গোবিন্দচন্দ্র দত্ত
গোবিন্দচন্দ্র দত্ত (২৮ জানুয়ারি ১৮২৮ - ১১ এপ্রিল ১৮৮৪) ছিলেন ঊনিশ শতকের একজন ইংরাজী ভাষার কবি ও ভাষাবিদ। সুপ্রসিদ্ধ ইংরেজী মহিলা কবি তরু দত্ত ছিলেন তার কন্যা।
গোবিন্দচন্দ্র দত্ত | |
---|---|
জন্ম | কলকাতা ব্রিটিশ ভারত | ২৮ জানুয়ারি ১৮২৮
মৃত্যু | ১১ এপ্রিল ১৮৮৪ | (বয়স ৫৬)
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | দত্ত ফ্যামিলি অ্যালবাম |
দাম্পত্যসঙ্গী | ক্ষেত্রমণি (মিত্র) দত্ত |
সন্তান | অব্জু দত্ত (পুত্র) অরু দত্ত (কন্যা) তরু দত্ত (কন্যা) |
জীবনী
সম্পাদনাগোবিন্দচন্দ্র দত্তের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের কলকাতার রামবাগানের দত্ত পরিবারে। পিতা রসময় দত্ত ছিলেন সেকালের ছোট আদালতের বিচারপতি। [১] রসময় দত্তের পাঁচ পুত্র সন্তানের মধ্যে গোবিন্দচন্দ্র ছিলেন তৃতীয়। তার পড়াশোনা হিন্দু কলেজে এবং সতীর্থরা ছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, গৌরদাস বসাক,ভোলানাথ চন্দ্র প্রমুখেরা।
কর্মজীবনে গোবিন্দচন্দ্র প্রথমে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হন এবং পরে ব্রিটিশ সরকারের রাজস্ব বিভাগে যোগ দেন। কাজে সুখ্যাতির জন্য তিনি রাজস্ব সচিব জেমস্ উইলসন এবং স্যার রিচার্ড টেম্পলের প্রিয় পাত্র ছিলেন। কিন্তু তাকে অতিক্রম করে দুজন ইংরেজ কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়ায় গোবিন্দচন্দ্র পদত্যাগ করেন। । [১]
গোবিন্দচন্দ্র অত্যন্ত সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। ইংরাজী কবিতা রচনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তার কন্যারাও ছিলেন প্রতিষ্ঠিত কবি। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে পরিবারের সকলের রচিত ২০০ টি কবিতার সংকলন দত্ত ফ্যামিলি অ্যালবাম সম্পাদনা করেন তিনি। সংকলন গ্রন্থে তার রচিত কবিতার সংখ্যা ৬৬ টি।[২]
বাংলা সাহিত্যের প্রতিও তার বিশেষ অনুরাগ ছিল। তিনিই অধ্যাপক কাউয়েলকে কবিকঙ্কন মুকুন্দরামের প্রতিভার সঙ্গে সর্বপ্রথম পরিচয় করান। অধ্যাপক কাউয়েলকে কবিকঙ্কনের চণ্ডী অনুবাদে সহায়তা করেন। গোবিন্দচন্দ্রের কিছু সারগর্ভ রচনা কলকাতা রিভিউ ত্রৈমাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তার রচনা সম্পর্কে তৎকালীন সম্পাদক রেভারেণ্ড জর্জ স্মিথ মন্তব্য করেন
I have always regarded him as the finest English scholar amongst the Natives of Bengal and consequently of India
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাগোবিন্দচন্দ্র বিবাহ করেন ক্ষেত্রমণি মিত্রকে। তাদের এক পুত্র অব্জু ও দুই কন্যা (অরু দত্ত ও তরু দত্ত) সকলেই স্বল্পায়ু ছিলেন। অরু ও তরু দু’বোনের মধ্যে কবি-কথাশিল্পী হিসেবে খ্যাতি ছিল তরুর। ডেভিড হেয়ার, আলেকজান্ডার ডাফ, উইলিয়াম কেরি প্রমুখ তৎকালীন খ্রিস্টধর্মের পৃষ্ঠপোষকদের সংস্পর্শে এসে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে গোবিন্দচন্দ্র সপরিবারে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। একমাত্র পুত্র অব্জুর মৃত্যুর পর তিনি ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে সপরিবারে ফ্রান্সে যান। কন্যাদের পড়াশোনা দক্ষিণ ফ্রান্সের এক আবাসিক স্কুলে। এরপর ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে যান কেমব্রিজে। তার দুই কন্যাই ফরাসী ও ইংরাজী ভাষায় বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করে। ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে আসেন। কিন্তু ১৮৭৪ এবং ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে যথাক্রমে অরু ও তরুর অকাল মৃত্যুর পর গোবিন্দচন্দ্র সস্ত্রীক কলকাতার বাস উঠিয়ে পাকাপাকিভাবে বিদেশে চলে যান। [৩]
জীবনাবসান
সম্পাদনাগোবিন্দচন্দ্র দত্ত ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ এপ্রিল প্রয়াত হন। তাকে মানিকতলার খ্রিস্টান কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "Manishi Bholanath Chandra মণীষী ভোলানাথ চন্দ্র:"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-১৭।
- ↑ "Writer:Govin Chader Dutt"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১৭।
- ↑ "'বাংলার কিটস': বিস্মৃতপ্রায় তরু দত্ত"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১৭।