চিন রাজ্য
চিন (বর্মী: ချင်းပြည်နယ်, উচ্চারিত: [tɕʰɪ́ɰ̃ pjìnɛ̀]) পশ্চিম মিয়ানমারের একটি রাজ্য। চিন রাজ্যের পূর্বে সাগাইং বিভাগ ও ম্যাগওয়ে বিভাগ। দক্ষিণে রাখাইন রাজ্য, দক্ষিণ পশ্চিমে বাংলাদেশ পশ্চিম ও উত্তরে যথাক্রমে ভারতের মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য অবস্থিত। পর্বত আচ্ছাদিত হওয়ার কারণে রাজ্যটির যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই অনুন্নত। চিন মায়ানমারের সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্য গুলোর মধ্যে অন্যতম। চিনের দরিদ্রতার হার ৭৩% । চিনের রেডিও ফালাম উপভাষা ব্যবহার করা হয়। চিনে প্রায় ৫৩ ধরনের ভাষাভাষী উপজাতি রয়েছে।
চিন রাজ্য Chin State ချင်းပြည်နယ် | |
---|---|
State | |
Myanma প্রতিলিপি | |
• Burmese | hkyang: pranynai |
![]() Location of Chin state, Myanmar | |
স্থানাঙ্ক: ২২°০′ উত্তর ৯৩°৩০′ পূর্ব / ২২.০০০° উত্তর ৯৩.৫০০° পূর্ব | |
Country | ![]() |
অঞ্চল | পশ্চিম মিয়ানমার |
রাজধানী | হাখা |
সরকার | |
• মুখ্যমন্থী | Salai Lian Luai (NLD) |
• মন্ত্রিসভা | Chin State Government |
• Legislature | Chin State Hluttaw |
• বিচারবিভাগ | চিন রাজ্য হাইকোর্ট |
আয়তন[১] | |
• মোট | ৩৬,০১৮.৮ বর্গকিমি (১৩,৯০৬.৯ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | 9th |
জনসংখ্যা (২০১৪)[২] | |
• মোট | ৪,৭৮,৮০১ |
• ক্রম | 14th |
• জনঘনত্ব | ১৩/বর্গকিমি (৩৪/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | Chinian |
Demographics | |
• Ethnicities | চিন |
• ধর্ম | খ্রীস্টান ৮৫.৪% বৌদ্ধ ১৩% উপজাতীয় ০.৪% অন্যান্য ১.১% ইসলাম ০.১% |
সময় অঞ্চল | MST (ইউটিসি+06:30) |
HDI (2015) | 0.৫৫৬[৩] medium · 7th |
ইতিহাস সম্পাদনা
১২০০ সালের দিকে চিন জাতিগোষ্ঠির লোকজন বর্তমানে চীন থেকে চিন পর্বতে বসবাস শুরু করে। তখন থেকেই চিন বিভিন্ন স্থানীয় উপজাতি প্রধানদের দ্বারা শাসিত হয়ে আসছিল। কিছু ঐতিহাসিক (আর্থার প্রেইরি ও তুন নায়েন) ভুল বশত পাট্টেকায়াকে পূর্ব বাংলার অংশ হিসেবে মনে করে ছিলেন এবং তারা এও মনে করতেন যে, পুরো চিন পর্বত প্যাগান সাম্রাজ্যের অধীনস্থ ছিল। বিভিন্ন মতামত অনুযায়ী চিন পর্বত দশম শতাব্দি থেকে মানব বসতির প্রমাণ পাওয়া যায়। লোক কাহীনি অনুযায়ী ব্রিটিশরা আগমনের আগ পর্যন্ত এই অঞ্চলে কোন সামরিক অভিযান ঘটেনি।
সামন্ততান্ত্রিক যুগ সম্পাদনা
১২৮৭ সালে প্যাগান রাজ্যের পতনের শানরা প্রথম উত্তর পূর্ব বার্মা থেকে কালে কাকউ উপত্যকা জয় করতে এসেছিল। ক্ষুদ্র রাজ্যটি তুলনামূলক ভাবে বড় শান মোহনিয়েন সাম্রাজ্যকে কর প্রদান করত। যা ১৩৭০ সালের দিকে বার্মিজ আভা সাম্রাজ্যের করদ রাজ্য হিসেবে অন্তর্গত হয়েছিল। নিনরা ঐতিহ্নগত ভাবে স্বায়ত্বশাসিত ছিল এবং আগ্রামী বার্মা থেকে অনেক দূরে ছিল।
ঔপনিবেশিক যুগ সম্পাদনা
১৮৮৫ সালে তৃতীয় অ্যাংলো-বার্মিজ যুদ্ধের পর নিন পর্বত অধিকার করে। ১৮৯৬ সালে মাই খাম থুয়ানটককে গ্রেপ্তারের পর চিনরা পর্বত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু করে। নিন পর্বত পরবর্তীতে আরাকান বিভাগের অন্তভ’ক্ত হয়। ১৮৯০ সালের দিকে আমেরিকার খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারকারীরা প্রথম এইখানে আসতে শুরু করে। এবং নানা উপকৌঠন ও প্রলোভনের মাধ্যমে উপজাতীয় লোকজনকে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করে। বিংশ শতাব্দির মধ্যেই চিনারা খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয। ১৯৪৩ সালের দিকে জাপানের সেনাবাহীনি এই অঞ্চলে প্রবেশ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে একটি ভবিষৎ স্বাধীন বার্মা ইউনিয়নের রুপরেখা প্রণয়ন করতে চিনারা বোমমোয়াহো থুয়াহটকের নেতৃত্বে বার্মিজ, শান, কাচিনদের সাথে পেংলং স¤েœলনে অংশগ্রহণ করে। চিনা নেতারা শান ও কাচিন নেতাদের মত পূর্ন রাজ্যের দাবি (বিছিন্ন থার) তোলেনি। শুধু মাত্র একটি বিভাগের দাবী করে। ফলশ্রুতিতে ১৯৪৭ সালে বার্মার সংবিধান প্রনীত হয়। যদিও কারেনরা সংকলনে উপস্থিত না থেকেও রাজ্যের অধিকার পায়।
বার্মিজ যুগ সম্পাদনা
১৯৪৮ সালে বার্মার স্বাধীনতার পর চিন বিভাগ সৃষ্টি করা হয়। ১৯৭৪ সালের ৪ঠা জানুয়ারী চিন রাজ্য সৃষ্টি করা হয়। চিনাদের জাতীয় ২০ শে ফেব্রুয়ারি। বর্তমানে রাজ্যটিতে জুমি ও লাইমির জাতিগোষ্টীর মধ্যে ব্যাপক দ্বন্ধ চলছে।
প্রশাসনিক বিভাগ সম্পাদনা
চিনে চারটি জেলা রয়েছে। জেলা গুলোর অধীনে বেশ কয়েকটি টাউনশিপ রয়েছে। ১. ফালাম জেলা ২. হাখা জেলা ৩. মাতুপি জেলা ৪. মিনদাত জেলা
জনসংখ্যা সম্পাদনা
বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯৭৩ | ৩,২৩,২৯৫ | — |
১৯৮৩ | ৩,৬৮,৯৪৯ | +১৪.১% |
২০১৪ | ৪,৭৮,৮০১ | +২৯.৮% |
উৎস: 2014 Myanmar Census[২] |
নিন পর্বত বহুল এলাকা হওয়ায় এর জনসংখ্যা খুবই কম। প্রায় ৫ লক্ষের মত। চিনের মোট উপভাষা ৮৫% তিব্বত বার্মা ভাষা পরিবারের সদস্য ১৯৯০ সালের শুরুতে বিশাল সংখ্যক সেনাবাহীনি এই অঞ্চলটিতে প্রবেশ করে। ধারণা করা হয়, ১ লক্ষ লোক প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। বিপুল সংখ্যক লোক প্রতিবেশী রাজ্য গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এবং বিপুল সংখ্যক লোক বৈধ, অবৈধভাবে আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়ায় কাজ করছে।
ধর্ম সম্পাদনা
Religion in Chin (2014)[৪]
বেশীরভাগ লোকজনই খ্রিষ্টান তবে স্বল্প পরিমানে বৌদ্ধ ধর্মের লোক রয়েছে।
শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পাদনা
AY ২০০২-২০০৩ | primary | Middle | High |
---|---|---|---|
স্কুল | ১০৫৮ | ৮৩ | ২৫ |
শিক্ষক | ২৭০৮ | ৮১৮ | ৩৩৩ |
শিক্ষার্থী | ৬৬০০০ | ৩০৬০০ | ৯৯০০ |
২০০৩ সালের অফিসিয়াল হিসাব মতে, চিনে ২৩ টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। এবং কোন ধর্ম নিরপেক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় নেই। সবগুলোই মিশনারীর অধীনে পরিচালিত। উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য বেশিরভাগ সময়ই ছাত্রদের প্রতিবেশী রাজ্যে যেতে হয়।
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "Union of Myanmar"। City Population। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০।
- ↑ ক খ Census Report। The 2014 Myanmar Population and Housing Census। 2। Naypyitaw: Ministry of Immigration and Population। মে ২০১৫। পৃষ্ঠা 17।
- ↑ "Sub-national HDI - Area Database - Global Data Lab"। hdi.globaldatalab.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৩।
- ↑ Department of Population Ministry of Labour, Immigration and Population MYANMAR (জুলাই ২০১৬)। The 2014 Myanmar Population and Housing Census Census Report Volume 2-C। Department of Population Ministry of Labour, Immigration and Population MYANMAR। পৃষ্ঠা 12–15।