জিস্ম
জিসম (বাংলা: শরীর) হল ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় ইরোটিক থ্রিলার চলচ্চিত্র। এই ছবির সম্পাদক ও পরিচালক অমিত সাক্সেনা, কাহিনিকার মহেশ ভাট এবং প্রযোজক পূজা ভাট ও সুজিত কুমার সিং (ফিশ আই নেটওয়ার্ক প্রাইভেট লিমিটেড ও শ্রেয়া ক্রিয়েশনসের ব্যানারে)। এই ছবিতে অভিনয় করেন বিপাশা বসু ও জন আব্রাহাম। এটিই ছিল জন আব্রাহামের প্রথম বলিউড চলচ্চিত্র। এই ছবির সংগীতকার ছিলেন এম. এম. কীরবানি। চ্যানেল ফোর কর্তৃক শ্রেষ্ঠ ১০০টি যৌনোদ্দীপক চলচ্চিত্র দৃশ্যের সমীক্ষায় জিস্ম ছবিটি ৯২তম স্থান অধিকার করে।[১] এই ছবিটি বডি হিট ছবিটির পুনর্নিমিত রূপ। বডি হিট ছিল ১৯৪৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তথা বিলি ওয়াইল্ডারের বিখ্যাত ডাবল আইডেন্টিটি ছবি থেকে অনুপ্রাণিত। ডাবল আইডেন্টিটি জেমস কলিনের একই নামের একটি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল।
জিসম | |
---|---|
Jism | |
পরিচালক | অমিত সাক্সেনা |
প্রযোজক | পূজা ভাট সুজিত কুমার সিং |
রচয়িতা | নিরঞ্জন আয়েঙ্গার (সংলাপ) |
চিত্রনাট্যকার | মহেশ ভাট |
কাহিনিকার | মহেশ ভাট |
শ্রেষ্ঠাংশে | বিপাশা বসু জন আব্রাহাম গুলশান গ্রোভার |
সুরকার | এম. এম. কীরাবানি |
চিত্রগ্রাহক | ফুয়াদ খান |
সম্পাদক | অমিত সাক্সেনা |
প্রযোজনা কোম্পানি | ফিশ আই নেটওয়ার্ক প্রাইভেট লিমিটেড |
পরিবেশক | শ্রেয়া ক্রিয়েশনস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৩৬ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
আয় | ₹১৩২.৫ মিলিয়ন (ইউএস$ ১.৬২ মিলিয়ন) |
কাহিনি সারাংশ
সম্পাদনাকবির (জন আব্রাহাম) একজন অসুখী, দরিদ্র, মদ্যপায়ী আইনজীবী। তিনি পুদুচেরিতে প্লেবয় ধাঁচের জীবন যাপন করেন। কবিরের প্রিয় বন্ধু সিদ্ধার্থ (বিনয় পাঠক) ও বিশাল (রণবীর শোরে) পুলিশ অফিসার। তারা তাকে সব রকম বিপদ আপদ থেকে উদ্ধার করেন। কবিরের সঙ্গে সনিয়া খান্না (বিপাশা বসু) নামে এক সুন্দরী নারীর আলাপ হয়। সনিয়া রোহিত খান্না (গুলশন গ্রোভার) নামে এক কোটিপতি পর্যটকের স্ত্রী।
কবির ও সনিয়ার মধ্যে সম্পর্কের দ্রুত উন্নতি হয়। কবির সনিয়ার প্রেমে পড়ে যান। তিনি সনিয়াকে বলেন তার স্বামীকে ডিভোর্স করতে। কিন্তু সনিয়া বলেন, তাহলে তার স্বামী দুজনকেই হত্যা করবেন। শেষ পর্যন্ত সনিয়া কবিরকে রাজি করান তার স্বামীকে হত্যা করে ঘটনাটা একটা দুর্ঘটনার মতো করে দেখাতে। তিনি আরও বলেন যে, তারা রোহিতের উইল পরিবর্তন করবেন, যাতে সনিয়া রোহিতের সম্পত্তির মালিক হতে পারেন। কবির সনিয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সনিয়া এগিয়ে যান এবং উইলে কবিরের নাম একজিকিউটর হিসেবে রাখেন। রোহিতের বোন প্রিয়াঙ্কা কাপুর কবিরকে সাবধান করে দিয়ে বলেন, সনিয়া শুধু টাকাই চান। তিনি ইতিমধ্যেই রোহিতের প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। সিদ্ধার্থ সেই কেসটির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি কবিরকে সন্দেহ করেন। কিন্তু বন্ধুত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। কবির সনিয়াকে নিয়ে শহর ছাড়তে চান। কিন্তু সনিয়া একজনকে পাঠান কবিরকে হত্যা করতে। তখনই কবির বুঝতে পারেন যে, সনিয়া শুধু টাকাই চান।
কবির সনিয়ার মুখোমুখি হন। সনিয়া স্বীকার করেন যে, তিনি কখনই কবিরকে ভালোবাসেননি। কবির ভয় দেখান যে, তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে অপরাধ কবুল করবেন। শুনে সনিয়া তাকে গুলি করেন। কবিরের পেটে গুলি লাগে। তিনি আহত হন। কিন্তু উঠে দাঁড়ান। সনিয়া তখন তার কাছে ছুটে এসে বলেন, তিনি সবসময়ই কবিরকে ভালোবেসেছিলেন। দুজনে একে অপরকে চুম্বন করেন। সেই সুযোগে সনিয়ার হাত থেকে বন্দুকটি নিয়ে নেন কবির। তিনি সনিয়াকে গুলি করেন। সনিয়া সোফায় পড়ে যান।
কবির পালিয়ে আসেন। সিদ্ধার্থ ও বিশালকে বলেন তার সঙ্গে সৈকতে দেখা করতে। তারা আসেন। কবির বলেন, তিনি দুঃখিত। জীবনে শেষ বারের জন্য তিনি সূর্যোদয় দেখতে চান। তারা যখন সূর্যোদয় দেখছেন, এমন সময় কবির মানস চক্ষে দেখেন সনিয়া তার দিকে এগিয়ে আসছেন। কবির মনে মনে হাসেন এবং মারা যান।
অভিনেতা অভিনেত্রী
সম্পাদনা- জন আব্রাহাম – কবির লাল (ডাবিং শিল্পী বিরাজ আধব)
- বিপাশা বসু – সনিয়া খান্না (ডাবিং শিল্পী মোনা ঘোষ শেঠি)
- গুলশন গ্রোভার – রোহিত খান্না
- রণবীর শোরে - বিশাল
- অনিতা ওবেরয় – প্রিয়াঙ্কা কাপুর (রোহিতের বোন)
- আয়েশা কাপুর
- হর্ষ বাশিষ্ঠ – বোমা প্রস্তুতকারক
- বিনয় পাঠক – সিদ্ধার্থ, ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ
- ববি বেদি
- শুভলেখা সুধাকর
অন্যান্য কলাকুশলী
সম্পাদনা- সম্পাদনা ও পরিচালনা: অমিত সাক্সেনা
- প্রযোজনা: পূজা ভাট ও সুজিত কুমার সিং
- কাহিনি ও চিত্রনাট্য: মহেশ ভাট
- সংলাপ: নিরঞ্জন আয়েঙ্গার
- সুরকার: এম. এম. করীম
- সিনেমাটোগ্রাফি: ফুয়াদ খান
- শিল্প নির্দেশক: তোট্টা তারানি
- অ্যাকশন কো অরিজিনেটর: আব্বাস আলি মোগল
- কোরিওগ্রাফার: রাজু খান
- গীতিকার: নীলেশ মিশ্র ও সৈয়দ কাদ্রি
- স্টুডিও: ফিশ আই নেটওয়ার্ক প্রাইভেট লিমিটেড
- পরিবেশক: শ্রেয়া ক্রিয়েশনস
সংগীত
সম্পাদনাজিস্ম | ||||
---|---|---|---|---|
কর্তৃক সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম | ||||
মুক্তির তারিখ | ১৮ ডিসেম্বর, ২০০২ | |||
ঘরানা | ফিল্ম সাউন্ডট্র্যাক | |||
প্রযোজক | ফিশ আই নেটওয়ার্ক | |||
এম. এম. কীরবানি কালক্রম | ||||
|
জিস্ম ছবির সাউন্ডট্র্যাকটি প্রকাশিত হয় ২০০২ সালের ১৮ ডিসেম্বর।[২] এম. এম. কীরবানি এই ছবিতে সুর দেন এম. এম. করিম নামে। গীতিকার ছিলেন নীলেশ মিশ্র ও সৈয়দ কাদরি।
জিস্ম (ওরিজিন্যাল মোশন পিকচার সাউন্ডট্র্যাক) | ||||
---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | গীতিকার | শিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "জাদু হ্যায় নশা হ্যায়" (নারী কণ্ঠ) | নীলেশ মিশ্র | শ্রেয়া ঘোষাল | ৫:২৯ |
২. | "আওয়ারাপন বনজারাপন" (১ম সুর) | সৈয়দ কাদরি | গায়ক | ৭:০১ |
৩. | "শিকায়ৎ হায়" | সৈয়দ কাদরি | রূপকুমার রাঠোড় | ৬:৪৭ |
৪. | "মেরে খোয়াবোঁ কা" | সৈয়দ কাদরি | উদিত নারায়ণ | ৪:৩৭ |
৫. | "চলো তুমকো লেকর চলে" | নীলেশ মিশ্র | শ্রেয়া ঘোষাল | ৪:৪৮ |
৬. | "আওয়ারাপন বনজারাপন" (২য় সুর) | সৈয়দ কাদরি | এম. এম. কীরবানি | ২:৪৯ |
৭. | "জাদু হ্যায় নশা হ্যায়" (দ্বৈত কণ্ঠে) | নীলেশ মিশ্র | শ্রেয়া ঘোষাল, শান | ৫:২৮ |
৮. | "আওয়ারাপন বনজারাপন" (৩য় সুর) | সৈয়দ কাদরি | এম. এম. কীরবানি | ৪:১৭ |
বক্স অফিস
সম্পাদনাজিস্ম মোট ₹১৩২.৫ মিলিয়ন (ইউএস$ ১.৬২ মিলিয়ন)র বাণিজ্য করে। বক্স অফিস ইন্ডিয়া এটিক ‘হিট ম্যাশিন’ আখ্যা দেয়।[৩]
ধারাবাহিক
সম্পাদনা২০১২ সালের ৩ অগস্ট এই ছবির একটি সিকোয়েল জিস্ম ২ মুক্তি পায়। সেই ছবিতে সানি লিওন অভিনয় করেছিলেন। ছবিটির পরিচালক ছিলেন পূজা ভাট।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Jism among hottest in UK poll"। ২০১১-০৮-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৭।
- ↑ Planet-Bollywood - Music Reviews - Jism
- ↑ "Box Office - 2003"। ২৫ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৬।
- ↑ Sunny Leone to bare all for 'Jism 2'?
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে জিস্ম (ইংরেজি)