সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ সুনামগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান । এই কলেজটি সুনামগঞ্জের শিক্ষার্থীদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ।[৩] আধুনিক সুযোগ সুবিধা সহ শ্রেণীকক্ষ, গবেষণাগার, গ্রন্থাগার এবং সাধারণ কক্ষ রয়েছে।
ধরন | সরকারি কলেজ |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৪৪ |
ইআইআইএন | ১৩০০৫১ |
অধ্যক্ষ | প্রফেসর মোঃ শামসুল আলম |
ঠিকানা | হাসন নগর , সদর উপজেলা , সুনামগঞ্জ , , |
শিক্ষাঙ্গন | উশহর |
সংক্ষিপ্ত নাম | সু.স.ক |
অধিভুক্তি | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট |
ওয়েবসাইট | www |
১৯৪৪ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় । এই কলেজটি সুনামগঞ্জ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান । ২০০১ সালে অনার্স কোর্স চালু হয় ।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর অনেক কাঠ খোট্টা পার হয়ে আজকের অবস্থানে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ। সুনামগঞ্জ জেলাবাসির আশা-ভরসা, উচ্চ শিক্ষার অবলম্বন এই প্রতিষ্ঠান। তৎকালীন আসামের প্রথম বেসরকারি বিজ্ঞান কলেজ এটি। আসাম বেঙ্গল সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর সহায়তায় ১৯৪৪ সনে এই কলেজে আই.এসসি কোর্স চালু হয়। পরবর্তীতে বিজ্ঞান শিক্ষায় এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। দেশবরেণ্য খ্যাতিমান অনেকেই এই কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং বিদেশেও অনেক ছাত্র তাদের প্রতিভার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পূর্ব পযন্ত কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৪৪-১৯৪৭), পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর এর একাডেমিক দায়িত্ব অর্পিত হয়। পরবতীতে ১৯৬১ সালে ঢাকা বোর্ড ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পায়। ১৯৬২সালে কুমিল্লা বোর্ড এই দায়িত্ব পায়। ১৯৯৯ সালে সিলেট বোর্ড প্রতিষ্ঠার ফলে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ সিলেট বোর্ডের অধীনে চলে যায়। এবং ডিগ্রী শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরে ১৯৯১-১৯৯২ শিক্ষাবর্ষে সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ন্যস্ত হয়।
১৯৪৪ সালে সুনামগঞ্জ মহকুমার সাবডিভিশনাল অফিসার (এসডিও) হিসেবে কর্মরত প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাই সৈয়দ মুর্তাজা আলী, জননেতারা পশ্চাৎপদ ভাটি অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যেগ নেন এবং চাঁদা সংগ্রহে এগিয়ে আসেন। প্রথমে পঁচিশ হাজার টাকা চাঁদা সংগ্রহ করে কলেজের মঞ্জুরীর জন্য কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। প্রথমে স্থানীয় টাউন হলে কলেজের ক্লাস আরম্ভ হয়। ১৯৪৪ সালের শেষ ভাগে আসামের প্রধান মন্ত্রী স্যার মোহাম্মদ সাদ উল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে কলেজের দ্বার উদ্ঘাটন করেন।
সুনামগঞ্জ কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন ছাতক নিবাসী প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তী। কলেজের স্থান সংকুলানের জন্য স্বল্প পরিসর টাউন হলকে উত্তর দিকে সম্প্রসারিত করা হয়। ১৯৬০ সালে কলেজ বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়।
প্রতিষ্ঠা
সম্পাদনা১৯৫৯ সালে পুকুর খোদাই শুরু হয়। কলেজ টিনশেড একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন হয় ১৯৬০ সালের ১৪মার্চ। ১৯৬১ সালে ২৮শে আগস্ট নতুন ভবনে ক্লাস শুরু হয়। ল্যাবরেটরি স্থানান্তরিত হতে বেশ সময় লেগেছিল। তাই ঐ সময় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের দুই স্থানেই ক্লাস নিতে হতো। ১৯৬২ সালে পুরাতন বিজ্ঞান ভবনের ভিত্তির কাজ শুরু হয় এবং ১৯৬৩ সালে পুরাতন বিজ্ঞান ভবনে কার্যক্রম শুরু হয় । ১৯৬৭ সালের দিকে পূর্ব দিকের টিনশেড অংশ তৈরি হয়। ১৯৬৭ সালে বি.এস-সি ও বি.কম কোর্স চালু করা হয়। অবশেষে ১৯৮০ সালের ৩রা মার্চ কলেজটি জাতীয়কৃত করা হয়। জাতীয় করণকালীন সময়ে তৎকালীন কলেজ গভর্ণিং বডি কর্তৃক ১৪/০৫/১৯৮০খ্রিঃ তারিখে সম্পাদিত ৮৫৮৫/১৯৮০নং দানকৃত দলিলের মাধ্যমে ২৫.৬৫ একর ভূমি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজকে প্রদান করা হয়। ১৯৯২-৯৩ সালে পুরাতন বিজ্ঞান ভবনের পেছনে ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের তত্ত্বাবধানে একটি দ্বিতল একাডেমিক ভবন তৈরি হয় যা পরবর্তীতে অনার্স ভবনে রূপান্তরিত হয়েছে। ১৯৯৪-৯৫ সনে কলেজের উত্তর-পূর্ব কোণে প্রস্তাবিত স্টাফ কোয়ার্টার এর পার্শ্বে একটি নতুন পুকুর খনন করা হয়। ১৯৯৩-৯৪ সনে নির্মিত হয় নতুন দ্বিতল বিজ্ঞান ভবন। ১৯৯৫-৯৬ সনের দুটি শ্রেণি কক্ষকে একটি স্থায়ী মঞ্চসহ ছয়শ জন দর্শকের আসন সংবলিত মিনি অডিটরিয়ামে রূপান্তরিত হয়। ১৯৯৫ সনে কলেজ গেইট নির্মিত হয়। ১৯৯৫-৯৬ সনে কলেজ পুকুরের দক্ষিণ পার্শ্বের একটি টিনশেড ঘরে ক্যান্টিন স্থানান্তর হয়। কলেজের পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে একটি অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করা হয়। [৪]
অনুষদ সমূহ
সম্পাদনা- স্নাতক সম্মান
- বাংলা,
- দর্শন,
- ইতিহাস,
- হিসাব বিজ্ঞান,
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান,
- অর্থনীতি,
- ইংরেজি,
- ব্যবস্থাপনা,
- উদ্ভিদ বিজ্ঞান,
- গণিত
- স্নাতকোত্তর
- বাংলা,
- ইতিহাস,
- দর্শন,
- হিসাব বিজ্ঞান
অর্জন ও ভবিষৎ পরিকল্পনা
সম্পাদনা২০১৬ সালে শ্রেষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি হলো এই কলেজের সেরা অর্জন ।
আবাসন সুবিধা, একাডেমিক ভবন নির্মাণ, নতুন দুইটি গাড়ী ক্রয়, ৬ টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু করা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সুযোগ সুবিধা
সম্পাদনাগন্থাগারঃ ১৩ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে নব নির্মিত তিন তলা ভবনকে প্রশাসনিক ভবনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। নীচতলায় গ্রন্থাগার স্থানান্তরিত হয়েছে। এটি একটি সমৃদ্ধ কলেজ লাইব্রেরী যাতে বই, সাময়িকী সংখ্যা ১১,০০০(এগার হাজার) এর উর্ধ্বে। ছাত্র-ছাত্রীদের বসে বই পড়ার সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
কম্পিউটার ল্যাবরেটরীঃ সার্বক্ষনিক ইন্টারনেট সুবিধা সংবলিত একটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাবরেটরী স্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি কলেজের জন্য একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। .
ছাত্রাবাসঃ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কলেজে দুটি ছাত্রাবাস ছিল। একটির নাম মুসলিম হোস্টেল, অপরটির নাম হিন্দু হোস্টেল। ১৫অক্টোবর ২০১১ তারিখে কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মিত একমাত্র ছাত্রীনিবাসটি উদ্বোধন করা হয়।
অবস্থান
সম্পাদনাচক্ষু জুরানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মনোমুগ্ধকর সারিসারি বৃক্ষরাজি , দীঘির মত পুকুর নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সুনামগঞ্জে সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীদের অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে দৈনিক ইত্তেফাক | ০৯ এপ্রিল, ২০১৮ ইং
- ↑ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রথম আলো
- ↑ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ, সুনামগঞ্জ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন
- ↑ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্সে নতুন ৬টি বিষয় যুক্ত হল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জুলাই ২০২০ তারিখে বিডিটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকম