তরুণ রাম ফুকন

ভারতীয় রাজনীতিবিদ

তরুণ রাম ফুকন (অসমীয়া: তৰুণ ৰাম ফুকন) ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ছিলেন। তিনি সুদক্ষ বক্তা ও শিকারী ছিলেন।

তরুণ রাম ফুকন
১৯৭৭ সালের ভারতের স্ট্যাম্পে তরুন রাম ফুকন
জন্ম১৮৭৭ সন
মৃত্যু১৯৩৯ সন
পেশাভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী

জন্ম ও শিক্ষা সম্পাদনা

১৮৭৭ সালের ২২ জানুয়ারী তারিখে গুয়াহাটির ভরলুমুখ নামক স্থানে তরুণ রাম ফুকন জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বলরাম ফুকন একজন সম্মানীয় ব্যক্তি ছিলেন। তিনি গৃহগুরুর নিকট হইতে সংস্কৃত শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৮৯২ সালে গুয়াহাটির কলেজিয়েট বিদ্যালয় হইতে প্রেবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ হইতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে আইন অধ্যয়নের জন্য তিনি লন্ডনে গমন করেন।তিনি আসামের তৃতীয় বিচারক ছিলেন[১]

কর্মজীবন সম্পাদনা

লন্ডন থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি কিছুকাল কলকাতায় উকালতি করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি গুয়াহাটিতে উকালতি করেন। গুয়াহাটির আর্ল আইন মহাবিদ্যালয়ে তিনি কিছুকাল শিক্ষকতা করেন। ডিব্রুগড় নিবাসী পরশুরাম খাইণ্ডের কন্যা বিদ্যুৎপ্রভা সাথে তার বিয়ে হয়। ১৯১৪ সালে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আনন্দোলনে যোগদান করেন। ১৯১৭ সালে মন্টেগু সংস্কার সমিতির নিকট উপস্থিত দলের তিনিও একজন সদস্য ছিলেন। তিনি আসামে স্বায়ত্ব শাসনের দাবী করেছিলেন। মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আনন্দোলনে তিনি যথেষ্ট সমর্থ করেছিলেন। ১৯২২ সালে মহাত্মা গান্ধী আসামে আগমন করিলে তার গৃহে অতিথি হয়েছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯২২ সালে প্রথমবার কারাবন্দী করা হয়। ১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসমতিলাল নেহেরুর নেতৃত্বে গঠিত স্বরাজ দলে যোগদান করেন। ১৯২৭ সালে অসম সাহিত্য সভার গোয়ালপাড়া অধিবেশনে তিনি সভাপতিত্ব করেছিলেন[২]। পরবর্তী সময়ে তিনি অসম সাহিত্য সভার সম্পাদক পদে অধিস্থিত হয়ে সভার কার্যপ্রপন্থা নরমপন্থা থেকে চরমপন্থাতে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩২ সালে মদন মোহন মাল্যবরের নেতৃত্বে গঠিত রাষ্ট্রবাদী কংগ্রেস দলে তিনি ও রোহিণী কুমার চৌধুরী যোগদান করেন। ভারত সরকার আইন ১৯৩৫ নিয়মের অধীনস্থ, ১৯৩৬ সালের সাধারন নির্বাচনে তিনি ইউনাইটেড পিপুলস্‌ পার্টি গঠন করেন। আসামের কিছুসংখ্যক নেতা তাকে সমর্থন করেছিলেন। ১৯৩৮ সালে সাসুল্লা সরকারে পদত্যাগের সময় গোপীনাথ বরদলৈয়ের নেতৃত্বে গঠিত সন্মিলিত সরকার গঠনে তরুণ রাম ফুকন কূটনৈতিক ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।

অন্যান্য অবদান সম্পাদনা

তরুণ রাম ফুকনকে আসামের জনগণ দেশবন্ধু হিসেবে সম্মান প্রদর্শন করেন। যুবকদের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদানের অনুপ্রেরণার জন্য তিনি যথেষ্ট অবদান রেখেছিলেন। যুবকদের নেতারূপে গঠনে তিনি যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। আপন মাতৃভাষা অসমীয়ার সহিত তিনি বাংলা,ওড়িয়া, হিন্দী,ফার্সি, সংস্কৃতউর্দু প্রভৃতি ভাষায় লেখা-পড়ায় সক্ষম ছিলেন। জীবনের শেষকালে কয়েক বৎসর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সহিত তার বিবাদ হয়েছিল যদিও দেশের প্রতি তার ভক্তি অপরিসীম ছিল।

মৃত্যু সম্পাদনা

১৯৩৯ সালের ২৮ জুলাই তারিখে এই মহানব্যক্তি আমাদের থেকে চিরবিদায় নিয়ে পরলোক গমন করেন[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. অসম সাহিত্য সভাৰ সভাপতি সকল,লিখক-সমীন কলিতা,পৃষ্ঠা নং-৪২
  2. ১৯১৭ চনৰ পৰা অসম সাহিত্য সভাৰ সভাপতিসকলৰ তালিকা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে অসম সাহিত্য সভাৰ ৱেবছাইট, আহৰণ: ১৮ নৱেম্বৰ, ২০১২।
  3. অসম সাহিত্য সভাৰ সভাপতি সকল,সমীন কলিতা
  • Acharya, (Dr.)N.N., Glories of Assam, Bina Library, Guwahati