চীন–সুইজারল্যান্ড সম্পর্ক

কুটনৈতিক সম্পর্ক

চীন–সুইজারল্যান্ড সম্পর্ক হল চীন এবং সুইজারল্যান্ড রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ১৯৫০-এর দিকে এ সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।[১]

চীন–সুইজারল্যান্ড সম্পর্ক
মানচিত্র China এবং Switzerland অবস্থান নির্দেশ করছে

চীন

সুইজারল্যান্ড

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯৫০ সালের ১৭ই জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ড এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের (১ অক্টোবর ১৯৪৯ সালে ঘোষিত) মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক যাত্রা শুরু করে।[১]

চীনের সাথে সুইজারল্যান্ডের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ১৮ শতকের শেষদিকে স্থাপিত হয়। ঔপনিবেশিক শক্তি চীনে ছিল এবং সুইস ব্যবসায়ীরা কনস্যুলার নিরাপত্তা, অসম চুক্তি এবং অতিরাষ্ট্রীয় অধিকার বিষয়ক খাত থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়।[২] চীনের বিপ্লবের (বক্সারের বিদ্রোহ এবং জিনহাই বিদ্রোহ) পর বিংশ শতকের প্রথমদিকে চীন-সুইস সম্পর্ক চীনের মূল ভূখণ্ডে জাপানি কর্তৃত্বের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সুইজারল্যান্ড এবং অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ ঔপনিবেশিক বাণিজ্য বন্ধ করে টেক্সটাইল এবং খাদ্য রপ্তানি থেকে ঘড়ি ও যন্ত্রপাতি রপ্তানির দিকে চলে যায়।[২]

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্পাদনা

 
বার্নে অবস্থিত চীনের দূতাবাস। জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘ দপ্তর এবং সুইজারল্যান্ডের অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায়ও চীনের কূটনৈতিক মিশন রয়েছে।

চীন-সুইস অর্থনৈতিক সম্পর্ক ১৯৭০ সালের শেষদিকে ডেং জিয়াওপিংয়ের চীনের অর্থনৈতিক সংস্কার চালু হবার পর থেকেই তরান্বিত হয়েছে।[২] সুইজারল্যান্ডের সাথে চীনের বাণিজ্য চীনের সাথে অন্যান্য শিল্পভিত্তিক দেশের মধ্যকার সম্পর্কের মত ঘাটতিপূর্ণ নয়। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য বার্ষিক ২০-৩০ শতাংশ হারে বেড়ে চলেছে।[৩] ২০০৭ সালে সুইস রপ্তানি মূল্য গিয়ে দাঁড়ায় ৫.৪ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঁতে বা ৫.৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে[৩]

গত যুগে সুইস ফার্ম চীনে যথেষ্ট পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে চীনে প্রায় ৩০০টি সুইস ফার্ম রয়েছে। এ সমস্ত ফার্মের ৭০০'রও বেশি শাখায় প্রায় ৫৫,০০০ কর্মী নিযুক্ত রয়েছে।[২] সুইজারল্যান্ডে চীনা ফার্মের অবস্থান খুব বেশি নয়, তবে তা বাড়ছে, যার মাধ্যমে ইউরোপেও বাণিজ্য সম্প্রসারিত করা সম্ভব।[৩] চীনা ফার্মগুলো শুধুমাত্র টেক্সটাইল ধরনের সাধারণ ভোক্তা দ্রব্যসামগ্রিই রপ্তানি করছে না, বরং রাসায়নিক দ্রব্য, ওষুধ, উচ্চ প্রযুক্তিক অংশ এবং টেলিযোগাযোগের পণ্যও রপ্তানি করছে।[৩]

২০১৩ সালের মে মাসে আলপাইন রাষ্ট্রসমূহে আনুষ্ঠানিক সফরের সময় চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খছিয়াং দুই দেশের মধ্যে ২৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী সুইজারল্যান্ড থেকে চীনে সরাসরি রপ্তানি পণ্যের মূল্য ২২.৮ বিলিয়ন ধরা হয়েছে, যা তখনকার সুইস রাষ্ট্রপতি উয়েলি মারের কর্তৃক "সত্যিকারের মাইলফলক" হিসেবে অভিহিত করা হয়। সুইজারল্যান্ডের সাথে চীনের ধনাত্মক বাণিজ্য মূল্য রয়েছে, এবং দুই দেশই পারস্পরিক নিশ্চয়তা, সম্পদের নিরাপত্তা এবং তাদের বৃহত্তম ব্যাংকসমূহের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আশা করে।[৪] এভাবে সুইজারল্যান্ড মহাদেশের প্রথম ইউরোপীয় রাষ্ট্র এবং বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে চীনের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করে।[৫][৬][৭]

২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম চলাকালীন, সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক এবং পিপলস ব্যাংক অব চায়না সুইজারল্যান্ডে রেনমিনবি ক্লিয়ারিং বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।[৮]

অর্থনৈতিক বন্ধন সম্পাদনা

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Bilateral relations Switzerland–China"। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  2. "Sino-Swiss Economic Relations"। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৬ 
  3. "Two-way trade blossoms with China"। ২ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৬ 
  4. "Swiss free trade deal underscores China's globalisation"। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৬ 
  5. "China seals first free-trade deal with Switzerland"বিবিসি নিউজ 
  6. ">First European country after Iceland"। ৫ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৬ 
  7. "The Sino-Swiss Free Trade Agreement" (পিডিএফ) [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. "Fresh progress in China-Switzerland financial cooperation" (পিডিএফ) 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:চীনের বৈদেশিক সম্পর্ক টেমপ্লেট:সুইজারল্যান্ডের বৈদেশিক সম্পর্ক