উজবেকিস্তানে নারী

উজবেকিস্তানে নারীদের সামাজিক ও আইনি অবস্থান স্থানীয় ঐতিহ্য, ধর্ম, পূর্ববর্তী কালের সোভিয়েত শাসন এবং স্বাধীনতার পর থেকে পরিবর্তনশীল সামাজিক রীতিনীতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।

সন্তান সহ নারী

মাতৃ স্বাস্থ্যসেবা এবং গর্ভনিরোধক প্রাপ্যতা

উজবেকিস্তানে গর্ভনিরোধক এবং মাতৃস্বাস্থ্য পরিষেবার সহজলভ্যতা বিমিশ্রিত। ২০০৩ সালে ৬২.৩% নারী বিনামূল্যে গর্ভনিরোধক ব্যবহার করছিলেন। তবে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, উজবেকিস্তানের প্রায় ১৩.৭ শতাংশ নারী, যারা তাদের পরবর্তী গর্ভধারণ প্রতিরোধ বা বিলম্ব করতে চান, তারা গর্ভনিরোধকের সীমিত প্রাপ্যতার কারণে তা করতে অক্ষম। ২০০০ সালে, দেশটিতে প্রায় ২০,৯০০ জন ধাত্রী ছিল।

জোরপূর্বক নির্বীজন

উজবেকিস্তানে নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণের প্রচলন রয়েছে বলে প্রতিবেদন রয়েছে। ১২ এপ্রিল ২০১২ তে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস "অ্যাসাইনমেন্ট" রিপোর্টে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের প্রচেষ্টায় নারীদের প্রায়শই তাদের অজান্তেই বন্ধ্যাকরণ করা হচ্ছে।

আত্মহত্যা

উজবেকিস্তানে নারীদের মধ্যে আত্মদহন হল আত্মহত্যার একটি সাধারণ ও প্রচলিত ধরন। ২০০১ সালে অনুমান করা হয়েছিল যে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ জন নারী আপত্তিজনক পরিস্থিতির কারণে আত্মহত্যা করে।

পাচার

জাতিসংঘ মানব পাচার রোধে উজবেক সরকারের কিছু প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, পাচারের শিকার ব্যক্তিদের জন্য টেলিফোন হটলাইন উপলব্ধ, এবং পাচারের দায়ে পাচারকারীর পাঁচ থেকে আট বছরের জেল হয়।

যাইহোক, পাচার এখনও অব্যাহত রয়েছে, কারণ উজবেকিস্তান নিজেই পাচার হওয়া নারীদের সরবরাহকারী এবং ভোক্তা দুটোই। 'শাটল' বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হিসাবে পাচার ঘটে থাকে। নারীদের ন্যানি, টিউটর বা বেবি-সিটার হিসাবে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পর্যটক হিসাবে পাঠানো হয়, তবে তারা প্রায়শই যৌন শিল্পে কাজ করে।

নারীদের অর্থনৈতিক সুযোগ

"সোভিয়েত আমলে অর্থনীতিতে লিঙ্গের ভূমিকা পরিবর্তিত হয়েছে এবং স্বাধীনতায় পরিবর্তন অব্যাহত রয়েছে।" যদিও উজবেক রাষ্ট্রে নারীদের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য কর্মসূচি রয়েছে, তবে তাতেও ক্রমাগত সমস্যা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শ্রমবাজারে লিঙ্গ-বিচ্ছিন্নতা বর্তমান, এবং নারীদের সাধারণত কম মজুরি দেওয়া হয়। "অনুৎপাদন খাতে অদক্ষ কর্মীদের কার্যত বেশিরভাগই নারী।" নারীদের রাতের সময় বা ওভারটাইম কাজের জন্যও ব্যবহার করা যায় না। ২০০৩ সাল পর্যন্ত উজবেকিস্তানে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কোনো আইন ছিল না।

প্রতিবন্ধী শিশু বা অনেকগুলো শিশুর মায়েরা ৫০ বছর বয়সে অবসর নিতে পারে, যা অবসর গ্রহণের জন্য নির্ধারিত বয়সের (৫৫) চেয়ে পাঁচ বছর কম।

জোরপূর্বক বিয়ে ও কনে অপহরণ

উজবেকিস্তানের বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে কারাকালপাকস্তানে কনে অপহরণের মাধ্যমে জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনা ঘটে। কনে অপহরণ অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার সাথে জড়িত বলে মনে করা হয়। এর কারণ হিসেবে মনে করা হয়, বিয়ের কাজটি বেশ ব্যয়বহুল কিন্তু অপহরণের ফলে অনুষ্ঠানের খরচ এবং কনের দাম উভয়ই এড়িয়ে যাওয়া যায়। কিছু পণ্ডিত বিবৃত করেছেন যে নিম্নতর শিক্ষা বা মাদক বা অ্যালকোহল সমস্যা সহ কম আকাঙ্ক্ষিত পুরুষদের দ্বারা কনে অপহরণ করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।