ওবায়েদ উল হক
ওবায়েদ উল হক (জন্মঃ ৩১ অক্টোবর, ১৯১১ - মুত্যুঃ ১৩ অক্টোবর, ২০০৭) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাংবাদিক।[১] তিনি একাধারে একজন লেখক, কবি, ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, সুরকার, গীতিকার। তিনি দীর্ঘকাল ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ অবজার্ভার-এর সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৬৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ১৯৮১ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
ওবায়েদ উল হক | |
---|---|
জন্ম | ৩১ অক্টোবর, ১৯১১ |
মৃত্যু | ১৩ অক্টোবর, ২০০৭ |
পেশা | লেখক, কবি, সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, সুরকার ও গীতিকার |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ ![]() |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৫) একুশে পদক (১৯৮১) |
জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
ওবায়েদ উল হকের জন্ম ১৯১১ সালে ফেনীর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। ১৯৩৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি দর্শন ও মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন কোর্স সম্পন্ন করেন।[২]
কর্মজীবনসম্পাদনা
ওবায়েদ উল হক ১৯৩৮ সালে তিনি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। এর মধ্যে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ তার ভাবনাকেপ্রচণ্ড নাড়া দিলো। ১৯৪৬ সালে "দুঃখে যাদের জীবন গড়া" ছবিটি মুক্তি পায় বাংলা, বিহার, আসাম এবং বার্মায় (তৎকালীন film distribution zone)। সবাই তার ছবি দেখে অভিভূত হন। সিনে ম্যাগাজিন রূপমঞ্চের জরিপে সে বছর সেরা ১০টি ছবির একটি নির্বাচিত হলো তার ছবিটি। ছবিটি পরে ঢাকার মানসী সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়। পরবর্তীতে দেশে এসে সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন ওবায়েদ উল হক। ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে লিখলেন শত শত সম্পাদকীয়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক হন তিনি।[৩] ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি এর সম্পাদক ছিলেন। এরপর তিনি সম্পাদক হলেন নতুন প্রকাশিত দৈনিক ডেইলি নিউজের। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিকটির সম্পাদক ছিলেন। এরপর দৈনিক বাংলা এবং বাংলাদেশ টাইমসের বোর্ড অব ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হলেন।
সাহিত্য কর্মসম্পাদনা
ওবায়েদ উল হকের প্রথম কবিতা সওগাত পত্রিকায় ছাপা হয় মাত্র ১০ বছর বয়স। এরপর বিভিন্ন ম্যাগাজিন এবং লিটল ম্যাগে নিয়মিত তার কবিতা ছাপা হতে থাকে। পঞ্চাশের দশকে দিগ্বিজয়ে চোরাবাজার নামে তার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। তিনটি একাঙ্কিকা নাটক নিয়ে বইটি। এরপর একই ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হয় আরেকটি বই- এই পার্কে। দুটি বইই বেশ জনপ্রিয় হয়। ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সাহিত্য সেমিনারে জনপ্রিয় নাট্যকার এবং ঔপন্যাসিক রশীদ করিম বলেন, ওবায়েদ উল হক তার দুটি কাজ- দিগ্বিজয়ে চোরাবাজার এবং এই পার্কে'র জন্যে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এ পর্যন্ত ১৪টি বই, ছয়টি নাটক, তিনটি উপন্যাস, তিনটি কাব্যগ্রন্থ এবং ইংরেজিতে একটি আত্মজীবনী লিখেছেন। তার লেখা নাটকগুলো হলো- এই পার্কে, দিগ্বিজয়ে চোরাবাজার, সমাচার এই, রুগ্ন পৃথিবী, ব্যতিক্রম এবং যুগসন্ধি। দ্বৈত সঙ্গীত, সংগ্রাম এবং ঢোল-এই তিনটি তার উপন্যাস। তার কাব্যগ্রন্থগুলো হল- দ্বিধার ফসল, ছায়ানগর সংলাপ এবং গরিব হতে চাই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তার লেখা জীবনী গ্রন্থের নাম- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: অন্যরকম এক নেতা।
পুরস্কার ও সম্মাননাসম্পাদনা
- একুশে পদক (১৯৮১) [৪]
- ইউনিসেফ স্বর্ণপদক (১৯৮৩)
- আব্দুস সালাম স্বর্ণ পদক
- জহুর হোসেন চৌধুরী স্বর্ণ পদক
- অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণ পদক
- বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৫)
- মার্কেন্টাইল ব্যাংক সম্মাননা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "দৈনিক সমকাল"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১২।
- ↑ দৈনিক জনকন্ঠ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ দৈনিক কালের কন্ঠ
- ↑ "বইপত্র বিডি ডট কম"। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১২।