তখত শ্রী হাজুর সাহিব

হাজুর সাহিব[ক] (Hazūrī Sāhib; আক্ষ.'সাহিব/প্রভূ -এর উপস্থিতি'), তখত সাচখান্ড শ্রী হাজুর আবচালনাগার সাহিব নামেও পরিচিত, হলো শিখধর্মের পাঁচটি তখতের একটি। গুরুদ্বারটি ১৮৩২ হতে ১৮৩৭ সালের মধ্যে মহারাজা রণজিৎ সিং কর্তৃক নির্মিত হয়।[১] এটি ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের নান্দেড় শহরে গোদাবরী নদীর তীরে অবস্থিত।

তখত শ্রী হাজুর সাহিব
হাজুর সাহিব
মানচিত্র
সাধারণ তথ্য
স্থাপত্য রীতিশিখ স্থাপত্যকলা
শহরনান্দেড়, মহারাষ্ট্র
দেশ ভারত
স্থানাঙ্ক১৯°০৯′১০″ উত্তর ৭৭°১৯′০৭″ পূর্ব / ১৯.১৫২৭৮° উত্তর ৭৭.৩১৮৬১° পূর্ব / 19.15278; 77.31861
নির্মাণকাজের আরম্ভ১৮৩২

পুরো অবকাঠামোটি গড়ে উঠেছে গুরু গোবিন্দ সিংয়ের মৃত্যুবরণ করার স্থানে। চত্বরের মধ্যে অবস্থিত গুরুদ্বারটি সাচ-খান্ড (সত্যের আধার) নামে পরিচিত। গুরুদ্বারের অভ্যন্তরস্থঃ কক্ষটিকে অঙ্গিতা সাহিব নামে ডাকা হয় এবং যেখানে ১৭০৮ সালে গুরু গোবিন্দ সিং আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর দাহ করা হয়েছিলো সেখানেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

 
হাজুর সাহিব নান্দাদে আরতি উপাসনা।

১৭০৮ সালে গুরু গোবিন্দ সিং যেখানে তার ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন সেই স্থানটিকে হাজুর সাহিব হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। গুরু এখানে তার সভাসদদের নিয়ে আলোচনা করতেন এবং দুই জন আততায়ী দ্বারা হত্যার জন্য আঘাত প্রাপ্ত হওয়ার পর চিকিৎসার্থে অবস্থান করেছিলেন। একজন আক্রমণকারী গুরুকে ছুরিকাঘাত করে এবং তার তলোয়ারের (বৃত্তাকার তলোয়ার) এক আঘাতেই নিহত হয়। অপর আক্রমণকারী পালানোর চেষ্টা করায় তার অনুসারীদের হাতে নিহত হয়। গুরুর আঘাত গভীর ছিলো, কিন্তু আপাত সুস্থ হন ১ম বাহাদুর শাহ কর্তৃক প্রেরিত একজন ইংরেজ শৈল্যবিদের চিকিৎসার কারণে, যিনি তার ডাক্তার হিসাবে কর্মরত ছিলেন এবং তারও আগে দারা শিকোর চিকিৎসক ছিলেন।[৩] যাই হোক, একজন শিখকে ঝুঁকে শ্রদ্ধা গ্রহণের সময় তার সেলাই পুনরায় খুলে যায় এবং গুরু প্রিমাল (জ্যোতি জোট)-এ অন্তর্হিত হন গুরু গ্রন্থ সাহিবকে তার উত্তরাধিকারী হিসাবে ঘোষণা করার পর।[৩]

শিখের গুরু গোবিন্দ সিং যেখানে বসে তার সভা পরিচালনা করতেন সেখানে একটি উঁচু বেদী স্থাপন করেছে এবং তাতে গুরু গ্রন্থ সাহিবকে রেখেছে। তারা এটিকে তখত সাহিব বলে সম্বোধন করে। গুরু গোবিন্দ সিং যখন গুরু গ্রন্থ সাহিবকে তারা উত্তরাধিকারী গুরু হিসাবে নির্বাচন নিশ্চিত করেন তখন তিনি নান্দাদকে নিজেই "আবচালনাগার" (আক্ষরিক অর্থ "দ্রুত স্থির নগর") বলেন, যখন উৎসবে পূর্বানুমান ছাড়াই একটি স্তোত্র পাঠ করেন।

২০০৮ সালের অক্টোবরে গুরু গ্রন্থ সাহেব জির গুরু নির্বাচনের ৩০০তম বার্ষিকী এখানে উদযাপন করা হয়। এই স্থানটি এখন পাঁচটি তখতের মধ্যে একটি যা শিখদের কাছে প্রাথমিক গুরুত্বের স্থান। অন্য চারটি তখত হল: অমৃতসরের শ্রী অকাল তখত সাহিব, আনন্দপুর সাহিবের তখত শ্রী কেশগড় সাহিব, বিহারের তখত শ্রী পাটনা সাহিব এবং তখত শ্রী দমদমা সাহিব, তালওয়ান্ডি সাবো, বাথিন্ডা, পাঞ্জাব

হাজুর সাহিবে কীর্তন মর্যাদার রাগীগণ সম্পাদনা

ভাই জাগাৎ সিং (১৯১৭-১৯৭৮) ছিলেম একজন বিশিষ্ট রাগী, যিনি তখতে ১৯৩৪ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল (মৃত্যু পর্যন্ত) পর্যন্ত সেবা দান করেছেন।

চিত্রশালা সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

টীকা সম্পাদনা

  1. হাজোর সাহিব নামেও উচ্চারিত হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Singh, S. Harpal (২৯ ডিসেম্বর ২০১৯)। "Guru Nanak's centuries-old link with Nizam's Nirmal"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। 
  2. "ऐतिहासिक दसरा पर्वाची गुरुद्वारात जय्यत तयारी" [Aitihāsika Dasarā Parvācī Gurudvārāta Jayyata Tayārī]। Sakal (Marathi ভাষায়)। Nanded। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৫ 
  3. Niccolao, Manucci (১৯০৭)। Storia Do Mogor or Mogul India। Calcutta।  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "GS" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে

অতিরিক্ত পঠন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা