ডাম্বুলা
ডাম্বুলা (সিংহলি: දඹුල්ල Dam̆bulla, তামিল: தம்புள்ளை Tampuḷḷai, টাম্পুল্লাই) হচ্ছে শ্রীলঙ্কা শ্রীলঙ্কা মধ্য প্রদেশের মাতালে জেলার উত্তরে অবস্থিত একটি শহর। শহরটি কলম্বোর ১৪৮ কিমি (৯২ মা) উত্তর-পূর্বে, মাতালের ৪৩ কিমি (২৭ মা) উত্তরে, ক্যান্ডির ৭২ কিমি (৪৫ মা) উত্তরে অবস্থিত। শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত হওয়ায় এটি দেশের প্রধান শাকসবজি বিতরণ কেন্দ্র।
Dambulla දඹුල්ල தம்புள்ளை | |
---|---|
নগর | |
স্থানাঙ্ক: ৭°৫১′২৮″ উত্তর ৮০°৩৯′০৯″ পূর্ব / ৭.৮৫৭৭৮° উত্তর ৮০.৬৫২৫০° পূর্ব | |
দেশ | শ্রীলঙ্কা |
প্রদেশ | মধ্য প্রদেশ |
জেলা | মাতালে |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
আয়তন | |
• নগর | ৪৪৪ বর্গকিমি (১৭১.৪৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১২) | |
• নগর | ৭২,৩০৬ ডাম্বুলা বিভাগ |
• জনঘনত্ব | ১৬২.৮/বর্গকিমি (৬২.৮৬/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ২৩,৮১৪ (Municipality) |
সময় অঞ্চল | শ্রীলঙ্কা প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
এই অঞ্চলের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কার বৃহত্তম এবং সর্বোত্তম সংরক্ষিত ডাম্বুলা গুহা মন্দির কমপ্লেক্স, সিগিরিয়া পাথরের দুর্গ, মাত্র ১৬৭ দিনে নির্মিত হওয়ার বিখ্যাত ক্রিকেট মাঠ রণগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। এই অঞ্চলে আরো রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম গোলাপি কোয়ার্টজ পর্বতশ্রেণী, এবং আয়রন উড ফরেস্ট, এবং নাগেশ্বর বন (না উয়ানা আরণ্য)।
ডাম্বুলা গুহা মন্দির কমপ্লেক্সের নিকটে অবস্থিত ইবঙ্কাতুয়া প্রাগৈতিহাসিক মেগালিথিক সমাধিস্থলটি ডাম্বুলায় পাওয়া উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোর মধ্যে সর্ব প্রাচীন।বগুহা মন্দির থেকে ৩ কিমি (১.৯ মা) দূরে অবস্থিত এই স্থানটি প্রমাণ করে যে এই দ্বীপে ভারতীয়দের আগমনের পূর্বেই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসতি ছিল।
ইতিহাস
সম্পাদনাখ্রিস্টপূর্ব সপ্তম থেকে তৃতীয় শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে এই অঞ্চলটিতে মানব বসতি ছিল বলে মনে করা হয়। এই অঞ্চলের প্রাচীন গুহা গুলোতে পাওয়া মূর্তি, ভাস্কর্য এবং চিত্রগুলো খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর পূর্ববর্তী। তবে এসব মূর্তি ও চিত্রকর্ম গুলো খ্রিস্টীয় একাদশ, দ্বাদশ, এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে মেরামত ও নতুনকরে রং করা হয়েছিল।
অনুরাধাপুরাের রাজা ভালগাম্বা (যাকে ভট্টগামিনী অভয় নামেও অভিহিত করা হয়েছিল) অনুরাধাপুর রাজ্য থেকে তার ১৪ বছরের দীর্ঘ নির্বাসনের সময় এই অঞ্চলের গুহাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ সেই সময় ডাম্বুলার গুহায় ধ্যানরত ছিলেন এবং নির্বাসিত রাজাকে তার শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে রাজা ভালগাম্বা নির্বাসন শেষে অনুরাধাপুর রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করার পর ডাম্বুলায় ভিক্ষুকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তিনি ডাম্বুলায় একটি দর্শনীয় শিলা মন্দির নির্মাণ করেন।
ডাম্বুলার নিকটবর্তী ইব্বাঙ্কাতুয়া প্রাগৈতিহাসিক সমাধিস্থলে শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধধর্মের আগমনের বহু আগে এই অঞ্চলে সভ্যতার প্রমাণস্বরূপ প্রাগৈতিহাসিক মানুষের কঙ্কাল (২৭০০ বছরে পুরনো) পাওয়া গিয়েছিল। প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান অনুসারে ২৭০০ বছরেরও বেশি সময় (খ্রিস্টপূর্ব ৭৫০) ধরে এই অঞ্চলে প্রাচীন কৃষিজীবী মানুষদের বসবাসের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এটি আগে ধাম্বল্লাই নামে পরিচিত ছিল এবং দশম দশকের শেষদিকে এবং একাদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রাজা রাজাচোল এবং রাজেন্দ্র চোলের মতো রাজারা শাসন করেছিলেন।
ডাম্বুলা গুহা মন্দির
সম্পাদনাএটি শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ও সুষমভাবে সংরক্ষিত একটি বৌদ্ধ মন্দির কমপ্লেক্স। ১৬০ মি (৫২০ ফু) উঁচু পাথরের টাওয়ারটি একটি পাথরের সমতল ভূমিতে অবস্থিত। এই মন্দির কমপ্লেক্সে মোট ৮০ টি তালিকাভুক্ত গুহা বিদ্যমান। কিন্তু সবচেয়ে আকর্ষনীয় জিনিস সংরক্ষিত আছে পাচটি গুহাতে, যাতে কিছু প্রতিমা ও মূর্তি এবং কিছু চিত্র বিদ্যমান। এই মন্দির কমপ্লেক্সে মোট ১৫৩ টি বুদ্ধ মূর্তি, ৩ টি শ্রীলঙ্কার রাজার মূর্তি এবং ৪টি দেব–দেবীর মূর্তি আছে। শেষের চারটি হল হিন্দু প্রতিমা, বিষ্ণু ও গণেশ। এসব ম্যুরাল কমপ্লেক্সের মোট ২,১০০ মি২ (বর্গ মিটার) স্থান দখল করে আছে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "A6 : According to Divisional Secretary's Division, 2012"। ২০ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২০।