ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ

ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ বা ঢাকা ওয়াসা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি সরকারি সংস্থা, যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত।[] তাকসিম আহমেদ খান ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।[]

ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ
ঢাকা ওয়াসার সিল
সংস্থার রূপরেখা
গঠিত১৯৬৩; ৬১ বছর আগে (1963)
যার এখতিয়ারভুক্তবাংলাদেশ সরকার
সদর দপ্তরওয়াসা ভবন, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা
সংস্থা নির্বাহী
মূল বিভাগস্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
ওয়েবসাইটdwasa.org.bd

ইতিহাস

সম্পাদনা

সেবামূলক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৬৩ সালে ঢাকা শহরের পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য একটি আলাদা সংস্থা হিসেবে ঢাকা ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯০ সালের ১ জুলাই থেকে নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকায় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের দায়িত্বও ঢাকা ওয়াসার নিকট ন্যাস্ত করা হয়। ১৯৯৬ সালে এটি ওয়াসা আইন পাস হওয়ার সাথে সাথে একটি স্বায়ত্তশাসিত লাভজনক সংস্থা হিসাবে গঠিত হয়।[] ২০১৯ সালের ১ মার্চ সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আনুমানিক বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ঢাকা ওয়াসাকে উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকার পাশাপাশি দুটি পৃথক সংস্থায় বিভক্ত করার সুপারিশ করেছিল।[]

সেবা এলাকা

সম্পাদনা

ঢাকা ওয়াসার পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং গ্রাহক সেবার সুবিধার্থে ঢাকা ওয়াসার সমগ্র সেবা এলাকা ১১টি ভৌগোলিক অঞ্চলে বিভক্ত। এর মধ্যে ১০টি অঞ্চল ঢাকা মহানগরীতে এবং ১টি অঞ্চল নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। প্রতিটি জোনাল অফিসের মাধ্যমে কারিগরী পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং রাজস্ব বিলিং আদায় সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যাবলী পরিচালিত হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের তথ্য অনুযায়ী ঢাকায় পানির দৈনিক চাহিদা কমবেশি ২৫০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসা দৈনিক ২৬০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করে। ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, সিস্টেম লস ২০ শতাংশ বাদ দিলে প্রতিদিন ৫২ কোটি লিটার পানি গ্রাহক পর্যন্ত যায় না। গ্রাহক পান ২০৮ কোটি লিটার। ফলে পানির ঘাটতি থাকে।[] ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী ঢাকা শহরে দৈনিক পানির চাহিদা ২৬০ থেকে ২৬৫ কোটি লিটার এবং দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ২৭০ থেকে ২৭৫ কোটি লিটার।[]

আয়-ব্যয়

সম্পাদনা

২০২০-২১ অর্থবছরে পানি ও সুয়ারেজ বিল বাবদ ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব আদায় ১ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে পানির বিল বাবদ আয় ১ হাজার ২০১ কোটি টাকা। বাকিটা সুয়ারেজ বিল বাবদ আয়। ট্যাক্সসহ সব খরচ বাদে ২০২০-২১ অর্থবছরে ঢাকা ওয়াসার লাভ ৪৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। বছর শেষে ঢাকা ওয়াসার সঞ্চিত মুনাফার পরিমাণ ৮৯২ কোটি টাকা।[]

সমালোচনা

সম্পাদনা

২০১৯ এর প্রতিবেদনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ জানায় যে ওয়াসা "মাত্রাহীন দুর্নীতিগ্রস্থ" ছিল এবং "দুর্বল পরিষেবা" প্রদান করেছিল।[] ওয়াসার দশটি অঞ্চলের চারটিতে যে পানি সরবরাহ করছিল তাতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়।[] বাংলাদেশ হাইকোর্টে জমা দেওয়া ওয়াসার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার ওয়াসা ঢাকার ৫৭টি অঞ্চলে দূষিত পানি সরবরাহ করছিল।[১০]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Unclean Water: N'ganj Wasa officials get an earful from locals"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৯ 
  2. "DHAKA WASA"dwasa.org.bd। ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৯ 
  3. "About Dhaka Wasa"dwasa.org.bd। ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৯ 
  4. "JS body recommends to split Dhaka Wasa into two"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৯ 
  5. ওয়াসার অদক্ষতায় পানির দাম বাড়ে, প্রথম আলো, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  6. ঢাকা ওয়াসার পানি উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার চেয়ে বেশি: সংসদে মন্ত্রী, বিডিনিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ৫ মার্চ ২০২৪
  7. ওয়াসার অদক্ষতায় পানির দাম বাড়ে, প্রথম আলো, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  8. "TIB survey on Dhaka Wasa: Rampant graft, poor service"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৯ 
  9. "Harmful bacteria in Wasa water"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৯ 
  10. "Dhaka Wasa says water supplied to 57 areas polluted"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৯