গীতিকা জাখর
গীতিকা জাখর (জন্ম ১৮ই আগস্ট ১৯৮৫) হলেন একজন ভারতীয় কুস্তিগির। গীতিকা এক ক্রীড়াবিদ পরিবার থেকেই এসেছেন। তিনি অর্জুন পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৬ সালে। ভারতীয় ক্রীড়ার ইতিহাসে তিনিই একমাত্র মহিলা কুস্তিগির যাঁকে ২০০৫ সালের কমনওয়েলথ গেমসের সেরা কুস্তিগির হিসাবে বিচার করা হয়েছিল। তিনি ২০০৬ এবং ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে পদক জিতেছেন। গীতিকা হলেন প্রথম মহিলা কুস্তিগির যিনি ২০০৬ সালে ভারত সরকার কর্তৃক অর্জুন পুরস্কারে ভূষিত হন। হরিয়ানা সরকার তাঁকে ভীম পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করেছিল। ক্রীড়া ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য, হরিয়ানা সরকার তাঁকে ২০০৮ সালে ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ পদে নিযুক্ত করেছে।[১০]
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জাতীয়তা | ভারতীয় | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | আগরোহা, হরিয়ানা, ভারত[১] | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১৫৯ সেমি[২] | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওজন | ৬৩ কেজি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ক্রীড়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
দেশ | ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ক্রীড়া | ফ্রিস্টাইল কুস্তি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বিভাগ | ৬৩ কেজি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পদকের তথ্য
|
ব্যক্তিগত জীবন এবং পরিবার
সম্পাদনাগীতিকার বাবা সত্যবীর সিং জাখর হরিয়ানার হিসারে ক্রীড়া আধিকারিক ছিলেন। গীতিকার পিতামহ সিএইচ. অমর চাঁদ জাখর নিজে একজন দক্ষ কুস্তিগির ছিলেন। তাঁকে দেখেই গীতিকা এই খেলার প্রতি অনুপ্রাণিত হন। তিনি ১৩ বছর বয়সে কুস্তি শুরু করেছিলেন, এবং ২০০০ সালে নতুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত একটি লড়াইতে ভারত কেশরি সোনিকা কালীরামনকে (প্রখ্যাত কুস্তিগির চান্দগি রামের কন্যা) পরাজিত করে ১৫ বছর বয়সে ভারত কেশরি খেতাব পান। তারপর থেকে তিনি টানা ৯ বছর ভারত কেশরী খেতাব জিতেছিলেন। তিনি শ্রী কমলদীপ সিং রানার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যিনি একজন নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে হরিয়ানা পাবলিক ওয়ার্ক বিভাগে কর্মরত।[১১]
প্রাথমিক ক্রীড়াজীবন
সম্পাদনাগীতিকা বিদ্যালয় স্তরে খেলাধুলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছিলেন এবং তাঁর মনোযোগ ছিল অ্যাথলেটিক্সের দিকে। কিন্তু যখন তাঁর পরিবার তাঁর ছোট ভাইকে এবং তাঁকে উন্নত শিক্ষা প্রদানের জন্য তাঁদের গ্রাম আগরোহা থেকে হিসারে চলে আসেন, তখন তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনে একটি মোড় আসে। প্রতিযোগিতামূলকভাবে অ্যাথলেটিক্স শুরু করার প্রয়াসে, তাঁর বাবা তাঁকে হিসারের মহাবীর স্টেডিয়ামে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কোনো প্রশিক্ষক না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। এই সময় তিনি কাছাকাছি একটি কুস্তির আখড়ায় গিয়ে দেখেছিলেন প্রশিক্ষকরা তাঁদের শিক্ষার্থীদের বাইরে থেকে জোরে জোরে উপদেশ দিচ্ছেন। তরুণ গীতিকা কুস্তি অনুশীলনকারী অন্যান্য মেয়েদের দেখে অবিলম্বে এই খেলাকে ভালোবাসতে শুরু করেন এবং ১৯৯৮ সালের অক্টোবর থেকে, অ্যাথলেটিক্স ছেড়ে কুস্তি খেলাকে নিজের খেলা হিসাবে বেছে নেন। কুস্তি শুরু করার চার মাস পরে তিনি মণিপুরে ১৯৯৯ সালের জাতীয় গেমসে হরিয়ানার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এবং চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন।
তিনি ২০০১ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের সমস্ত বিভাগ: সাব-জুনিয়র, জুনিয়র এবং সিনিয়রে স্বর্ণপদক জিতে সর্বকনিষ্ঠ কুস্তিগির হয়েছিলেন। এটি একটি প্রশংসনীয় রেকর্ড যা এখনও ভাঙা যায়নি। এর মাধ্যমে তিনি নিজের গোল্ডেন কোয়ার্টেট সম্পন্ন করেছিলেন।
১৯৯৯
সম্পাদনা- ১৩ বছর বয়সে ইম্ফল (মনিপুর) জাতীয় গেমসে সর্বকনিষ্ঠ কুস্তিগির হিসেবে ৫৬ কেজি বিভাগে মহিলা ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে অংশগ্রহণ করেন এবং চতুর্থ স্থান লাভ করেন।
- ভিওয়ানিতে অনুষ্ঠিত হরিয়ানা স্টেট গেমসে স্বর্ণপদক; হরিয়ানার সেরা মহিলা কুস্তিগির আখ্যা প্রাপ্তি।
২০০০
সম্পাদনা- সাব-জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক, তালকাটোরা স্টেডিয়াম, নতুন দিল্লি।
২০০১
সম্পাদনা- সাব-জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক।
- জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক।
- সিনিয়র ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক, হরিয়ানার নেদানি।
- জাতীয় গেমসে স্বর্ণপদক, লুধিয়ানা, পাঞ্জাব
গোল্ডেন কোয়ার্টেট সম্পূর্ণ করেন, একমাত্র কুস্তিগির হিসেবে।
আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় জীবন
সম্পাদনাতাঁর আন্তর্জাতিক জীবন শুরু হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে, ২০০২ সালের বিশ্ব কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম উপস্থিতির মাধ্যমে।
২০০২
