কুমুদিনী সরকারি কলেজ
কুমুদিনী সরকারি কলেজ, যা কুমুদিনী মহিলা কলেজ নামেও পরিচিত, টাঙ্গাইলের একটি সরকারি কলেজ যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত।[১] কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন বাঙ্গালি ব্যবসায়ী রণদাপ্রসাদ সাহা। এটি ১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।[২] এবং ১৯৭৯ সালে এটিকে জাতীয়করণ করা হয়।[৩] ১৯৫৯ সালে ময়মনসিংহে মুমিনুন্নেসা কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এটি ছিল একমাত্র মহিলা কলেজ।[৪]
স্থাপিত | ১৯৪৩ |
---|---|
ইআইআইএন | ১১৪৭৪৩ |
অধ্যক্ষ | প্রফেসর মো: আবদুল মান্নান |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ১৫৬ |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ১২০ |
শিক্ষার্থী | ২৩০০০ |
অবস্থান | , ২৪°১৫′২৭″ উত্তর ৮৯°৫৫′২৬″ পূর্ব / ২৪.২৫৭৫° উত্তর ৮৯.৯২৩৯° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | শহর |
ওয়েবসাইট | http://www.kgc.ac.bd/ |
শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাকলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করে। এছাড়াও কলেজটিতে অনার্স এবং মাস্টার্সে পড়ার সুযোগ রয়েছে।[৩] এছাড়াও কলেজটি এর শিক্ষার্থীদের জন্য নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খেলাধুলার আয়োজন করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কলেজ লাইব্রেরি
সম্পাদনাপ্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় বর্তমানে একটি বৃহৎ লাইব্রেরি রয়েছে। শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি কার্ডের মাধ্যমে এ লাইব্রেরিতে নিয়মিত বই পড়ার সুযোগ পায়। এছাড়াও ছাত্রীরা ক্লাশের অবসরে লাইব্রেরির পাঠকক্ষে পড়াশুনা করতে পারে। কলেজ লাইব্রেরিতে ত্রিশ সহস্রাধিক বই রয়েছে এবং রয়েছে একটি সুন্দর মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার। কলেজ লাইব্রেরি ছাড়াও যে সকল বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে সে সকল বিভাগের সেমিনারে পর্যাপ্ত সহায়ক পুস্তক রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের কমনরুম
সম্পাদনাকলেজে ছাত্রীদের জন্য একটি কমনরুম রয়েছে। ছাত্রীরা ক্লাশ বিরতির সময় এখানে উপস্থিত হয়ে অবসর বিনোদন, দৈনিক পত্রিকা পাঠ এবং বিভিন্ন অন্তঃকক্ষ ক্রীড়ায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করতে পারে। এখানে ছাত্রীদের নিয়মিত উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ শিক্ষার পরিবেশকে আরও আনন্দমুখর ও সজীব রাখে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)
সম্পাদনাকুমুদিনী সরকারি কলেজে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের একটি প্লাটুন রয়েছে। সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা ছাড়াও এ কোরের সদস্যরা সমাজ ও দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করে থাকে।
গার্লস-ইন-রোভার
সম্পাদনা২০০১-২০০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে কুমুদিনী সরকারি কলেজে ‘গালর্স-ইন-রোভার’ ইউনিটের কার্যক্রম চালু হয়। সেবার ব্রত নিয়ে এরা এদেশের সেবায় নিয়োজিত।
ক্রীড়া
সম্পাদনাক্রীড়া ক্ষেত্রে কুমুদিনী সরকারি কলেজের ছাত্রীদের ভূমিকা উজ্জ্বল। স্থানীয় পর্যায়, জেলা পর্যায় এমনকি বিভাগীয় পর্যায়েও এ কলেজের ছাত্রীদের রয়েছে সদর্প পদচারণা ও একরাশ সাফল্য। ২০০৩-০৪ সালে টাঙ্গাইল জেলা আন্তঃকলেজ (উ.মা) ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কলেজটি দলগত চ্যাম্পিয়ন হয়। গত ২০১০-১১ সালে কলেজটি ভলিবলে আন্তঃজেলা, জোনাল ও ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে দলগত চ্যাম্পিয়ন (মহিলা) হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং ২০১১-১২ সালে ব্যাডমিন্টন, ভলিবল ও হ্যান্ডবলে জেলা চ্যাম্পিয়ন হয় কলেজটি। সর্বশেষ ২০১২-১৩ সালে ভলিবল প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় পর্যায়ে দলগত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ২০১৫-১৬ সালে ঢাকা বোর্ড বিভাগীয় পর্যায়ে ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন।২০১৫-১৬ সালে জেলা জোনাল পর্যায়ে ভলিবল টিম গঠন করে। ঢাকা বোর্ড আন্ত কলেজ (উচ্চ মাধ্যমিক) খেলাধুলা ও ক্রীড়া প্রতিয়োগিতায় ২০১৬-১৭ মহিলা জোন চ্যাম্পিয়ন (জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল)। ডিজিটাল মেলা ২০১৮ এটুআই এ ৩য় স্থান অর্জন। মেধাই সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবিষ্যৎ ৩৯তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিজ্ঞান মেলা ২০১৮ সিনিয়র গ্রুপ এ ৩য় স্থান টাঙ্গাইল সদর, টাঙ্গাইল। ৬ষ্ঠ জাতীয় কমডেকা-২০১৮ হাইমচর, চাঁদপুর, টেকসই সমাজ বিনির্মানে স্কাউটিং, সাফল্যের সাথে অংশগ্রহণের স্বীকৃতি স্বরুপ। ২০১৭ সালে ঢাকা বোর্ড আন্ত:কলেজ (উচ্চ মাধ্যমিক) খেলাধুলা ও ক্রীড়া প্রতিয়োগীতায় টাঙ্গাইল জেলায় ক্রিকেট মহিলা চ্যাম্পিয়ন। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৭ শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান কলেজ টাঙ্গাইল সদর। বিশ্ব রেড ক্রোস/রেড ক্রিসেন্ট দিবস ২০১৮ এ শ্রেষ্ঠ কলেজ ইউনিট। এছাড়া অন্যান্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিশেষ করে ক্রিকেটে কুমুদিনী সরকারি কলেজের গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য রয়েছে।
সাহিত্য ও সংস্কৃতি
সম্পাদনাপ্রতি বছরই কুমুদিনী সরকারি কলেজ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। কলেজের ছাত্রীরা স্থানীয় পর্যায়ে, জেলা পর্যায়ে, বিভাগীয় পর্যায়ে এবং জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে থাকে। ২০০৭ সালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘এটিএন বাংলা’ আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ‘যুক্তি কথন’ এ অংশ নিয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ রাইফেলস পাবলিক কলেজ, ঢাকা কে পরাজিত করে। ২০১৬ সালে নবম জাতীয় পর্যায়ে বিতর্ক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে ও বিভিন্ন জেলায় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে গৌরব অর্জন করে। এছাড়াও ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক’ আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জেলা চ্যাম্পিয়ন হয়।
বিভিন্ন জাতীয় দিবস
সম্পাদনাকুমুদিনী সরকারি কলেজে বিভিন্ন জাতীয় দিবস যেমনÑ বিজয় দিবস, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বর্ষবরণ, বর্ষাবরণ এবং বসন্তবরণ যথাযোগ্য মর্যাদায় ও আনন্দঘন পরিবেশে নিয়মিতভাবে উদযাপিত হয়।
কলেজ ইউনিফর্ম
সম্পাদনাকুমুদিনী সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত প্রত্যেক ছাত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে কলেজ পোশাক (সাদা ওড়নাসহ সাদা সালোয়ার ও কামিজ)/সাদা বোরকা পরিধান করতে হয়। এটি কলেজ শৃঙ্খলার অন্তর্ভুক্ত। কলেজ ইউনিফর্ম পরিধান করে কলেজের ভেতরে বা বাইরে কোন প্রকার অশোভন বা শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করা যাবে না। যে কোন ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কলেজ হতে বহিষ্কারের বিধান রয়েছে।
পরীক্ষার ফলাফল
সম্পাদনাকুমুদিনী সরকারি কলেজের পরীক্ষার্থীগণ সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহে অংশগ্রহণ করে থাকে। প্রতি বছর গোল্ডেন অ+ সহ দেড় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অত্র কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়। এছাড়াও স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিসহ অত্যন্ত সন্তোষজনক ফলাফল করে থাকে। ২০১০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মানবিক বিভাগে শ্রেষ্ঠ ২০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ৪ জনই কুমুদিনী সরকারি কলেজের ছাত্রী। ২০১২ সালে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় মোট ৭৬ জন এবং ২০১৩ সালে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় মোট ৮৮ জন অ+ অর্জন করে। ২০১৬ সালে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় মোট ২০৪ জন অ+ অর্জন করে।২০১৭ সালে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় মোট ১৬৩ জন অ+ অর্জন করে।
ছাত্রীনিবাস
সম্পাদনাছয়শ’ আসন বিশিষ্ট কুমুদিনী সরকারি কলেজের সুদৃশ্য তিনটি পৃথক ছাত্রীনিবাস রয়েছে। আবাসিক ছাত্রীদের সুচিকিৎসার জন্য একজন অভিজ্ঞ মহিলা এমবিবিএস ডাক্তার নিয়োজিত আছেন। কলেজ ছুটিকালীন সময়ে আবাসিক ছাত্রীদের বাড়ি যাবার সুযোগ রয়েছে।
বিখ্যাত শিক্ষার্থী
সম্পাদনা- শামীম আজাদ, লেখিকা
- খুরশীদ জাহান হক(রজনীতিবীদ)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "National University Affiliated College List" (পিডিএফ)। ২৩ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ রচনা চক্রবর্তী (২০১২)। "কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ক খ মো আসাদুজ্জামান (২০১২)। "কুমুদিনী কলেজ"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ Aminul Islam (১১ নভেম্বর ২০০৬)। "Muminunnisa Mohila College: Enlightening women for decades"। Star Insight। 1 (10)।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাবাংলাদেশের শিক্ষা বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |