চৌধুরী বাড়ি বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার চাঁদপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত একটি জমিদার বাড়ি। যা মূলত হরিপুর জমিদার বাড়ি। কিন্তু স্থানীয়দের কাছে চৌধুরী বাড়ি নামেই পরিচিত।

চৌধুরী বাড়ি
বিকল্প নামহরিপুর জমিদার বাড়ি
সাধারণ তথ্য
ধরনবাসস্থান
অবস্থানচাঁদপুর সদর উপজেলা
ঠিকানাচান্দ্রা ইউনিয়ন, চাঁদপুর সদর উপজেলা
শহরচাঁদপুর সদর উপজেলা, চাঁদপুর জেলা
দেশবাংলাদেশ
নির্মাণকাজের সমাপ্তিব্রিটিশ শাসনামলে
বন্ধ১৯ শতকের মাঝামাঝি
স্বত্বাধিকারীতনু রাজা চৌধুরী
কারিগরী বিবরণ
উপাদানইট, সুরকি ও রড
তলার সংখ্যা

ইতিহাস সম্পাদনা

এই বাড়িটি জমিদার বাড়ি হলেও এটি সকলের কাছে চৌধুরী বাড়ি হিসেবেই বেশ পরিচিত। এই জমিদার বাড়িটি ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তবে এর সঠিক সময় জানা যায়নি। জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন জমিদার তনু রাজা চৌধুরী। যিনি ব্রিটিশ শাসনামলের ব্রিটিশদের এই দেশ থেকে তাড়াতে সিপাহী বিদ্রোহ আন্দলোন করেন এবং এর প্রথম সারীর নেতা ছিলেন। ব্রিটিশদের ধরপাকড়ের কারণে বর্তমান চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নে আত্মগোপন করেন। তারপর এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং পরবর্তীতে এখানের জমিদারীত্ব লাভ করেন। তিনি মারা যাবার পর এই জমিদার বাড়ির জমিদারীত্ব বংশ পরম্পরায় চলতে থাকে। এই জমিদার বাড়ির জমিদাররা কালে কালে বহু সুনাম অর্জন করেন যা এখনো সাধারণ মানুষের কাছে বিদ্যমান। উল্লেখ্য যে এই জমিদার বংশধররা ছিলেন ইসলাম ধর্মালম্বী। এখনো এই জমিদার বাড়ির বংশধররা আছেন। যারা সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে এই জমিদার বাড়ির জমিদারীত্বে ইতি ঘটে।[১]

জমিদার বাড়ির বংশধর সম্পাদনা

ইতিহাস থেকে এই জমিদার বাড়ির বংশধরদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা যায়। জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা জমিদার তনু রাজা চৌধুরীর ছিলেন এক সন্তানের জনক। যার নাম ছিল আলী আজগর চৌধুরী। আলী আজগর ছিলেন সাত সন্তানের জনক। তারা হলেন মতি রাজা চৌধুরী, উমেদ রাজা চৌধুরী, কামিজ রাজা চৌধুরী, হামিদ রাজা চৌধুরী, মোহাম্মদ রাজা চৌধুরী, প্রেম রাজা চৌধুরী ও গোলাম রাজা চৌধুরী। এছাড়াও আরো কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। যারা সরকারি বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। তারা হলেন মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুল বাসেত চৌধুরী, আমীন মিঞা চৌধুরী, গাজিউল হক চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুর রশিদ চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী ও রুবিনা ইসলাম চৌধুরী। এছাড়া চাঁদপুর স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন হাবিবুল্লাহ চৌধুরী, আলাউদ্দিন চৌধুরী সহ আরো কয়েকজন। চাঁদপুরের ঐতিহাসিক চৌধুরী ঘাট ও চৌধুরী মসজিদ তাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই জমিদার এর চতুর্থ পুরুষ, পঞ্চম পুরুষ রা এখন দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্ম কেন্দ্রিক স্থায়ী হয়েছেন ।

জমিদার বাড়ির অবকাঠামো সম্পাদনা

জমিদার বাড়িটি দ্বিতল বিশিষ্ট ৪ টি মহল এবং একতল বিশিষ্ট কিছু মহল, মোট ৭ টি আলাদা ভবন দিয়ে একটি সীমানায় অবস্থিত। সম্ভবত এটিই চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় জমিদার বাড়ি। বাড়ির পারপাশে প্রায় ১৮ টি দিঘি রয়েছে। পুরো বাড়িজুড়ে নানা জাতের বৃক্ষরাজি। মূল বাড়িতে প্রবেশের আগেই আছে বিশাল দু’টি দিঘী- শাণ বাঁধানো ঘাটলা, স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা, সুদৃশ্য মসজিদ ও ঈদগাহ মায়দান।

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

বর্তমানে জমিদার বাড়িটির পুরাতন মহলগুলোতে কেউ বসবাস না করায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চাঁদপুর শহরের পৌরসভার কাছে “চৌধুরী কলোনি” নামে একটি এলাকা এই পরিবারের সদস্যদের থাকার জন্য আলাদা ভাবে করা হয়েছে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "চৌধুরী বাড়ি - চাঁদপুর জেলা তথ্যবাতায়ন"। ৪ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা