কাউশিউং
কাউশিউং (ম্যান্ডারিন চীনা ভাষা: [kɑ́ʊɕjʊ̌ŋ] (; )ওয়েড–জাইলজ: Kao¹-hsiung²; ফিনিন: Gāoxióng), দাপ্তরিকভাবে কাউশিউং সিটি, দক্ষিণ তাইওয়ানে অবস্থিত একটি বিশেষ পৌরসভা। ২,৯৫২ বর্গ কিলোমিটার (১,১৪০ বর্গ মাইল) আয়তনের শহরটি উপকূলীয় নগর কেন্দ্র থেকে গ্রাম্য ইউশান পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত, যা দক্ষিণ তাইওয়ানের বৃহত্তম শহর। ২০২৩ সালের অক্টোবর মোতাবেক, এই শহরে প্রায় ২.৭৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে, যার ফলে এটি তাইওয়ানের তৃতীয় সবচেয়ে জনবহুল শহর।[৪]
কাউশিউং সিটি 高雄市 তাকাও, তাকোও, তাকাউ | |
---|---|
বিশেষ পৌরসভা | |
ব্যুত্পত্তি: তাকাও প্রিফেকচার | |
ডাকনাম: পোতাশ্রয় শহর (গাংদু), মেরিটাইম রাজধানী, ওয়াটারফ্রন্ট শহর | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৬′৫৪″ উত্তর ১২০°১৭′৫১″ পূর্ব / ২২.৬১৫০০° উত্তর ১২০.২৯৭৫০° পূর্ব | |
দেশ | প্রজাতন্ত্রী চীন (তাইওয়ান) |
ফংশান কাউন্টি | ১৬৮৩ |
তাকাও প্রিফেকচার | সেপ্টেম্বর ১৯২০ |
কাউশিউং সিটি | ২৫ অক্টোবর ১৯৪৫ |
কাউশিউং কাউন্টি | ৬ ডিসেম্বর ১৯৪৫ |
ইউয়েন-নিয়ন্ত্রিত পৌরসভায় উন্নীতকরণ | ১ জুলাই ১৯৭৯ |
কাউশিউং কাউন্টির সাথে একত্রীতকরণ | ২৫ ডিসেম্বর ২০১০ |
সরকার | |
• নগরপাল | জেন জি-মাই (ডিপিপি) |
আয়তন[১][২] | |
• বিশেষ পৌরসভা | ২,৯৫১.৮৫ বর্গকিমি (১,১৩৯.৭২ বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ৩৬৩ বর্গকিমি (১৪০ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ২২-এর মধ্যে ৪ |
উচ্চতা | ৯ মিটার (৩০ ফুট) |
জনসংখ্যা (অক্টোবর ২০২৩)[৩] | |
• বিশেষ পৌরসভা | ২৭,৩৭,৬৬০ |
• ক্রম | ২২-এর মধ্যে ৩ |
• জনঘনত্ব | ৯৩০/বর্গকিমি (২,৪০০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা[৩] | ২৫,৬৫,০০০ |
• পৌর এলাকার জনঘনত্ব | ৭,১০০/বর্গকিমি (১৮,০০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | জাতীয় মান সময় (ইউটিসি+8) |
পোস্টাল কোড | ৮০০–৮৫২ |
ফুল | চীনা হিবিস্কাস |
গাছ | তুলা গাছ |
ওয়েবসাইট | www |
কাউশিউং সিটি | |||||||||||||||||||||||||||||||
চীনা নাম | |||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
চীনা | 高雄市 | ||||||||||||||||||||||||||||||
আক্ষরিক অর্থ | প্রাচীন সিরায়া নামের জাপানি রূপ | ||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||
জাপানি নাম | |||||||||||||||||||||||||||||||
কাঞ্জি | 高雄市 | ||||||||||||||||||||||||||||||
কানা | たかおし | ||||||||||||||||||||||||||||||
|
১৭শ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কাউশিউং ছোট বাণিজ্যিক গ্রাম থেকে দক্ষিণ তাইওয়ানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় এখানে উৎপাদন, ইস্পাত তৈরি, তেল শোধনাগার, মাল পরিবহন, জাহাজ নির্মাণের মত গুরুত্বপূর্ণ শিল্প গড়ে ওঠেছে। গ্লোবালাইজেশন অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড সিটিজ রিসার্চ নেটওয়ার্ক শহরটিকে "গামা" স্তরের বৈশ্বিক শহর হিসেবে শ্রেণিকৃত করেছে।[৫] কাউশিউং দেশটির কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর কারণ এটি তাইওয়ানের প্রধান বন্দর নগর। কাউশিউং বন্দর তাইওয়ানের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম পোতাশ্রয় এবং এই বন্দর হয়ে দেশটির ৬৭% আমদানি-রপ্তানি কন্টেইনার আসা-যাওয়া করে।[৬] কাউশিউং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তাইওয়ানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও যাত্রীবহনের দিক থেকে দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।[৭]
ব্যুৎপত্তি
সম্পাদনা১৬শ ও ১৭শ শতাব্দীতে হোকলো অভিবাসীরা এই এলাকাকে তাকাউ নামে ডাকত। এক তত্ত্ব অনুসারে, তাকাউ নামটির উৎপত্তি আদিবাসী সিরায়া ভাষা থেকে, যার অর্থ "বাঁশ বাগান"। অন্য একটি তত্ত্ব অনুসারে, নামটি মাকাতাও জনগোষ্ঠীর নাম থেকে এসেছে, যারা ইউরোপীয় ও হোকলোদের বসতি স্থাপনের পূর্বে এই এলাকায় বসবাস করত। অনেকে মাকাতাওদের সিরায়া জনগোষ্ঠীর অংশ বলে গণ্য করে।[৮]
দক্ষিণ তাইওয়ানে ওলন্দাজ উপনিবেশ সময়কালে এই এলাকা ইউরোপীয়দের কাছে তানকোইয়া নামে পরিচিত ছিল। ১৬৬২ সালে মিংদের বিশ্বস্ত কোসিঙ্গা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তুংনিং রাজ্য ওলন্দাজদের উচ্ছেদ করে। ১৬৬৪ সালে তার পুত্র চেং চিং গ্রামটির নামকরণ করেন বানলিয়ান-চিউ।
তাইওয়ান প্রজাতন্ত্রী চীনের সমর্পণের পর চীনা লিখন পদ্ধতি পরিবর্তন হয়নি, বরং মান্দারিন উচ্চারণ গ্রহণ করা হয়। ফলে এর দাপ্তরিক রোমানিকৃত নাম দাঁড়ায় কাউশিউং (ফিনিন: Gāoxióng; ওয়েড-জাইলস: Kao¹-hsiung²), যা 高雄 এর মান্দারিন চীনার ওয়েড-জাইলজ রোমানিকরণ।
ভূগোল
সম্পাদনাশহরটি তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে তাইওয়ান প্রণালীর দিকে অবস্থিত। এর উত্তর সীমান্তে তাইনান, উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে চিয়াই ও নানতো কাউন্টি, উত্তর-পূর্ব সীমান্তে তাইতুং কাউন্টি এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে পিংতুং কাউন্টি অবস্থিত। শহরের কেন্দ্রস্থল কাউশিউং পোতাশ্রয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে এবং পোতাশ্রয়ের অপর দিকে চিচিন জেলা প্রাকৃতিক তরঙ্গরোধ হিসেবে কাজ করে। আই নদী প্রাচীন শহর ও শহরের কেন্দ্রস্থল হয়ে পোতাশ্রয়ে পতিত হয়েছে। জুওইং সামরিক পোতাশ্রয় কাউশিউং পোতাশ্রয় ও শহরের কেন্দ্রের উত্তরে অবস্থিত। কাউশিউংয়ের প্রাকৃতিক স্থলচিহ্নের মধ্যে রয়েছে এপ পাহাড় ও বানপিং পর্বত।
জলবায়ু
সম্পাদনাকর্কটক্রান্তি রেখার এক ডিগ্রি দক্ষিণে অবস্থিত কাউশিউংয়ে ক্রান্তীয় সাভানা জলবায়ু বিরাজমান।[৯] এখানে মাসিক গড় তাপমাত্রা ২০ ও ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (৬৮ ও ৮৪ ফারেনহাইট) মধ্যে এবং আদ্রতা ৭১ থেকে ৮১% এর মধ্যে।
কাউশিউং পোতাশ্রয়ের সমুদ্রের তাপমাত্রা বছর জুড়ে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে,[১০] যা লিউচিউ দ্বীপের পর দক্ষিণ তাইওয়ানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।[১১] সাম্প্রতিক রেকর্ড অনুসারে, গত তিন দশকে এই শহরের গড় তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে, যা ১৯৮৩ সালে ২৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৭৫.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) থেকে বেড়ে ২০১২ সালে ২৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৭৭.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) হয়েছে।
জনমিতি
সম্পাদনা২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কাউশিউং শহরের জনসংখ্যা ২৭,৭৩,৫৩৩, যা জনসংখ্যার দিক থেকে নিউ তাইপে সিটি ও তাইচুংয়ের পর তৃতীয় বৃহত্তম শহর, এবং এর জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৯৩৯.৫৯ জন।[৪] এই শহরের মধ্যে ফংশান জেলা সবচেয়ে জনবহুল জেলা, যার মোট জনসংখ্যা ৩৫৯,৫১৯, এবং সিনসিং জেলা সবচেয়ে ঘনত্বপূর্ণ জেলা, যেখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২৫,৮২০ জন লোক বসবাস করে।
খেলাধুলা
সম্পাদনাকাউশিউং ভিত্তিক পেশাদার বেসবল দল টিএসজি হকস তাইওয়ানের চীনা পেশাদার বেসবল লিগে খেলে থাকে।[১২]
কাউশিউং শহরে আয়োজিত সাম্প্রতিক ক্রীড়া আয়োজনসমূহ হল:
- ২০০১ এশীয় সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নশিপ
- ২০০৫ ডাব্লিউপিএ বিশ্ব নাইন-বল চ্যাম্পিয়নশিপ
- ২০১১ এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ
- ২০১৩ ওয়ার্ল্ড মডার্ন পেন্টাথলন চ্যাম্পিয়নশিপ
- ২০১৬ এশিয়ান মেন্স অনূর্ধ্ব-২০ ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ
- ২০১৬ ডাব্লিউটিএ তাইওয়ান ওপেন
- ২০১৯ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া রাগবি চ্যাম্পিয়নশিপ
প্রতি বছর আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা:
- কাউশিউং ফুবন ম্যারাথন
সংলগ্ন স্থান
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ 《中華民國統計資訊網》縣市重要統計指標查詢系統網। Statdb.dgbas.gov.tw (চীনা ভাষায়)। ১২ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Demographia World Urban Areas PDF" (পিডিএফ)। ডেমোগ্রাফিয়া। ৩ মে ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ ক খ 高雄市政府主計處全球資訊網 – 首頁। dbaskmg.kcg.gov.tw (চীনা ভাষায়)। ১১ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ ক খ 人口統計查詢:本市各區里戶口數月統計। Kaoshiung City Government। ১৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ "The World According to GaWC 2020"। Globalization and World Cities (GaWC) Research Network। ২৪ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Kaohsiung Harbor volume down 1.9 percent last year"। তাইপে টাইমস। ৮ জানুয়ারি ২০১৮। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ ইয়াং, ইয়া লিং (১ জুন ২০২০)। "Comparison of public perception and risk management decisions of aircraft noise near Taoyuan and Kaohsiung International Airports"। জার্নাল অব এয়ার ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট। ৮৫: ১০১৭৯৭। আইএসএসএন 0969-6997। ডিওআই:10.1016/j.jairtraman.2020.101797। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Siraya activists slam ministry over letter"। তাইপে টাইমস। ২৩ এপ্রিল ২০০৯। ১২ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Climate Kaohsiung City (Republic of China (Taiwan))"। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Kaohsiung Average Sea Temperatures"। Central Weather Bureau। ২৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৪।
- ↑ "Liuqiu island Average Sea Temperatures"। Central Weather Bureau। ২৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৪।
- ↑ প্যান, জেসন (৯ জুন ২০২২)। "Baseball league welcomes sixth team"। তাইপে টাইমস। ১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২৩।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (ইংরেজি ভাষায়)
- ওপেনস্ট্রিটম্যাপে কাউশিউং সম্পর্কিত ভৌগোলিক উপাত্ত