শৌচাগার

এক প্রকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা যা মানুষের মলমূত্র ত্যাগ এবং সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
(টয়লেট থেকে পুনর্নির্দেশিত)

শৌচাগার হলো পোর্সেলিন অথবা অন্যকোনো ধাতব বস্তু দ্বারা তৈরি এক প্রকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা যা মানুষের মলমূত্র ত্যাগ এবং সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। উন্নত দেশগুলোতে বিভিন্ন জাতের পোর্সেলিনের ফ্লাস শৌচাগার বেশি দেখা যায়। পশ্চিমা দেশগুলোতে এক্ষেত্রে আসন ব্যবহৃত হয় যেখানে পূর্ব এশিয়ায় স্কুয়াট শৌচাগারই বহুল প্রচলিত। উন্নত শহরগুলোতে এগুলো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার নালার সাথে যুক্ত থাকে কিন্তু কম উন্নত যেমন গ্রামাঞ্চলগুলোর দিকে এগুলো মলমূত্র সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত সেপটিক ট্যাঙ্কের সাথে যুক্ত থাকে। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলগুলোতে পিট পায়খানা এবং কম্পোস্টিং জাতের শৌচাগারগুলো ব্যবহৃত হয়।

একটি পশ্চিমা পেপার ব্যাক কভার ডিসপেন্সারসহ ফ্লাশ শৌচাগার, ময়লা ফেলার ঝুরি এবং জার্মান-অস্ট্রীয় সীমান্তের কাছে একটি শৌচাগার ব্রাশ।
বিভিন্ন আকার এবং আকৃতির শৌচাগারসমূহ যেমন ফ্লাশ শৌচাগার,স্কুয়াট শৌচাগার এবং পিট লেট্রিনের ছবি।

অনেক দেশে ব্যক্তিগত বাড়িতে শৌচাগারগুলো 'ফ্লাস শৌচাগার' জাতের হয় এবং শৌচাগার এবং গোছলের জন্য শাউয়ার একই ঘরে থাকে যাতে নির্মাণ খরচ কম হয় এবং এই ঘরকে সবাই বাথরুম বলে ডাকে। গণশৌচাগারগুলো এমন সব এলাকায় তৈরি করা হয় যেখানে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়। তাছাড়া অনেক জায়গায় কোনো নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান বা ক্রীড়াঅনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বহনযোগ্য শৌচাগার তৈরি করা হয়। অনেক সময় ট্রেন এবং প্লেনের ক্ষেত্রে রাসায়নিক শৌচাগারের ব্যবহারও লক্ষ্য করা যায়।

তীব্র পানিবাহিত রোগ যেমন ডায়রিয়া এবং কলেরার ক্ষেত্রে খারাপ পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থা পানিদূষন ঘটায়।তাই ইতিহাসের শুরুর দিক থেকেই শৌচাগার একটা ভাবনার বিষয় ছিলো। এক্ষেত্রে ইন্দু উপত্যকার জনগণ শৌচাগার বিশেষ করে ব্যক্তিগত ফ্লাশ শৌচাগারের উন্নয়নের জন্য সমাধিক পরিচিত। এরপর ১৮৫৬ সালে আধুনিক ফ্লাশ শৌচাগার পদ্ধতি আবিষ্কার কারেন জন হেরিংটন। তবে তা তখনও ব্যবহার করা শুরু হয় নি। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে সমগ্র লন্ডনে তখনও ব্যক্তিগত ফ্লাশ শৌচাগার ছিলো না।

দুর্গন্ধ দূর করণের উপর ভিত্তি করে প্রকারভেদ সম্পাদনা

ফ্লাশ শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

 
ফ্লাশ শৌচাগারের কমোড

একটি সাধারণ 'ফ্লাশ শৌচাগার' হলো একটি সিরামিকের তৈরি বাটির মতো যা নিচের দিকে থাকা মলমূত্র সংরক্ষণের সেপটিক ট্যাঙ্ক এর সাথে যুক্ত থাকে। সেই সেপটিক ট্যাঙ্ক আবার নালার সাথে যুক্ত পাইপের সাথে যুক্ত থাকে।যখনই শৌচাগারে পানি ফ্লাশ করা হয়,তখনই মলমূত্র পানির সাথে সেপটিক ট্যাঙ্কে যায় এবং ট্যাঙ্কে থাকা অবশিষ্ট বর্জ্য পাইপের সাহায্যে নালায় চলে যায়।

এই শৌচাগারের বিশেষত্ব হলো এর কমোডের মধ্যে থাকা পানি কমোডের নিচে একটি 'U' আকৃতির পাইপের সাথে যুক্ত থাকে। এই 'U' পাইপের একাংশ হলো সাইফন টিউব যা কমোডে থাকা পানির উচ্চতার তুলনায় লম্বা থাকে। সাইফন টিউব ড্রেনের সাথে যুক্ত থাকে। ড্রেন পাইপের নিচের দিকই নিয়ন্ত্রণ করে কমোডে ঠিক কত পরিমাণ পানি হলে পানি ড্রেনের দিকে প্রবাহিত হবে।

একটি ফ্লাশ শৌচাগারের ফ্লাশের সময় বিপুল পরিমাণ পানি খরচ হয়। তাই কম ফ্লাশসম্পন্ন ফ্লাশ শৌচাগারও বাজারে পাওয়া যায়। তবে এখন কিছু আধুনিক দ্বৈত ফ্লাশ শৌচাগার পাওয়া যায় যেগুলোতে দুই রকমের ফ্লাশ পদ্ধতি থাকে। এই সমস্ত শৌচাগারে যে ফ্লাশ নিয়ন্ত্রণের হাতল থাকে তা উপরে টানলে একরকম ফ্লাশ হয় এবং নিচে নামালে আরেকরকম। .[১]

তাছাড়া জাহাজে যে ফ্লাশ শৌচাগার ব্যবহৃত হয় তাতে ফ্লাশের পানি হিসেবে সমুদ্রের পানি ব্যবহৃত হয়। [২][৩]

শুষ্ক শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

 
পিট পায়খানাসমূহ এখনও অনেক ধনী দেশগুলোর গ্রামাঞ্চলে রয়েছে। (হেরয়, নরওয়ে)

বিভিন্ন ধরনের শুষ্ক শৌচাগার রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে সরল থেকে জটিলের দিকে গেলে: একটি বালতি শৌচাগার(দেখতে মধুর বালতির মতো),ট্রী বোগ অথবা আর্বার্লু,পিট পায়খানা(মাটির ভেতর গভীর গর্তের মতো,ভউল্ট শৌচাগার(যা মলমূত্র মাটির নিচে রাখে তা বের না করা পর্যন্ত),কম্পোস্টিং শৌচাগার(মলের সাথে কার্বনজাতীয় যৌগ যোগ করে মল শোধন করে),মূত্রবিমুখী শৌচাগার(যা মল থেকে মূত্র কে পৃথক রাখে। এইসব শৌচাগার সাধারণত ফ্লাশের পানি ব্যবহার করে না। তাই এইসবের ক্ষেত্রে অঝতা পানি উৎপন্ন হয় না। তবে এইসব শৌচাগারের ক্ষেত্রে কিছু ব্যয়বহুল শৌচাগারও রয়েছে যা উড়োজাহাজে ব্যবহৃত হয়।[৪][৫][৬]

পিট পায়খানাসমূহ সম্পাদনা

 
অনেক খারাপ ভাবে বানানো একটি পিট পায়খানা, কেমেরুন

পিট পায়খানা হলো একটি শুষ্ক শৌচাগার প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ছোটোখাটো গর্ত বা খাঁজ তৈরির পর এর উপর কমোড বা অন্য কোনো উপায় যেমন কড়াইয়ের মতো দেখতে বিভিন্ন আকৃতির বাটি বসিয়ে সেখানে মানুষের বর্জ্য ফেলা হয়। এখনো অনেক গ্রাম্য এলাকায় এরকম সাময়িক শৌচাগার ব্যবস্থা দেখা যায়।

এই ব্যবস্থায় একটি মাটির ভেতর একটি গর্ত বা খাদ এমনভাবে তৈরি করা হয় যেনো এতে অনেক বছর পর্যন্ত মানুষের মলমূত্র ফেলা যায়। এরপর গর্তটি যখন ব্যবহার করতে করতে পূর্ণ হয়ে যায় তখন তা খালি করতে হয়। তাই এই জাতীয় পায়খানা জলাশয় থেকে দূরবর্তী কোনো স্থানে তৈরি করতে হয় যেনো পানি দূষন না হয়।

সাধারণত সৈন্যদলের সদস্যরা যেখানে পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই সেইসব স্থানে এই ধরনের পায়খানা সাময়িক ভাবে ব্যবহারের জন্য তৈরি করে নেয়।তবে এই ক্ষেত্রে তারা নির্দিষ্ট জায়গায় সঠিক অবস্থানে এই পায়খানা তৈরি করে। কারণ এইসব দূষণ থেকে ছড়ানো রোগে যে পরিমাণ সৈন্য মারা যায় তা ১৯৪০ সালে আর্টিলারি এবং বুলেট দ্বারা মৃত সৈন্যের সংখ্যা থেকে কয়েকগুণ বেশি। [৭]

ভউল্ট শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

ভউল্ট শৌচাগার হলো একটি ফ্লাশবিহীন শৌচাগার যেখানে একটি বড় আকারের বদ্ধ পাত্রকে মাটির নিচে পুঁতে রেখে ব্যবহার করা হয়। এতে ঐ পাত্রটিতে মলমূত্র জমা হয়। পাত্রটি পূর্ণ হয়ে গেলে মলমূত্র পাম্প করে ফেলে দেয়া হয়। এর সাথে পিট পায়াখানার পার্থক্য হলো এতে রাখা মলমূত্র সরাসরি মাটির সংস্পর্শে আসে না। বরং এর সাথে সেপটিক ট্যাঙ্কে এর কিছু মিল রয়েছে।

