর্দ্ধগতি অর্জন করে। অনেক উড়োজাহাজ প্রপেলার বা জেট ইঞ্জিন দ্বারা সৃষ্ট ঘাতের প্রভাবে সম্মুখে চালিত হয়।

আবিস্কার

সম্পাদনা
 
একটি বিমানের প্রথম উড্ডয়ন, রাইট ফ্লায়ার, ১৭ ডিসেম্বর, ১৯০৩

১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম নিয়ন্ত্রিত, শক্তিসম্পন্ন এবং বাতাসের চেয়ে ভারী সুস্থিত মানুষ-বহনযোগ্য উড়োজাহাজ তৈরি করা হয়। রাইট ব্রাদার্স উইলবার রাইট এবং অরভিল রাইট প্রথম উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেন। [] তাঁরা বারবার উড়োজাহাজ তৈরি করার চেষ্টা করেন এবং বারবারই ব্যর্থ হন, কিন্তু চেষ্টা থামান নি। ১৮৯৯ সালের জুলাই মাসে উইলবার রাইট পাঁচ ফুট উচ্চতার একটি বাক্স ঘুরিতে বেধেঁ ওড়ার চেষ্টা করে। ঠিক তারপরের বছরই তাঁরা গ্লাইডার তৈরি করতে সক্ষম হন। আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনার কিটিহকে নিয়ে আসেন এটিকে ওড়ানোর জন্য। গ্লাইডারটি আকাশে ভেসে ছিল মাত্র ১২ সেকেন্ড। এরপর ১৯০১ ও ১৯০২ সালে পরপর দুটি পরীক্ষা করেন। এবার তাঁরা তাদের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি ব্যবহার করে কিছুটা সাফল্য লাভ করেন। এটিকে তাঁরা প্রায় এক হাজার বার ওড়ান। এর নাম দেন 'Flyer-1'। ১৯০৩ সালের ২৩ মার্চ রাইট ব্রাদার্স তাঁদের উড্ডয়নকৃত গ্লাইডার এর পেটেন্টের জন্য আবেদন করেন। এরপর তাদের কঠোর অধ্যবসায়ের পর ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে 'Flyer-111' তৈরি করেন এবং এটিকে তাঁরা ১০৫ বার উড্ডয়ন করেন।

তাঁরা ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিমানকে আরও নিরাপদ উড্ডয়নের জন্য ব্যাপক গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। ফ্রান্সের একটি কোম্পানি এবং আমেরিকার সেনা সদস্যের সাথে তাঁদের একটি সহযোগিতা চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক বড় ভাই উইলবার রাইট ফ্রান্সে এবং ছোট ভাই অরভিল রাইট ওয়াশিংটন ডিসিতে কাজ করেন। উইলবার রাইট ১৯০৮ সালের ৮ই আগস্ট বিমান নিয়ে সফলভাবে আকাশে ওড়েন। ওই বছরই ১৪মে ডেটনের ফারসান নামের একজন সহকারী প্রথম যাত্রী হিসেবে উইলবারের সাথে ফিক্সড উইং এয়ারক্রাফেট ভ্রমণ করেন। ৮ অক্টোবর এডিথ বার্ঘ নামক এক মহিলা প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে উইলবারের সাথে আকাশে ওড়েন।[]

বেশিরভাগ উড়োজাহাজই উড়োজাহাজে অবস্থানকারী চালক বা পাইলট উড়িয়ে নিয়ে যান, তবে কিছু উড়োজাহাজ দূর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সাহায্যে বা রোবট দিয়ে ওড়ানো হয়।

গ্যালারি

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Aeroplane", "অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারী", দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৯৮৯.
  2. "দুই ভাইয়ের উড়োজাহাজ আবিষ্কারের অবিশ্বাস্য কাহিনি"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-০৩ 
  3. "উড়োজাহাজ আবিষ্কারের ইতিহাস || উইলবার রাইট এবং অরভিল রাইটের স্বপ্ন পূরণ || বিজ্ঞানবিরতি"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-০৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা