ছায়ানট
এই নিবন্ধটির একটা বড়সড় অংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশই একটিমাত্র সূত্রের উপর নির্ভরশীল। (ডিসেম্বর ২০২১) |
ছায়ানট বাংলাদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন। ১৯৬১ সালে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসব পালন করা ছাড়াও এই সংগঠন বাদ্যযন্ত্র, সঙ্গীত, নৃত্য প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ও সঙ্গীত বিদ্যালয় পরিচালনা করে থাকে। পহেলা বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ রমনার বটমূলে ছায়ানটের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/47/%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A6%A3%2C_%E0%A7%A7%E0%A7%AA%E0%A7%A8%E0%A7%AA_%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6.jpg/220px-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A6%A3%2C_%E0%A7%A7%E0%A7%AA%E0%A7%A8%E0%A7%AA_%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6.jpg)
প্রতিষ্ঠা
সম্পাদনাষাটের দশকে ফৌজি পাক-সরকার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্র সংগীত গাওয়া, বেতার বা টেলিভিশনে সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে। এতে বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী কলিম শরাফী দমে না গিয়ে অন্যান্যদের সহায়তায় রবীন্দ্র সংগীত, নাটক ও নৃত্যনাট্যের সংস্থা ছায়ানট গড়ে তোলেন। নিষেধাজ্ঞার ভিতর গুপ্ত সংগঠনের মতো জেলা শহরগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছিল 'ছায়ানট'-এর শাখা।[১] ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী উৎযাপনের পর একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন কয়েকজন সংগঠক। তাদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান (সিধু ভাই নামে পরিচিত), শামসুন্নাহার রহমান, সুফিয়া কামাল, ওয়াহিদুল হক অন্যতম। সাঈদুল হাসানের প্রস্তাবে সংঠনটির নামকরণ করা হয় ছায়ানট।
১৯৬১ সালে সুফিয়া কামালকে সভাপতি আর ফরিদা হাসানকে সম্পাদক করে প্রথম কমিটি গঠিত হয়। সহ-সভাপতি জহুর হোসেন চৌধুরী, সাঈদুল হাসান। সহ-সম্পাদক সাইফুদ্দীন আহমদ মানিক, মিজানুর রহমান ছানা। কোষাধ্যক্ষ পদে মোখলেসুর রহমান ও সদস্যরা ছিলেন কামাল লোহানী, ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন, আহমেদুর রহমান প্রমুখ।
কার্যক্রম
সম্পাদনা১৯৬১ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ছায়ানটের প্রথম অনুষ্ঠান পুরানো গানের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে সনজীদা খাতুনের উদ্যোগে বাংলা একাডেমীর বারান্দায় সঙ্গীত শেখার ক্লাস শুরু হয়। সনজীদা খাতুন ও ফরিদা মালিক রবীন্দ্র সঙ্গীত, বজলুল করিম তবলা, মতি মিয়া বেহালা ও সেতার এবং সোহরাব হোসেন নজরুল গীতি শেখাতেন। ঐ সালেই ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১লা বৈশাখ, ১৩৭০ বঙ্গাব্দে ওস্তাদ আয়েত আলী খান এই বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন।
ছায়ানটের প্রাথমিক কার্যক্রম ইংলিশ প্রিপারোটরি স্কুলে শুরু হয়। কিন্তু সরকারী বাধার কারণে কার্যক্রম অগ্রণী বালিকা বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়। সেখানেও সরকারের ভয় ভীতির কারণে লেক সার্কাস গার্লস স্কুলে ছায়ানট আশ্রয় নেয়। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ছায়ানট এখানেই ছিল। স্বাধীনতার পর গভঃ ল্যাবরেটরি স্কুলের অধ্যক্ষ ড. নূরুন নাহার ফয়জুন্নেসা তার স্কুলে ছায়ানটকে কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেন। বিষয়টি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী অনুমোদন করেন।
ইংরেজি ১৯৬৪ সাল, বাংলা ১৩৭১ সালের ১লা বৈশাখ রমনার বটমূলে ছায়ানট বাংলা নববর্ষ পালন শুরু করে। কালক্রমে এই নববর্ষ পালন জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়। এছাড়াও ছায়ানট ২৫শে বৈশাখ, ২২শে শ্রাবণ, শারদোৎসব ও বসন্তোৎসব গুরুত্বের সাথে পালন করে। [২]
স্বীকৃতি
সম্পাদনা২০১৫ সালে সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের রবীন্দ্রচর্চার সূতিকাগার ও বিখ্যাত সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ভারত সরকার প্রবর্তিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে।[৩]২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে নয়াদিল্লির প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ড.রামনাথ কোবিন্দ পুরস্কারটি প্রদান করেন ছায়ানটের সভাপতি ড. সনজীদা খাতুনকে। [৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ৮৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
- ↑ মুনতাসীর মামুন, ঢাকা : স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী (২য় খন্ড), পৃ:৬৭, ISBN 984-701-050190-2
- ↑ "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাচ্ছে 'ছায়ানট'"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-১৭।
- ↑ "আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র পুরস্কার পেলো ছায়ানট"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-১৭।