মূত্ররুপান্তরক শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

মূত্ররুপান্তরক শৌচাগারের দুইটি প্রকোষ্ঠ থাকে,একটি হলো মূত্রের জন্য এবং অপরটি মলের জন্য। একটি অথবা দুইটি প্রকোষ্ঠ ফ্লাশের পানি দ্বারা পরিষ্কার করা যেতে পারে। একটি মূত্ররুপান্তরক শুষ্ক শৌচাগারে মল রুপান্তর করে সার এবং বায়োগ্যাস তৈরির প্রক্রিয়াও যুক্ত করা যেতে পারে। নভোচারীরা এক ধরনের ইউডিডিটি স্পেস শৌচাগার ব্যবহার করেন যাতে পাত্রে রাখা পানি পুনরুদ্ধার করা যায়। [৮]

অন্যান্য সম্পাদনা

বহনযোগ্য শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

 
বহনযোগ্য শৌচাগারসমূহের একটি সারি
 
চায়নার একটি পর্বতের উপর বহনযোগ্য শৌচাগার

বহনযোগ্য শৌচাগার সাধারণত কোনো স্থাপনা নির্মাণের স্থানে,ফিল্ম বানানোর স্থানে কিংবা কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে বিপুল লোক সমাগমে ব্যবহৃত হয়। এরা সাধারণত শৌচাগারেই মলমূত্র সংরক্ষণ করে এবং সবকিছু ভিতরেই হয় বলে সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা যায়।এইসব শৌচাগারে সাধারণ মানের লক ব্যবহৃত হয়। এই শৌচাগারের অংশগুলো খুব হালকা এবং তা একটি ট্রাক দ্বারা সহজেই বহন করা যায় এবং ফর্কলিফট দ্বারা পূর্ণ কিংবা খালি করা যায়। প্রায় সব শৌচাগারেই লক করা যায় এমন প্লাস্টিকের দরজা এবং প্লাস্টিক দ্বারা তৈরি রুম থাকে। শৌচাগারের নিচে একটি কেমিক্যাল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পাত্র থাকে যাতে মানুষের মলমূত্র জমা হয়। অনেকদিন ব্যবহারের পর পূর্ণ হয়ে গেলে পাত্রটি পরিবর্তন করে ফেলা হয়। দুই বা ততোধিক বহনযোগ্য শৌচাগার থাকলে একটি ট্যাঙ্কার ট্রাক ব্যবহার করা হয় যাতে বর্জ্য সরানো এবং কেমিক্যাল পরিবর্তন করা যায়।

একটি বালতি শৌচাগার বা মধু বালতি নামে পরিচিত শৌচাগারও সরল বহনযোগ্য শৌচাগার।

রাসায়নিক শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

কেমিক্যাল শৌচাগারসমূহ যেখানে পানি সরবরাহের প্রয়োজন পরে না তা বিভিন্নরকম অবস্থায় ব্যবহৃত হয়। যেমন ট্রেন,এয়ারপ্লেন এবং মহকাশযানের শৌচাগারসমূহের ক্ষেত্রে কেমিক্যাল শৌচাগার ব্যবহৃত হয়।

উরন্ত শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

 
একটি বালতি শৌচাগার

একটি নোংরা উরন্ত শৌচাগার আফ্রিকায় ব্যবহৃত সাময়িক ব্যবস্থা যেখানে কোনো প্লাস্টিক ব্যাগ অথবা বালতি আকারের পাত্রে মল জমা করা হয়। এরপর তা দূরবর্তী কোনো স্থানে ফেলে দেয়া হয়। [৯] এই সমস্ত শৌচাগারকে উড়ন্ত বলা হয় যেহেতু এই ক্ষেত্রে একটি ব্যাগ অথবা পাত্রকে সাময়িক সময়ের জন্য শৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন শৌচাগারসমূহ অনেক সুবিধাসম্পন্ন হয়। যেমন এইসকল শৌচাগারে স্বয়ংক্রিয় ফ্লশ সুবিধা,কৃত্রিম ফ্লাশ শব্দ,কৃত্রিম পেপার-শৌচাগারসমূহসহ আরোও অনেক সুবিধা থাকে। যেমন মাতশুহিতার স্মার্ট শৌচাগার মানুষের তাপমাত্রা,রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার পরিমাণ পরিমাপ করতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব শৌচাগারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত আসন ব্যবহার করা হয়। সেগা দ্বারা তৈরিকৃত একটি শৌচাগারে গেম পর্যন্ত খেলা যায়। এইসব শৌচাগারে স্বয়ংক্রিয় সেন্সর ব্যবহৃত হয়।[১০]

ভাসমান শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

একটি ভাসমান শৌচাগার পানিতে ভাসমান অবস্থায় তৈরি করা হয়। এই ধরনের শৌচাগারে মলমূত্র সরাসরি পানিতে না ফেলে একটি ট্যাঙ্ক বা ব্যারেলে সংগ্রহ করা হয়। অনেকজায়গায় আবার বর্জ্যের পরিমাণ কমানোর জন্য মূত্র রুপান্তরক ব্যবহার করা হয়। ভাসমান শৌচাগার তাদের জন্য যারা সরাসরি মাটি অথবা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা হতে বিচ্ছিন্ন। [১১][১২] এটি অত্যধিক বন্যাপ্রবন এলাকাতেও ব্যবহৃত হয়।[১২] এই ধরনের শৌচাগার কম্বোডিয়ার মতো উঁচু এলাকায় প্রয়োজনীয়। [১৩]

