খরগোশ

তৃণভোজী ও স্তন্যপায়ী প্রাণী

খরগোশ হচ্ছে ল্যাগোমর্ফা (Lagomorpha) বর্গের লেপোরিডি (Leporidae) পরিবারের একটা তৃণভোজী প্রাণী। এদের দুটো ভাগ আছে- বুনো খরগোশ এবং খরগোশ । আমরা অনেকেই প্রায়শই এই দুই দলকে এক করে ফেলি। খরগোশদের দেহের গঠন অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের হয়। কান বুনো খরগোশ’দের তুলনায় ছোট ছোট। এরা গাছপালা, ঝোপঝাড় এলাকায় মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বসবাস করে। জন্মের সময় খরগোশ শাবক’দের দেহে কোনরকম পশম থাকে না এবং চোখ বন্ধ অবস্থায় থাকে। অন্যদিকে বুনো খরগোশ’দের দেহ বড় আকারের হয়, কান বেশ লম্বা। জন্মের সময় থেকেই এদের গা ভরতি পশম থাকে। চোখ খোলা অবস্থাতেই বুনো খরগোশ শাবকের জন্ম হয়। বাসস্থান নির্বাচনেও এদের খরগোশ’দের সাথে পার্থক্য আছে। আমাদের দেশে অনেক মানুষ বাড়িতে খরগোশ পালন করে থাকে।[]

খরগোশ
ইউরোপীয় খরগোশ
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: স্তন্যপায়ী প্রাণী
বর্গ: ল্যাগোমর্ফা
পরিবার: লেপোরিডি
অন্তর্ভুক্ত শ্রেণীসমূহ
  • বুনো খরগোশদের সবাই লেপাস শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
  • খরগোশ’দের দশটা শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে- ব্র্যাকিলাগাস, বুনোলাগাস, ক্যাপ্রোলাগাস, নেসোলাগাস, অরিক্টোলাগাস, পেন্টালাগাস, পোয়েলাগাস, প্রোনোলাগাস, রোমেরোলগাস এবং সিলভিলাগাস।[]

আবাসস্থল

সম্পাদনা

শশক প্রায় সবাই তৃণভূমি এলাকায় বসবাস করে থাকে। তীব্র ঠাণ্ডা এলাকা থেকে অতি উষ্ণ এলাকা পর্যন্ত সর্বত্রই এদের বিস্তৃতি রয়েছে। অবশ্য কেবল মাত্র কুমেরু অঞ্চলে এদের দেখা যায় না। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং আরও কয়েকটি দেশে এরা স্থানীয় বাসিন্দা নয়। মানুষের মাধ্যমে যে দেশে এদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং সেখানে এরা ক্ষতিকর প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। পূর্ব গোলার্ধে এদের প্রজাতি সংখ্যা ২৮, পশ্চিম গোলার্ধে ২৪।

বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা

খরগোশদের লেজ খাটো, কান লম্বা এবং পিছনের পা লম্বাটে। এরা সামাজিক প্রাণী। অবশ্য "লেপাস" (Lepus) গণের খরগোশ অতটা সামাজিক নয়। শিয়াল, বন বিড়াল, কুকুর, বেজি এদের শত্রু।

তাপমাত্রা

সম্পাদনা

এরা ৩৪° সেলসিয়াস বা ৯৪° ফারেনহাইটের বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না।

বাণিজ্যিকভাবে পালন

সম্পাদনা

খরগোশ ও বুনো খরগোশ এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত। তবে খামার ভিত্তিতে র‍্যাপিট পালন সহজ ও লাভজনক। মিশর, সুদান, লিবিয়া, আলজেরিয়া, পোল্যান্ড, রাশিয়া, কোরিয়া, জাপানচীনে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশের খামার রয়েছে। দেশে খরগোশের মাংস অভিজাত শ্রেণীর প্রিয় খাবার।

বাংলাদেশে ১৯৯৮ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রথম খরগোশ পালন শুরু হয় মুক্তাগাছার লক্ষীখোলা এলাকায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড.আবিদুর রেজার তত্বাবধানে এবং জেএনডিপির ব্যবস্থাপনায় খরগোশ পালন জনপ্রিয়তা লাভ করে। ৬ মাস বয়সে বাচ্চা দেয় একসাথে কমপক্ষে ৪–৮ টি বাচ্চা দেয়। ৩ মাসে খরগোশের ওজন হয় ১ কেজি বা আরেকটু বেশি।

তৃণভোজী খরগোশ এর প্রধান খাবার ঘাস যা প্রতিদিন এর মোট খাবারের ৭০%-৮০% খাওয়াতে হবে একটি খরগোশ প্রতিদিন মাত্র ১৫০ গ্রাম খাবার খায়। পছন্দের খাদ্য দূর্বাঘাস,কলমি শাক তবে কলমি শাক প্রতিদিন দেওয়া যাবে না । সাপ্তাহে ২ দিন সামান্য পরিমাণ দেওয়া যেতে পারে । এরা গাজর খুব ভালোবাসে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "খরগোশদের অন্তর্ভুক্ত শ্রেণীসমূহ"bigganblog.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-২৪ 
  2. "বাড়িতে খরগোশ পালন করবেন যেভাবে"www.jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-২৪ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা