কাজী আবদুল ফাত্তাহ
কাজী আবদুল ফাত্তাহ একজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক। তিনি বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির দায়িত্বাধীন সভাপতি। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি বিজ্ঞান একাডেমি নির্বাচিত ফেলো এবং ২০০৬ সালে উদ্ভিদবিদ্যায় শিক্ষকতা ও গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।[১]
কাজী আবদুল ফাত্তাহ | |
---|---|
বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২০১৭ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় |
পুরস্কার | বাংলা একাডেমি ফেলো (২০০৬) |
তিনি উদ্ভিদবৃক্ষবিজ্ঞান, উদ্ভিদ প্রাণরসায়ন এবং ফলন বৃদ্ধিতে উদ্ভিদের শারীরবৃত্তীয় ও জৈব রাসায়নিক উদ্ভিদবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী পদার্থগুলো কীভাবে কাজ করে সে বিশষে গবেষণার জন্য পরিচিত।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাকাজী আবদুল ফাত্তাহ ১৯৫২ সালে উদ্ভিদবিদ্যার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং ১৯৫৩ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে স্নাতকোত্তর লাভ করেন। ১৯৬০ সালে যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা ও অনুজীববিজ্ঞান বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তান (পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান) কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের জীববিজ্ঞান শিক্ষকদের জন্য আয়োজিত সামার সায়েন্স কোর্সে অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৬৯ সালে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআবদুল ফাত্তাহ ১৯৫৪ সালের ১৩ মার্চ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে জীববিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন। একই বছরের ২৭ জুলাই থেকে ১৯৫৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা কলেজে উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ শেষে ১৯৬০ সালের আগস্টে ইডেন মহিলা কলেজে উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ কলেজে শিক্ষকতা করেন।[১]
১৯৬২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত মুরারিচাঁদ কলেজে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করে একই বছরের ২৩ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭০ সালে পদন্নোতি পেয়ে ‘রিডার’ এবং ১৯৭৯ সালে অধ্যাপক হন। ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একই বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন।[১]
আবদুল ফাত্তাহ ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাইজেরিয়ার মাইদুগুড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের অধীন শস্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সালের অক্টোবরে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে একই বিভাগের অনারারি অধ্যাক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া ১৯৮৬ সাল থেকে ১২ বছর পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অধ্যাপক ছিলেন।[১]
তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির কাউন্সিল সদস্য এবং ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল এবং উচ্চতর শিক্ষা বোর্ডের সদস্য ছিলেন।[১] ১৯৬২ সালে প্রথম লেখক হিসেবে তিনি ‘সরল জীববিজ্ঞান’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয়।[১]
সম্মাননা
সম্পাদনা- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক (১৯৫৪)
- ‘সরল জীববিজ্ঞান’ গ্রন্থের জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬২)
- বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি ফেলো (১৯৯১)
- বাংলাদেশ উদ্ভিদবিজ্ঞান সমিতি স্বর্ণপদক ও ফেলোশীপ (২০০৫)
- রোটারী ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক পল হ্যারিস ফেলোশীপ[২]
- বাংলা একাডেমি ফেলো (২০০৬)