টোটো ভাষা
টোটো ভাষা হল ভারত-ভুটান সীমান্ত এলাকার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আলিপুরদুয়ার জেলার শুভপাড়া, ধুনচিপাড়া ও পঞ্চায়েত পাড়ায় বসবাসকারী টোটো উপজাতির কথ্য ভাষা। সামার ইনস্টিটিউট অফ লিঙ্গুয়েস্টের অস্ট্রেলীয় ভাষাবিদ টোবি অ্যান্ডারসনের মতে ভাষাটি সিনো-তিব্বতী তথা চীনা-তিব্বতি ভাষাসমূহ বা ইন্দো-বর্মান ভাষা পরিবারের একটি অংশ।
টোটো ভাষা | |
---|---|
𞊒𞊪𞊒𞊪, টোটো | |
অঞ্চল | পশ্চিমবঙ্গ |
জাতি | টোটো জনজাতি |
মাতৃভাষী | ১,৪১১ (২০১৪)[১]
|
বাংলা লিপি এবং টোটো লিপি | |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | txo |
গ্লোটোলগ | toto1302 [২] |
পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, সারা ভারতে বিপন্নপ্রায় ভাষাগুলির মধ্যে ছিল টোটো ভাষা। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো ভাষাটিকে বিলুপ্তপ্রায়ের তকমা দেয়। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে আনুমানিক ১,৪১১ জন পশ্চিমবঙ্গে টোটো ভাষায় কথা বলেন৷ বেশিরভাগ টোটো পরিবারের বাড়িতে এই ভাষা ব্যবহার করলেও ছাত্র ছাত্রীদের বিদ্যালয়ের পড়াশোনা বাংলা ভাষাতেই চলে।
টোটো উপজাতিদের অন্যতম ধনীরাম টোটো বাল্যকালে পড়াশোনা শুরু করতে গিয়ে দেখেন তার মাতৃভাষায় লেখাপড়ার কোন সুযোগ নেই, কোন হরফ বা বর্ণমালাই নেই।
লিখন পদ্ধতি
সম্পাদনাটোটো লিপি 𞊒𞊪𞊒𞊪 | |
---|---|
লিপির ধরন | |
সৃষ্টিকারী | ধনীরাম টোটো |
প্রকাশিত হয়েছে | ২২ মে ২০১৫
|
অঞ্চল | পশ্চিমবঙ্গ |
ভাষাসমূহ | টোটো |
আইএসও ১৫৯২৪ | |
আইএসও ১৫৯২৪ | Toto, , টোটো |
ইউনিকোড | |
U+1E290–U+1E2BF |
২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ধনীরাম টোটো টোটো ভাষার স্ক্রিপ্ট ও হরফ তৈরির প্রয়াসে লিপ্ত হন। কিন্তু প্রশিক্ষিত ভাষাবিদ না হওয়ায়, ধ্বনির সঙ্গে শব্দ মেলাতে এবং সেই অনুযায়ী লিপি তৈরিতে প্রথম দিকে সমস্যার সম্মুখীন হন। অস্ট্রেলিয়ান ভাষাবিদ টোবি অ্যান্ডারসনের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় পরবর্তী দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চেষ্টা করেছেন। শেষে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে মে তার হাত ধরেই প্রকাশ পায় টোটো ভাষার সম্পূর্ণ বর্ণমালা। ২২টি ব্যঞ্জনবর্ণ, ৯টি স্বরবর্ণ এবং ৬টি ডিফথং সহ মোট ৩৭টি লিপি নিয়ে তৈরি হয় টোটো ভাষার বর্ণমালা। তাছাড়া টোটো ভাষার শব্দ, শব্দের অর্থ এবং ধ্বনির বিবর্তন নিয়ে একটি শব্দভাণ্ডারের সম্পাদনা করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্থাৎ, আইএসও কোড-ও পেয়েছে টোটো লিপি।( ISO 15924 Code/Key Toto/294)[৩]
টোটো বর্ণমালাটির ১৪.১ সংস্করণ ২০২১ খ্রিস্টাব্দে তথ্য প্রযুক্তির ইউনিকোড স্ট্যান্ডার্ডে যুক্ত হয়।
টোটোর ইউনিকোড ব্লকটি হল U+1E290–U+1E2BF
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Languages of India" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০২-০৮। |
- ↑ হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Toto"। গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
- ↑ "The architect of Toto alphabet fights to save mother tongue from extinction" (ইংরাজী ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-১৮।