বারসুঙ্গা
বারসুঙ্গা বা কারিপাতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Murraya koenigii অথবা Bergera koenigii) Rutaceae গোত্রের একটি ক্রান্তীয় বা উপক্রান্তীয় উদ্ভিদ (rue পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হল rue, citrus, এবং satinwood), যা ভারত এবং শ্রীলঙ্কা এর আঞ্চলিক উদ্ভিদ।
বারসুঙ্গা কারি পাতা | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Rosids |
বর্গ: | Sapindales |
পরিবার: | Rutaceae |
গণ: | Murraya |
প্রজাতি: | M. koenigii |
দ্বিপদী নাম | |
Murraya koenigii (L.) Sprengel[১] |
এর পাতা ভারত ও পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে অনেক ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা হয়। প্রায়শই ঝোল জাতীয় রান্নায় ব্যবহার করা হয় বলে সাধারণত একে 'কারি পাতা' বলা হয়, যদিও অধিকাংশ ভারতীয় ভাষায় এর নাম 'মিষ্টি নিম পাতা' ( সাধারণ নিম এর বিপরীত যা খুব তেঁতো স্বাদের এবং Meliaceae গোত্রের। )
বর্ণনা
সম্পাদনাএটি একটি ছোট উদ্ভিদ, যা ৪-৬ মিটার (১৩-২০ ফিট) উঁচু হয়, যার গুড়ির ব্যাস ৪০ সেমি (১৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয় । সুগন্ধি পাতাগুলো পক্ষল, প্রতি গুচ্ছে ১১-২১ টি করে পাতা, প্রতিটি পাতা ২–৪ সেমি (০.৭৯–১.৫৭ ইঞ্চি) লম্বা এবং ১–২ সেমি (০.৩৯–০.৭৯ ইঞ্চি) প্রশস্ত। এই গাছে ছোট সাদা ফুল ফোটে যা নিজে নিজে পরাগায়িত হয়ে ছোট চকচকে রসালো ফল উৎপন্ন করে যার ভেতর একটি মাত্র, বড় এবং টেকসই বীজ থাকে। যদিও ফলটির শাঁস খাওয়া যায়—যেটি মিষ্টি এবং ঔষধের মত গন্ধযুক্ত—সাধারণভাবে, শাঁস বা বীজ কোনটিই রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় না।
এর প্রজাতির নাম উদ্ভিদবিজ্ঞানী জোনান কনিগ এর দেয়া।
ব্যবহার
সম্পাদনাএই পাতাগুলো কে টক রুচিবর্ধক হিসেবে দক্ষিণ এবং পশ্চিম-তীরবর্তী ভারতীয় রান্নায়, and শ্রীলঙ্কান রান্নায় (කරපිංචා) বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়, বিশেষত ঝোল জাতীয় রান্নায়, সাধারণত পেঁয়াজ কুচির সাথে রান্নার প্রথম পর্যায়ে এটি ভেজে নেয়া হয়। এগুলো থোরান (Thoran), ভাদা (Vada), রাসাম(Rasam), কাধি(Kadhi) তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। {থোরান (Thoran), ভাদা(Vada), রাসাম(Rasam), কাধি(Kadhi) সম্পর্কে অধিক জানতে Wikipedia এর ইংরেজি সংস্করণ দেখুন }। গাছ থেকে ছেঁড়ার পর এই পাতা খুব অল্প সময় তাজা থাকে এবং এদের রেফ্রিজারেটরের ভেতরেও সংরক্ষণ করা যায় না। এদের শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায় তবে এতে এর সুগন্ধ কিছুটা কমে যায়।
বারসুঙ্গা (Murraya koenigii) এর পাতা ঔষধি হিসেবে আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। বিশ্বাস করা হয় এতে বহুমূত্র রোগ(ডায়াবেটিস) নিরোধক গুনাগুণ আছে। [২][৩][৪]
যদিও সাধারণভাবে ঝোল জাতীয় রান্নায় এটির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি, কারি গাছের পাতা অন্যান্য অনেক রান্নায় ভিন্ন স্বাদ যোগ করার জন্য ব্যবহার করা যায়। কম্বোডিয়ায় ওর পাতা খোলা আগুনে সেঁকে বা ঝলসিয়ে নেয়া হয় যতক্ষণ না এটি মুড়মুড়ে হয়ে যায়, তারপর এটি গুড়ো করে মাজু কুরেং নামের একটি টক স্যুপে ব্যবহার করা হয়।
তুলসী পাতার অনুপস্থিতিতে, কারি পাতা বিভিন্ন শাস্ত্রীয় আচার এবং পূজায় ব্যবহার করা হয়।
বংশবৃদ্ধি
সম্পাদনারোপণ করার জন্য বীজ অবশ্যই পাকা এবং সতেজ হতে হবে; শুকনো অথবা কোঁকড়ানো ফল ব্যবহার যোগ্য নয়। সম্পূর্ণ ফলটি রোপণ করা যায়, কিন্তু ফলের শাঁস ছাড়িয়ে নিয়ে যা স্যাঁতসেঁতে কিন্তু ভেজা নয় এমন পাত্রে রোপণ করা সবচেয়ে ভাল।
নতুন চারা উৎপাদনের জন্য কলম পদ্ধতিও ব্যবহার করা যায়।
রাসায়নিক উপাদান
সম্পাদনাকিছু ক্ষারসদৃশ উপাদান যা প্রধানত কারি গাছের পাতা, কাণ্ড এবং বীজ এ পাওয়া যায় সেগুলো হল: মাহানিম্বিন(Mahanimbine), গ্রিনিম্বিন(girinimbine), কোয়েনিম্বিন(koenimbine), আইসোমাহানিন(isomahanine), মাহানিন(mahanine), ইন্ডিকোল্যাক্টোন(Indicolactone), ২-মিথোক্সি-৩-মিথাইল-কার্বাজল(2-methoxy-3-methyl-carbazole)।[৫]
এই গাছ থেকে পাওয়া গ্রিনিম্বিন এবং কার্বাজল ক্ষারক এর উপরে ২০১১ তে করা এক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, এটি "In Vitro(কোষের স্বাভাবিক অবস্থার বাইরে রেখে তার কার্য নিয়ন্ত্রণ)" এর HepG2 কোষে, মানুষের শরীরে "Hepatocellular Carcinoma(এক ধরনের ক্যন্সার)" এর বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং Apoptosis(কোষের স্বাভাবিক মৃত্যু) বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। [৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Murraya koenigii information from NPGS/GRIN"। www.ars-grin.gov। ২০০৯-০২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-১১।
- ↑ Arulselvan P, Senthilkumar GP, Sathish Kumar D, Subramanian S (অক্টো ২০০৬)। "Anti-diabetic effect of Murraya koenigii leaves on streptozotocin induced diabetic rats"। Pharmazie। 61 (10): 874–7। পিএমআইডি 17069429।
- ↑ Rashmee Z Ahmed (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Traditional diabetes remedy offers hope"। The Times Of India। ১৩ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Arulselvan P, Subramanian SP (জানু ২০০৭)। "Beneficial effects of Murraya koenigii leaves on antioxidant defense system and ultra structural changes of pancreatic beta-cells in experimental diabetes in rats"। Chem Biol Interact.। 165 (2): 155–64। ডিওআই:10.1016/j.cbi.2006.10.014। পিএমআইডি 17188670।
- ↑ Jain, Vandana; ও অন্যান্য (২০১২)। "Murraya Koenigii: An Updated Review" (পিডিএফ)। International Journal Of Ayurvedic And Herbal Medicine। 2 (2): 607:627। আইএসএসএন 2249-5746। ২০১৪-১০-১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১০-১১।
- ↑ Syam, Suvitha; Abdul, Ahmad Bustamam; Sukari, Mohd. Aspollah; Mohan, Syam; Abdelwahab, Siddig Ibrahim; Wah, Tang Sook (২০১১)। "The Growth Suppressing Effects of Girinimbine on Hepg2 Involve Induction of Apoptosis and Cell Cycle Arrest"। Molecules। 16 (8): 7155–70। ডিওআই:10.3390/molecules16087155। পিএমআইডি 21862957।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |