উমেশ চন্দ্র ব্যানার্জী

উমেশ চন্দ্র ব্যানার্জী (১৮ নভেম্বর  ১৯৩৭ – ৫ নভেম্বর  ২০১২) ছিলেন বাঙালি বিচারপতি যিনি ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে  অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হন এবং ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন।[]

উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি
২০০৬ খ্রিস্টাব্দে উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি
Judge of the Supreme Court of India
Chief Justice of the High Court of Judicature at Hyderabad
পূর্বসূরীPrabha Shankar Mishra
উত্তরসূরীManmohan Singh Liberhan
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৮ নভেম্বর ১৯৩৭
মৃত্যু৫ নভেম্বর ২০১২
প্রাক্তন শিক্ষার্থীকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

উমেশচন্দ্র ব্যানার্জির জন্ম ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ নভেম্বর দক্ষিণ কলকাতায় হাজরা রোডের এমন এক পরিবারে যেখানে পুরুষানুক্রমে অনেক প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী ও বিচারপতি হয়েছেন। পিতা নলীনচন্দ্র ব্যানার্জি ছিলেন ফৌজদারী ও সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ ও মাতা বিমলা দেবী। উমেশচন্দ্র  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ  স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে স্নাতক হন। এর পর লন্ডন যান এবং ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে লন্ডনের ইনার টেম্পল থেকে আইনের স্নাতক হন।[][]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

উমেশচন্দ্র ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি নিযুক্ত হন। ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে তিনি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হন এবং ২০০২ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার তথা সার্কের আইন ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং পরে সভাপতি হন।[][]

 
বিচারপতি উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি, ২০০৬ সালের মার্চ নয়াদিল্লিতে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান শ্রী জেপি বাত্রার কাছে গোধরা অগ্নিকাণ্ডের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করছেন

২০০৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি গুজরাতের গোধরায় সাবরমতী এক্সপ্রেসে ৫৯ জন হিন্দু তীর্থযাত্রীর মৃত্যুতে ভারত সরকার নিযুক্ত কমিটির সভাপতি হন। তিনি সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, অগ্নিকাণ্ড দুর্ঘটনাজনিত এবং এটি মুসলিম জনতা ঘটায়নি। কোর্টে এটা প্রমাণিত হয় এই রিপোর্টটি মিথ্যা ছিল। এর পরেও তিনি মিথ্যা মেনে নিতে অস্বীকার করেন।[]

তিনি খড়গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির রাজীব গান্ধী স্কুল অফ ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি ল' র পরামর্শদাতা ও সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজের কলকাতার ন্যাশনাল ল' স্কুল অফ ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির, হায়দ্রাবাদের নালসার ইউনিভার্সিটি অব ল'র পরিচালন সমিতির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও, তিনি নালসার ইউনিভার্সিটি অব ল'র তথা ন্যাশনাল একাডেমী অব লিগ্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।[][]

পরে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে গুজরাত হাইকোর্ট গোধরা ট্রেন দুর্ঘটনায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচারপতি ইউ সি ব্যানার্জির প্যানেলটিকে "অসাংবিধানিক, বেআইনি ও অবৈধ" অভিহিত করে। এই কমিশনের গঠনে গোধরা কাণ্ডের শিকার নীলকান্ত ভাটিয়া নামক এক ব্যক্তি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উল্লেখ করেন যে, আগুন লাগার বিষয় নিয়ে যেহেতু ইতিমধ্যে এক কমিশন গঠন করা হয়েছে। আবেদনকারীর যুক্তিকে সমর্থন করে, বিচারপতি ডি এন প্যাটেলের দেওয়া আদেশে বলা হয়েছে: "রেলওয়ের এমন কোনও কমিটি নিয়োগের ক্ষমতা নেই কারণ, এটি ভারতীয় রেলওয়ে আইনের ধারাগুলির বিধান লঙ্ঘন হয়েছে।"[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Chief Justice & Judges - SUPREME COURT OF INDIA" 
  2. Some Alumni of Scottish Church College in 175th Year Commemoration Volume. Scottish Church College, April 2008. page 593
  3. SAARC Law webpage ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে
  4. "Justice (retired) Umesh C Banerjee passes away"। ৬ নভেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২০ 
  5. "Supreme Court Case Law"। ৮ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২১ 
  6. "Banerjee's findings contrary to facts: Gujarat HC"। ১৩ অক্টো ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২০