ব্যবহারের অবস্থার উপর ভিত্তি করে প্রকারভেদ সম্পাদনা

শৌচাগারসমূহ আসনের মতো করে বসা কিংবা খাটো করে বসা অর্থাৎ স্কুয়াটের মতো করে নকশা করা যেতে পারে।

স্কুয়াট বা খাটো কমোডের শৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

একটি খাটো কমোড বা স্কুয়াট শৌচাগার যা স্কুয়াটিং শৌচাগার নামেও পরিচিত,হলো পিট পায়খানা,ফ্লাশ শৌচাগারের অন্য সংস্করণ। এই ধরনের শৌচাগারে পুরোপুরি বসে অর্থাৎ স্কুয়াট অঙ্গভঙ্গিতে বসে কেউ মলমূত্র সারতে পারেন।

স্কুয়াট শৌচাগারসমূহ তাই এশিয়া এবং আফ্রিকান দেশসমূহে পাওয়া যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান দেশেও দেখতে পাওয়া যায়। এই ধরনের শৌচাগার মুসলিম দেশসমূহে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। কারণ ইসলামী শরিয়াহ্ মোতবেক স্কুয়াটের মতো বসে মলমূত্র সারা উচিত।

১৯৭৬ সালের পর থেকে বিশ্বজুড়ে স্কুয়াট শৌচাগারই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষ ব্যবহার করছেন। [১৪] যদিও কোনো কোনো দেশে প্রথমে স্কুয়াট শৌচাগার থাকলেও পরে শহুরে এলাকাগুলোতে বসার আসনের মতো শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। [১৫]

ব্যবহার সম্পাদনা

মূত্রত্যাগ সম্পাদনা

কোন অঙ্গভঙ্গিতে মূত্রত্যাগ করা উচিত তা নিয়ে সংস্কৃতিগতভাবে ভিন্নতা রয়েছে। যেমন এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে খাটো করে বসে মূত্রত্যাগ করাকে অধিক যুক্তিসংগত মনে করা হয়,যেখানে পাশ্চাত্য দেশসমূহে এই ক্ষেত্রে দাড়িয়ে কিংবা বসে করা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত।[১৬]

মলত্যাগ বা পায়ুপরিষ্কারজনিত অভ্যাস সম্পাদনা

পাশ্চাত্য দেশসমূহের ক্ষেত্রে মলত্যাগের পর পায়ু পরিষ্কারের জন্যটিস্যু পেপার কিংবা বিডেট ব্যবহার করে। বহু মুসলিম দেশসমূহের ক্ষেত্রে এক্ষেত্রে সুবিধাসমূহ এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যেনো তা ইসলামী শরিয়াহ্ Qaḍāʼ al-Ḥājah মেনে চলে। [১৭] উদাহরণ হিসেবে,এশিয়ান অনেক দেশে বামহাতে পায়ুধৌতকরণের কাজ করা হয় বলে এই হাতকে নাপাক হিসেবে ধরা হয়। [১৮]

গণশৌচাগারসমূহ সম্পাদনা

একটি গণশৌচাগার হলো সকল সাধারণ জনগণের কাছে উন্মুক্ত শৌচাগার। এটা কোনো পৌরসভা সরকার কর্তৃক অধিকৃত এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে। কিংবা এটি কোনো বিশেষ প্রতিষ্ঠানের ভিতরে অবস্থিত এবং শুধু ঐ প্রতিষ্ঠানের ক্রেতাদের কাছে উন্মুক্ত থাকতে পারে যেমন কোনো রেস্টুরেন্ট কিংবা বাসস্টেশনের শৌচাগার। কখনও কখনও আবার এই শৌচাগারগুলো নির্দিষ্ট ফি দিয়ে ব্যবহার করতে হয়। তখন এদের 'পে শৌচাগার' বলে।

সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে এগুলো পুরুষ এবং নারীর জন্য ভিন্ন এবং এদের নিরাপত্তাও ভিন্ন হতে পারে। এগুলো একটি সাধারণ পায়খানার মতোই লকসহ একটি দর্জা এবং একটি কমোড নিয়ে গঠিত। পুরুষদের মূত্র ত্যাগের জন্য অবশ্য দেয়ালে সিরামিকের তৈরি বাটির মতো দেখতে কিছু একটা টাঙ্গানো থাকে।এদেরকে ফরাসি ভাষায় পসয়ের বলে।

জনগণের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব সম্পাদনা

বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মতে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতির জন্য শৌচাগার ব্যবস্থা পুনঃআবিষ্কার ও উন্নয়নকরণ প্রয়োজন

বর্তমানে পুরোপৃথিবীর প্রায় ১০০ কোটিরোও বেশি মানুষের শৌচাগার ব্যবস্থা নেই। তারা খোলা আকাশের নিচে মলমূত্র ত্যাগ করে। [১৯]ডব্লিওএইচও এবং ইউনিসেফ এর দ্বারা পরিচালিত পানি সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার যৌথ পর্যবেক্ষণকরণ প্রোগ্রামটি সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য অফিসিয়াল প্রোগ্রাম। এর প্রধান লক্ষ্য হলো ২০১৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের জন্য সাধারণ শৌচাগারব্যবস্থা এবং নিরাপদ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করা। [২০] আরেকটি সংগঠন যা শৌচাগার ব্যবস্থার উপর জোড় দিচ্ছে তা হলো বিশ্ব শৌচাগার সংগঠন[২১]

শৌচাগার নিরাপদ স্বাস্থ্যব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাছাড়া অন্যান্য ব্যবস্থা যেমন পরিবহন পরিশোধন এবং বর্জ্য পুনব্যবহারকরণেরও প্রয়োজন রয়েছে। [২] বিভিন্ন রোগবালাই যেমন কলেরার মতো রোগের কারণে আজকাল প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় ৩০ লাখের মতো মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র নিরাপদ স্বাস্থ্যব্যবস্থা না থাকার কারণে।

ইংল্যান্ডে কলেরার উদাহরণ সম্পাদনা

এক কলেরাতেই মৃত্যুর পাঁচটি নজির আছে ইংল্যান্ডে। ১৮২৫ সালে প্রথম সংক্রমণে শুধুমাত্র লন্ডনেই প্রায় ১৪১৩৭ জন মানুষ মারা গিয়েছিলো।১৮৪৯ পরবর্তী সংক্রমণে প্রায় ১০৭৩৮ জন মারা গিয়েছিলো। ১৮৪৯ সালে পদার্থবিদ জন স্নো কলেরার উপর অনেক গবেষণা করেন এবং বলেন যে কলেরা একটি পানিবাহিত রোগ। যারা যারা দূষিত উৎস থেকে পানি পান করে তারাই কলেরায় আক্রান্ত হয়। তাই কলেরার প্রাদুর্ভাব কমানোর জন্য পানিদূষন কমাতে হবে।

ইতিহাস সম্পাদনা

প্রাচীন ইতিহাস সম্পাদনা

 
অস্টিয়া এন্টিকা তে রোমান গণশৌচাগারসমূহ
 
২০-২২৫ খ্রীষ্টাব্দে পূর্বদেশীয় হান সাম্রাজ্যে শৌচাগারের মডেল

খ্রীষ্টের জন্মের তিন সহস্র বছর পূর্বে শৌচাগার এবং পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা আবিষ্কৃত হয়। ২৮০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মহেঞ্জো দাড়ো তে বাড়ির বাহিরের দেয়ালের সামনে কিছু উন্নত মানের শৌচাগার ছিলো। এগুলো প্রায় পশ্চিমা ধাঁচের ছিলো যেগুলো এমনভাবে উন্মুক্ত ছিলো যেনো মল ত্যাগ করলে তা উন্মুক্ত পথ দিয়ে গিয়ে তার নিচে থাকা ড্রেনে গিয়ে পরে। [২২]

তবে এই শৌচাগারগুলো শুধুমাত্র উপরের শ্রেণির লোকেরা ব্যবহার করত। নিচের শ্রেণিরা একটি পট মাটিতে গেড়ে তার উপর ছোটো কমোডের মতো ব্যবস্থা বানিয়ে ব্যবহার করত। [২৩] পাকিস্তান এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের সিন্ধু সভ্যতা এবং ইন্দু সভ্যতার লোকেরা পানি দ্বারা ধৌত করা যায় এমন শৌচাগার ব্যবহার করত যা একটি পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত থাকতো। এসব ড্রেন কাদা মাটি দ্বারা তৈরিকৃত ইট দ্বারা ঢাকা থাকতো। [২৪]

অন্যান্য পানি ফ্লাশসম্পন্ন শৌচগার সমূহ পাওয়া গিয়েছিলো স্কটল্যান্ড এর অর্কনি তে অবস্থিত স্কাইরা ব্রি তে,যেটা প্রায় ৩১০০ থেকে ২৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে পাওয়া গিয়েছিলো। এরপর ১৮ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মিনোয়ান ক্রীট,ফারাওনিক মিশর এবং প্রাচীন পারস্য তে শৌচাগারসমূহের ব্যবহার শুরু হয়।

২০১২ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভিয়েতনামে সবচেয়ে পুরোনো শৌচাগারের সন্ধান পান যেটা প্রায় ১৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে তৈরি করা হয়েছিলো। শৌচাগারটি থেকে ১৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সামাজিক সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক ধারণা পাওয়া যায়। [২৫][২৬][২৭]

প্রাচীন রোমান সভ্যতায় শৌচাগার যেগুলো পানি প্রবাহ ব্যবহার করে এগুলো মাঝে মাঝে জনসাধারনের গোছলখানা হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। এই রোমান শৌচাগারগুলো সাধারণত ড্রেনের ঠিক উপরে তৈরি করা হতো যাতে মলত্যাগ করা মাত্রই তা পানিতে ধুয়ে যায়। রোমান এবং গ্রীকরা এক্ষেত্রে চ্যাম্বার পাত্রের ব্যবহারও করতো। [২৮] জন জে. মাটলেয়ার বলেছেন,"প্লিনিয়াস বর্ণনা করেছেন কীভাবে রোম এবং পম্পেই এর রাস্তাগুলোয় বড় বড় গর্ত থাকতো সেখানে চ্যাম্বার পটগুলো রাখা হতো। এসব চ্যাম্বার পট থেকে মূত্র পরে ফুলাররা সংগ্রহ করতো। এইসব পরে টেক্সটাইল ম্যানুফেকচার এ ব্যবহার করা হতো। "

প্রাচীন-পরবর্তী ইতিহাস সম্পাদনা

প্রাচীন-পরবর্তী যুগে গার্ডেরোব জাতীয় শৌচাগার ব্যবহৃত হতো। এগুলো বেশিরভাগ পাওয়া যেতো উচু জাতের মানুষদের ঘরে। তারা জমিদারি ঘর অথবা দুর্গের বাইরে গিয়ে উন্মুক্ত হয় এমন কোনো পাইপের উপর একাধিক গর্ত করে তা শৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করত। [২৯]

শৌচাগার করার অন্য একটি প্রধান উপায় ছিলো চেম্বার পাত্র,একটি বড় গর্তের মতো যা সাধারণত সিরামিক বা ধাতু দিয়ে তৈরি এবং বর্জ্য পদার্থ ত্যাগের কাজে ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতি প্রায় শত বছর আগের এবং বছরের পর বছর ধরে এই পদ্ধতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। [৩০] চেম্বার পাত্র সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হতো ইউরোপে এবং তা মধ্যপ্রাচ্য দ্বারা ইউরোপ দখলের পরও। [৩১]

আধুনিক ইতিহাস সম্পাদনা

 
বোর্ড আলুই ,অস্ট্রিয়ান ইম্পেরিয়াল হাউজ থেকে চেম্বার পাত্রসমূহ
 
১৮ শতকের শুরুতে ব্রিটিশ তিন আসনবিশিষ্ট প্রাইভি
 
১৯ শতকের ভারী কাঠের কমোড

আধুনিক যুগের শুরুর দিকে চেম্বার পাত্রগুলো ক্রমাগত চীনামাটি আর কপার দিয়ে বানানো শুরু হয় এবং এগুলো বিভিন্নভাবে সাজানো শুরু হয়। এই সময় এই শৌচাগারগুলোর বর্জ্য বাড়ির মাটির নিচে পাঠানোর ব্যবস্থা শুরু হয়।

১৬ শতকের দিকে ইউরোপে বাড়ির কাছে মানুষের বর্জ্য সংগ্রহের জন্য সেসপিট এবং সেসপুল গর্ত করার সংখ্যা বেড়ে যায়।জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তার নিচেও মানুষের মল যাওয়ার জন্য নালা খনন করা হয়। এতসব মল জাতীয় বর্জ্য বৃষ্টির পানিতে ধুয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলো না। সেসপুলগুলো বিভিন্ন ট্রেডম্যান দ্বারা পরিষ্কার করানো হতো। এরা প্রতি রাতে আসতো এবং এক ধরনের লিকুইড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপ করে কঠিন মল বের করে নিয়ে আসতো। এই কঠিন বর্জ্য বাজারে নাইটসয়েল নামে সার উৎপাদনের জন্য বিক্রি করা হতো।

গার্ডেরোব পরবর্তীতে পেইল ক্লোসেট এবং পিগ মিডেন দ্বারা অপসারিত হয়।

১৯ শতকের দিকে বিভিন্ন দক্ষ স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীর সহযোগিতায় রাস্তার নিচে নালা খননের কাজ শুরু হয় এবং ম্যানহোল ব্যবস্থার উত্থাপন হয়। এই পদ্ধতি সেসপুল পদ্ধতিকে প্রতিস্থাপিত করে। যদিও এখনোও প্যারিসের অনেক জায়গায় এখনও সেসপুল পদ্ধতি প্রচলিত আছে। [৩২]

গৃহমধ্যস্থ শৌচাগারের পূর্বে যেমন ভিক্টোরিয়া আমলে লোকজন বিছানার নিচে চেম্বার পট রাখত এবং রাতে তা ব্যবহারের পর সকালে চাকরদের দিয়ে তা সাফ করিয়ে নেয়া হতো। ফ্লাশ শৌচাগারের প্রচলনের পর এই পদ্ধতি বিলুপ্ত হয়। [৩৩] এই চেম্বার পট খালি করার পদ্ধতিকে স্লোপিং আউট বলা হয় এবং এই পদ্ধতি এখনও আয়ারল্যান্ডে প্রচলিত আছে।

ফ্লাশ শৌচাগারের উন্নয়ন সম্পাদনা

আজ যে ফ্লাশ শৌচাগার বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তা অবিষ্কার করেছিলেন জন হেরিংটন ১৫৯৬ সালে। [৩৪] তবে এই পদ্ধতি ১৯ শতকের আগে জনসম্মুখে এসেছিলো না। [৩৫]শিল্প বিপ্লবের মৌসুমে ফ্লাশ শৌচাগার আধুনিক রুপ নিতে শুরু করে। ১৭৭৫ সালে স্কটিস বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার কিউমিংস ফ্লাশ শৌচাগারের ক্ষেত্রে এস আকৃতির ট্র্যাপ প্লাম্বিং আবিষ্কার করেন যা আজও ব্যবহৃত হচ্ছে। এই যন্ত্রটি জমা থাকা পানিকে ব্যবহার করে ফ্লাশ বোউল বা বাটিকে সিল করে রাখে এবং বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ বের হতে বাঁধা দেয়। ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়েই শিল্পের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফ্লাশ শৌচাগারের ব্যবহারও ব্যাপক বেড়ে যায়। এই সময়েই নাটকীয়ভাবে লন্ডনে রাস্তার নিচে নালা পদ্ধতিতে বর্জ্য নিষ্কাশন শুরু হয়। এই পদ্ধতি ফ্লাশ শৌচাগারের জনপ্রিয়তা আরোও বাড়িয়ে দেয়। এরপর ১৯৮০ সালে আমেরিকায় চেইন টানা যায় এমন ফ্লাশ শৌচাগারের প্রচলন হয় এবং এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন উইলিয়াম এলভিস স্লোয়ান ১৮৯০ সালে। এই পদ্ধতিতে পানির অভ্যন্তরীন চাপকে কাজে লাগিয়ে ক্রমাগত উপর্যুপরি ফ্লাশ তৈরি করা হয়। এতে পানির সরবরাহ বেড়ে যায়।

নামসমূহ সম্পাদনা

নামকরণের ইতিহাস সম্পাদনা

 
উইলিয়াম হোগার্থ এর "ম্যারেজ অ'লা মোড" সিরিজ থেকে লা টয়লেটে[৩৬]
 
রাণী কার্লট এর বিবরণ তার দুই পুত্রের সাথে, Johan Zoffany, 1765, (পুরো চিত্রটি). তিনি ড্রেসিং টেবিলে টয়লেট সারছিলেন

টয়লেট বা শৌচাগার শব্দটি প্রকৃতপক্ষে একটি ফরাসি শব্দ যা "টয়লেটে" শব্দটিকে নির্দেশ করে যার অর্থ "ছোট কাপড়"। [৩৭] ১৭ শতকের সময়[৩৭] শব্দটি ব্যবহৃত হয় ড্রেসিং টেবিলে সম্পূর্ণ শরীর কাপড় দিয়ে আবৃত রেখে শরীর চর্চার ক্ষেত্রে। এসময় তারা মল ত্যাগের কাজে ব্যবহার করলে তাকে সবাই একজনের টয়লেট বলে সম্বোধন করত। [৩৭][৪০]

সাজগোজের কাজে একটি বিশেষ ঘরের ক্ষেত্রে "টয়লেট" শব্দটির ব্যবহার বহু পরে শুরু হয় এবং তা হয় ফরাসি শব্দ কেবিনেট ড্য টয়লেট। এরপরই টয়লেট শব্দটি ধীরে ধীরে মলমূত্র ত্যাগের ঘরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। পরে আমেরিকায় চেম্বার পট,পায়খানা এবং আউটহাউসের ক্ষেত্রেও টয়লেট শব্দটি ব্যবহৃত হয় যার বাংলা প্রতিশব্দ "শৌচাগার"। [৩৭]

ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবহার সম্পাদনা

মলত্যাগের জন্য শৌচাগার শব্দটির ব্যবহার অনেক ইংরেজ জাতির কাছে লজ্জাজনক মনে হয়। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় থাকা অন্য ইংরেজ জাতিরা শব্দটি সাচ্ছন্দে ব্যবহার করেন। টয়লেট বা শৌচাগার পদটির ব্যবহার প্রকৃতপক্ষে শ্রুতিকটু পদের পরিবর্তে কোমলতর পদের প্রয়োগের উদাহরণ। যদিও এসব ক্ষেত্রে পরে পদের পরিবর্তন হয়। শৌচাগার শব্দটির ব্যবহার না করা শুধুমাত্র অঞ্চলভেদেই নয়। অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই শব্দের ব্যবহার না করা লক্ষণীয়। যেমন আমেরিকার কোহলার কোম্পানির ক্ষেত্রে তারা টয়লেট শব্দটি ব্যবহার না করে ক্লোসেট বা কোমোড শব্দটি ব্যবহার করে। আবার জাপানের টোটো কোম্পানি এই ক্ষেত্রে টয়লেট শব্দটিই ব্যবহার করে।

জাতিভেদে প্রকারভেদ সম্পাদনা

বিভিন্ন উপজাতিরা টয়লেট শব্দটির পরিবর্তে বাথরুম এবং রেস্টরুম ব্যবহার করে। তবে কানাডীয়রা এক্ষেত্রে ওয়াসরুম ব্যবহার করে।

ছবিসমগ্র সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Tucson lawmaker wants tax credits for water-conserving toilet"। Cronkite News Service। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-১২ 
  2. Tilley, E., Ulrich, L., Lüthi, C., Reymond, Ph., Zurbrügg, C.। Compendium of Sanitation Systems and Technologies – (2nd Revised Edition)। Swiss Federal Institute of Aquatic Science and Technology (Eawag), Duebendorf, Switzerland। আইএসবিএন 978-3-906484-57-0 
  3. "Pour Flush Toilet"Akvo। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৬ 
  4. "Swachh Bharat Abhiyan should aim to stamp out manual scavenging"। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  5. Umesh IsalkarUmesh Isalkar, TNN (৩০ এপ্রিল ২০১৩)। "Census raises stink over manual scavenging"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  6. "Manual scavenging still a reality"। The Hindu। ৯ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  7. "Fabrication of Semi Automated Pressurized Flushing System in Indian Railway Toilet"International Journal of Engineering and Advanced Technology (IJEAT)। ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৬ 
  8. "NASA Gives Space Station Crew 'Go' to Drink Recycled Water, May 2009"। ৩০ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  9. Whitaker, Mark. 30 June 2007. "Why Uganda hates the plastic bag." BBC News via news.bbc.co.uk. Retrieved on 28 September 2007.
  10. Geere, Duncan. (৬ জানুয়ারি ২০১১)। "'Toylet' Games in Japan's Urinals"। Wired UK। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১১ 
  11. "Sample Designs: Floating UDD Toilets, Asian Development Bank Website"। ১১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  12. "Article, Govt: Bt900bn needed (in Thailand), The Nation October 31, 2011"। সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭ 
  13. Article: Floating toilets to clean up Cambodia's act, Author: Geoffrey Cain April 19, 2010, Global Post[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  14. Kira A. The Bathroom. Harmondsworth: Penguin, 1976, revised edition, pp.115,116.
  15. von Münch, E.; Milosevic, D. (2015): Qualitative survey on squatting toilets and anal cleansing with water with a special emphasis on Muslim and Buddhist countries by using the SuSanA discussion forum. Ostella Consulting, Schwalbach, Germany
  16. Y. de Jong। "Influence of voiding posture on urodynamic parameters in men: a literature review (in Dutch)" (পিডিএফ)। Nederlands Tijdschrift voor urologie। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-০২ 
  17. Shu'aib, Tajuddin B., "Qadaahul Haajah (Relieving Oneself)", The Prescribed Prayer Made Simple, MSA West Compendium of Muslim Texts, ২০০৯-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-১০ 
  18. "Eight surprisingly rude gestures to avoid when travelling"News.com.au। নভেম্বর ২১, ২০১৩। ২৬ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৬ 
  19. manic। "World Toilet"World Toilet (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-০৭ 
  20. WHO and UNICEF Progress on Sanitation and Drinking-water: 2013 Update ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে, WHO, Geneva and UNICEF, New York
  21. manic। "World Toilet"World Toilet (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৫-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-০৭ 
  22. Teresi et al. 2002
  23. "Early Latrines and Plumbing"। ২২ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৫ 
  24. "Who invented a version of the flowing water toilet"। ২৪ জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১৭ 
  25. Old toilet find offers civilization start clues. Stuff.co.nz. Retrieved 28 September 2013.
  26. Time capsule ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে. Viet Nam News. Retrieved 28 September 2013.
  27. Asia’s First Toilet Discovered In Southern Viet Nam. Asian Scientist. Retrieved 28 September 2013.
  28. Mattelaer, Johan J. "Some Historical Aspects of Urinals and Urine Receptacles." World Journal of Urology 17.3 (1999): 145–50. Print.
  29. Genc, Melda. "The Evolution of Toilets and Its Current State." Thesis. Middle East Technical University, 2009. Harold B. Lee Library. Brigham Young University, 2009. Web. 28 Nov. 2011.
  30. Powell, Christine A. "Port Royal Chamberpots Introduction." Nautical Archaeology at Texas A&M University. Texas A&M University, 1 Dec. 1996. Web. 28 Nov. 2011.
  31. Setton, Kenneth M. & Harry W. Hazard (১৯৭৭)। A History of the Crusades, Volume IV: The Art and Architecture of the Crusader States। University of Wisconsin Press। পৃষ্ঠা 47। আইএসবিএন 978-0-299-06824-0 
  32. La Berge, Ann Elizabeth Fowler (২০০২)। Mission and Method: The Early Nineteenth-Century French Public Health Movement। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 207–9। আইএসবিএন 978-0-521-52701-9 
  33. Flanders, Judith (২০০৩)। The Victorian House। London: HarperCollins। পৃষ্ঠা 64আইএসবিএন 0-00-713189-5 
  34. "Victoriancrapper.com"। ১৫ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৫ 
  35. Poop Culture: How America is Shaped by its Grossest National Product, Dave Praeger, আইএসবিএন ১-৯৩২৫৯৫-২১-X
  36. See Egerton op cit
  37. "toilet, n.", Oxford English Dictionary, Oxford: Oxford University Press .
  38. Egerton, Judy (১৯৯৮), "The British School", National Gallery Catalogues, New Series, পৃষ্ঠা 167, আইএসবিএন 1-85709-170-1 .
  39. Pope, Alexander (১৭১৭), The Rape of the Lock .
  40. See, e.g., the description of the Hogarth painting "The Toilette" from his Marriage à-la-mode series in Egerton[৩৮] or the extensive discussion of a lady's toilet in Pope.[৩৯]

আরোও পড়ুন সম্পাদনা