সম্পাদনা- বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, এখানে অংশগ্রহণ করে তিনি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিলেন।
- অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদের জাতীয় গেমসে স্বর্ণপদক
- সিনিয়র ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক।
২০০৩
সম্পাদনা- বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, গ্রীসের এথেন্সে, অংশগ্রহণ করে যেখানে তিনি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিলেন।
- সিনিয়র এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক, ভারতের নতুন দিল্লিতে।
- কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক; লন্ডন কানাডা।
২০০৫
সম্পাদনা- সিনিয়র এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক, চীন।
- কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক; টুর্নামেন্টের সেরা কুস্তিগির ঘোষিত, প্রথম ভারতীয় মহিলা কুস্তিগির যিনি "কমনওয়েলথ গেমসের সেরা কুস্তিগির" খেতাব পান।
- লিথুয়ানিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক।
২০০৬
সম্পাদনা- কাতারের দোহায় এশিয়ান গেমসে রৌপ্য পদক, এশিয়ান গেমসে কুস্তিতে সবচেয়ে বড় পদক এবং ভারতীয় মহিলা কুস্তিগিরের প্রথম পদক।
২০০৭
সম্পাদনা- কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক, অন্টারিও, কানাডা।
- সিনিয়র ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক।
- জাতীয় গেমসে স্বর্ণপদক, গুয়াহাটি, আসাম
- সিনিয়র এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশকেক, কিরগিজস্তানে অংশগ্রহণ[১২]
২০১২
সম্পাদনা- সিনিয়র ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক।
২০১৩
সম্পাদনা- সিনিয়র এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক, নতুন দিল্লি, ভারত
২০১৪
সম্পাদনা- কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য পদক, গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড।[১৩]
- এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক, ইনচিওন, দক্ষিণ কোরিয়া[১৪]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- ভীম পুরস্কার, ২০০৩ - ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের অসামান্য ক্রীড়াবিদদের দেওয়া হয়
- অর্জুন পুরস্কার - ২০০৬
- অসামান্য মহিলাদের জন্য কল্পনা চাওলা শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কার, ২০০৯।
- হরিয়ানায় বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রচারণার মুখ।
- হরিয়ানার হিসারে ডিজিটাল ক্যাশলেস সপ্তাহের (২০-২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭) ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর৷
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "GEETIKA JAKHAR - BIOGRAPHY"। Commonwealth Games Federation। ৪ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৬।
- ↑ "Jakhar, Geetika (IND)"। Institut für Angewandte Trainingswissenschaft (IAT)। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৬।
- ↑ "2003 Commonwealth Wrestling Championships - London, Ontario, Canada ARTICLES & RESULTS"। Commonwealth Amateur Wrestling Association (CAWA)। ২৩ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Indian grapplers sweep gold in Commonwealth Championship"। Zee News। ২ জুলাই ২০০৫। ২৭ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "2007 - Commonwealth Wrestling Championships - Information & RESULTS"। Commonwealth Amateur Wrestling Association (CAWA)। ২৩ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Haryana Police inspector bags gold in World Police Games"। Business Standard। Asian News International (ANI)। ২১ আগস্ট ২০১৯। ১৭ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Haryana grapplers strike gold in SA"। The Tribune। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "India wins four medals"। The Hindu। ২০০৪-০৬-২৩। ১০ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Indian wrestlers win 10 medals"। The Hindu। ২০০৫-০৬-১৩। ১০ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ Geetika Jakhar ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০১৬ তারিখে. glasgow2014.com
- ↑ "MEDAL WINNERS FROM INDIA - YoungBites"। www.youngbites.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-০৫।
- ↑ "International Wrestling Database"। www.iat.uni-leipzig.de। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০২।
- ↑ "Glasgow 2014 - Geetika Jakhar Profile"। g2014results.thecgf.com। ২০১৬-০৬-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০২।
- ↑ "Sports Information"। incheon2014ag.org (via Wayback Machine)। Olympic Council of Asia। ৪ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- প্রোফাইল (UWW দ্বারা প্রদত্ত)
- গীতিকা জাখরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ
- গীতিকা জাখরের অফিসিয়াল FILA পৃষ্ঠা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ জুলাই ২০১৫ তারিখে