এ কে এম মাইদুল ইসলাম
এ কে এম মাঈদুল ইসলাম (মে ২৯, ১৯৪০ - মে ১০, ২০১৮) বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ। মাঈদুল ইসলাম কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। [১]
এ কে এম মাইদুল ইসলাম | |
---|---|
![]() | |
জাতীয় আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ জানুয়ারি ২০১৪ – ২০১৮ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২৯ মে, ১৯৪৩ কুড়িগ্রাম জেলা, বাংলাদেশ |
মৃত্যু | ১০ মে, ২০১৮ ঢাকা |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | জাতীয় পার্টি |
পেশা | ব্যবসা, রাজনীতিবিদ |
জন্ম ও শৈশবসম্পাদনা
মাঈদুল ইসলাম ১৯৪০ সালের ২৯শে মে তৎকালীন রেওয়াজ অনুযায়ী আসামের কোকড়াডাঙ্গায় তার নানাবাড়ী সুখের চরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে তার ডাকনাম ছিল বাবু মিঞা পরে এই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মুকুল।তার পিতার নাম আবুল কাশেম এবং মাতার নাম মরিয়ম বেগম। তার পিতা মরহুম আবুল কাসেম ছিলেন পাকিস্তান আন্দোলনের সক্রিয় নেতা, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত সদস্য এবং পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পীকার।
ছাত্রজীবনসম্পাদনা
মাঈদুল ইসলাম উলিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। তিনি উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী হাই স্কুলে পড়াশুনা করেন। তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সারগোদা পাবলিক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশুনা করেন। পরে তিনি সেখান থেকে এসে কুমিল্লা জেলার মতলব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন। জনাব মাঈদুল ইসলাম রাজশাহী সরকারী কলেজে অধ্যয়ন করেন। কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্র থাকাকালীন সক্রিয় রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট হন। রাজশাহী সরকারী কলেজে ছাত্র থাকাকালীন ১৯৬২ সালে আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন এবং কারাভোগ করেন। ১৯৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান রাজশাহীতে আসেন। ছাত্ররা তার গাড়ি আক্রমণ করে। সরকার আইয়ুব হত্যা মামলা রজু করা হয়। এর মধ্যে মাঈদুল ইসলামকেও আসামী করা হয়। পরে তিনি উক্ত মামলা থেকে অব্যাহতি পান। সরকার তাদের আটকাতে না পেরে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা হিসেবে জনাব ইসলামের পড়ালেখা বন্ধ করে দেন। এমতবস্তাই জনাব ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন এবং মামলায় জয়ী হয়ে সুনাম অর্জন করেন। করাচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইতিহাসে অনার্স করেন এবং ১৯৬৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ. ডিগ্রী লাভ করেন।
কর্মজীবনসম্পাদনা
শিক্ষা জীবন শেষে মাঈদুল ইসলাম তাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কাসেম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এ যোগদান করেন। তিনি ঢাকায় পর্যায়ক্রমে শিল্প প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা গড়ে তুলে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা
জিয়াউর রহমান এর আহ্বানে তিনি প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতিতে এসে জাগো দলে যোগ দেন। তিনি রংপুর জেলার জাগো দলের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন রংপুর-১৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২] জিয়াউর রহমানের মন্ত্রীসভায় মন্ত্রী হিসেবে যোগদান করেন তিনি। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রীসভায়ও মন্ত্রী হিসেবে তাকে নিযুক্ত করা হয়। এ মন্ত্রীসভায় ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ছাড়াও নব-গঠিত জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তার উপর অর্পিত হয়।
তিনি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ এর মন্ত্রীসভায় যোগদান করেন এবং ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মন্ত্রী হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, পাট মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।[৩][৪]
মৃত্যুসম্পাদনা
তিনি ১০ মে ২০১৮ সালে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[৪]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ এ কে এম মাঈদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম-৩। "Constituency 27_10th_En"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২২।
- ↑ "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ এ কে এম মাইদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম-৩। "১০ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা (বাংলা)"। www.parliament.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৭।
- ↑ ক খ "এমপি মাইদুল ইসলাম মুকুল আর নেই"। প্রিয়.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৭।