গ্রেগ ক্যাম্পবেল

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

গ্রিগরি ডেল ক্যাম্পবেল (ইংরেজি: Greg Campbell; জন্ম: ১০ মার্চ, ১৯৬৪) তাসমানিয়ার লঞ্চেস্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ও সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে তাসমানিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন গ্রেগ ক্যাম্পবেল

গ্রেগ ক্যাম্পবেল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগ্রিগরি ডেল ক্যাম্পবেল
জন্ম (1964-03-10) ১০ মার্চ ১৯৬৪ (বয়স ৬০)
লঞ্চেস্টন, তাসমানিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কভাগ্নে: রিকি পন্টিং
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৪৭)
৮ জুন ১৯৮৯ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৫ মার্চ ১৯৯০ বনাম নিউজিল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১০৬)
২৬ ডিসেম্বর ১৯৮৯ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই৩০ এপ্রিল ১৯৯০ বনাম বাংলাদেশ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ১২
রানের সংখ্যা ১০
ব্যাটিং গড় ২.৫০ ৩.০০
১০০/৫০ -/- -/-
সর্বোচ্চ রান ৪*
বল করেছে ৯৫১ ৬১৩
উইকেট ১৩ ১৮
বোলিং গড় ৩৮.৬৯ ২২.৪৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৩/৭৯ ৩/১৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৭ জুলাই ২০১৯

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৮৬-৮৭ মৌসুম থেকে ১৯৯১-৯২ মৌসুম পর্যন্ত গ্রেগ ক্যাম্পবেলের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতায় তাসমানিয়ার সদস্যরূপে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় গ্রেগ ক্যাম্পবেলের। ঐ মৌসুমে একটি খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেলেও পরের মৌসুমে তাও মেলেনি। তাসত্ত্বেও, ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে ৩৬ উইকেট নিয়ে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষমতা দেখান। ফলশ্রুতিতে, ১৯৮৯ সালে অ্যাশেজ সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড গমনে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়।

১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ড সফর শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন করে ১২টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় তাসমানিয়া দলের সদস্যরূপে অংশ নেন। পূর্বেকার ঘরোয়া মৌসুমের তুলনায় এ মৌসুমে বেশ আগুয়ান ছিলেন ও ৩৬ উইকেট দখল করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন গ্রেগ ক্যাম্পবেল। ৮ জুন, ১৯৮৯ তারিখে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৫ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ড গমন করেন। অন্যান্য বোলারের আঘাতপ্রাপ্তি তাকে সুযোগ এনে দেয়। কার্ল রেকেম্যানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে হেডিংলি স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে অভিষেক ঘটে তার। তবে খেলায় তিনি ১২৪ রান খরচায় মাত্র এক উইকেট পাওয়ায় সিরিজের বাদ-বাকী টেস্টে অংশগ্রহণ করা থেকে তাকে নিবৃত করা হয়। এ সফরের অন্যান্য খেলায় অংশ নিয়ে ২৭ গড়ে ৩০ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি।[১][২]

দেশে ফিরে ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে আরও একটি চমৎকার সময় পার করেন। ৩৫ উইকেট পান তিনি। ফলশ্রুতিতে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলেন। ঐ খেলাগুলোয় ৩১.৫৮ গড়ে ১২ উইকেট পান। তন্মধ্যে, বেলেরিভ ওভালে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলায় ১৪৩ রান খরচায় পাঁচ উইকেট পান। পাশাপাশি, নিজ শহর অ্যাডিলেড ওভালে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা ৩/৭৯ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। তবে, ব্যাটিংয়ে খুব কম ভূমিকা রাখেন।[১][৩]

এছাড়াও, ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ওডিআই দলের সদস্য হন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ত্রি-দেশীয় ওডিআই প্রতিযোগিতার প্রথম খেলায় অংশ নেন।

অভিষেক খেলাটিতে ০/৩৬ পান। পরের খেলায় আরও রান দেন। ৫৪ রান খরচ করায় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। শেষ দুই খেলায় আবারও তাকে দলে ভেড়ানো হয়। অ্যাডিলেড ওভালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩/৩১ ও সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ২/৪৬ পান। ফলে সিরিজের চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান তিনি। চূড়ান্ত খেলাগুলোয় ৩/৩৯ ও ১/২১ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ২-০ ব্যবধানে শিরোপা বিজয়ে সহায়তা করেন। এরফলে ওডিআই দলে নিয়মিতভাবে খেলার যোগ্যতা লাভ করেন। পরবর্তীতে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় গ্রুপ পর্বের সকল খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ক্রাইস্টচার্চের জ্যাড স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ৩/১৭ লাভ করেন। এরপর, অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে ৩/৩৭ নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে আরও একটি জয়ে সহায়তা করেন।[৪]

অবসর সম্পাদনা

গ্রেগ ক্যাম্পবেলের খেলোয়াড়ী জীবনের উত্থান বেশ দর্শনীয় ছিল। তবে, সংক্ষিপ্ত খেলোয়াড়ী জীবনে আঘাত নিত্যসঙ্গী ছিল। তবে, হাঁটু ও কব্জির আঘাতের কারণে ১৯৮৯ সালের পর দুই মৌসুম ক্রিকেট খেলার জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। গুরুতর পিঠের আঘাতে তাসমানিয়া কর্তৃপক্ষ চুক্তি বাতিল করে। এরপর কুইন্সল্যান্ডে চলে যান। কিন্তু, ঐ দলে স্থান লাভে সক্ষম হননি।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর পাপুয়া নিউগিনিতে চলে যান। ক্রিকেট পিএনজি’র প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন। সাবেক ও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক রিকি পন্টিং সম্পর্কে তার বোনপো।[১][৫] ক্যাম্পবেলের বোন লরেইনের সাথে গ্রেইম পন্টিংয়ের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ও তাদেরই প্রথম সন্তান রিকি পন্টিং।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Cashman, Richard (১৯৯৭)। The A-Z of Australian Cricketers। Melbourne: Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-550604-9 
  2. "Greg Campbell"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৭ 
  3. "Statsguru – GD Campbell – Tests – Innings by innings list"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Statsguru – GD Campbell – ODIs – Innings by innings list"Cricinfo। ২০১৯-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৮ 
  5. "A flashing blade"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৮ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা