গরখীয়া দৌল বা গরখীয়া দোল, যোরহাট শহরের উত্তরে প্ৰায় পাঁচ কিলোমিটার ভিতরে বালিগাঁওয়ে অবস্থিত একটি প্ৰাচীন দেবালয়৷ অসম বুরঞ্জীতে এর উল্লেখ নেই যদিও এই দৌল জাগ্ৰত বলে জনবিশ্বাস আছে৷ গরখীয়া দৌলের নামঘর ও মণিকূট থাকাটি উল্লেখযোগ্য।[১] এখানে থাকা উঁই-হাফলুর দৌলটি চোদ্দ-পনেরো ফুট উঁচু।

গরখীয়া দৌল
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাযোরহাট জেলা
অবস্থান
অবস্থানবালিগাঁও
দেশভারত

ইতিহাস সম্পাদনা

কাহিনী অনুসরে, অতীতে এই স্থানে একটি গরু চরানো বড়োসড়ো জায়গা ছিল৷ প্ৰতিদিন স্থানীয় গোরক্ষকরা গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে সেখানে গরু চরাত৷ সেখানে একজন প্রধান গোরক্ষক নিত্য বালির দৌল সেজে ফরিং বলি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল৷ দৈনিক একজন গোরক্ষকের ফরিং ধরে আনার পাল ছিল এবং দৌলের আগত বিরিণার পাতে সেই ফরিং বলি দিয়ে গোরক্ষকরা নিত্য পূজা সমাপন করে ঘুরে যেত। একদিন পালা পড়া একজন গোরক্ষক রাখাল ফরিং ধরে আনেনি; আর বলি দেওয়ার সময় হাওয়ায় গোরক্ষক বলে, সে ফরিং আনতে পারেনি, সেজন্য দৌলের সামনে তাকেই বলি দেওয়া হোক৷ তারপর ফরিং বলি দেয়ার মতোই বিরিণা পাতে একজন রাখাল তার ডিঙিটিতে রেপ দেয়৷ প্রচলিত কাহিনি হল যে, বিরিণা পাতের ঘঁহনি খেয়ে রাখালটির ডিঙিটি দুটুকরো হয়ে যায়৷ তখন সকল গোগোরক্ষক রাখাল চিৎকার করে গাঁয়ের মানুষকে জানায়৷ গাঁয়ের মানুষ এমন অলৌকিক কাণ্ড দেখে এই স্থানে দেবতা আছে বলে সেই বালির দৌল ও বলি দেয়া স্থান তখনই বেড়া দিয়ে বেঁধে ফেলে৷ পরদিন সবাই দেখে যে সেই জায়গায় বালির দৌলের স্থানে উঁইহাফলুর মত একটা দৌল হয়ে আছে৷ দিনে দিনে সেই দৌল বাড়তে দেখে গাঁয়ের মানুষেরা সেখানে একটা শিবমূৰ্তি প্ৰতিষ্ঠা করে একটা মন্দির নিৰ্মাণ কররে৷

প্ৰবাদমতে, শিবসিংহ রাজার আমলে প্ৰথম এখানে বলি দেয়া হয়েছিল।

পূজা-অৰ্চনা সম্পাদনা

প্ৰতি বছর এই দৌলে শিবরাত্ৰিতে অষ্টপ্ৰহরব্যাপী শিবপূজা হয়। হাফলুটিততে উঁই থাকার চিহ্ন নেই কিন্তু সেখানে এযোর ফটীসাপ মাঝে মাঝে উঠতে দেখা যায়।[১] মানুষ দৌলের মাহাত্ম্যে বিশ্বাস করে রোগ-ব্যাধিতে দুখে-আপদে দৌলে এসে মানত করে।

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

  • বিশ্ব ঐতিহ্য, শান্তনু কৌশিক বরুয়া

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সম্পাদক- ড: মহেশ্বর নেওগ (২০০৪)। পবিত্ৰ অসম। গুয়াহাটী: লয়ার্স বুক ষ্টল। পৃষ্ঠা ৬৬–৬৭। 

শ্ৰেণী:অসমৰ ধৰ্মীয় স্থান


টেমপ্লেট:যোরহাট জেলা