উইলিয়াম ফকনার

মার্কিন লেখক

উইলিয়াম কাথবার্ট ফক্‌নার (ইংরেজি: William Cuthbert Faulkner) (/ˈfɔːknər/;[১][২] ((১৮৯৭-০৮-২৫)২৫ আগস্ট ১৮৯৭—জুলাই ৬, ১৯৬২(১৯৬২-০৭-০৬)) একজন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন সাহিত্যিক।

উইলিয়াম ফক্‌নার
১৯৫৪ সালে তোলা আলোকচিত্রে ফকনার
১৯৫৪ সালে তোলা আলোকচিত্রে ফকনার
জন্ম(১৮৯৭-০৯-২৫)২৫ সেপ্টেম্বর ১৮৯৭
নিউ আলবেনি, মিসিসিপি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু৬ জুলাই ১৯৬২(1962-07-06) (বয়স ৬৪)
বাইহেলিয়া, মিসিসিপি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
পেশাঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার
ধরনদক্ষিণ গথিক
সাহিত্য আন্দোলনআধুনিকতাবাদ, চেতনার প্রবাহ
ফকনারের বাড়ি রোয়ান ওক, এখন মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয় রক্ষণাবেক্ষণ করে

জন্ম সম্পাদনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের নিউ আলবেনিতে মারি কাথবার্ট ফকনার এবং মড বাটলার ফকনারের ঘরে ফকনারের জন্ম হয়। ফকনার ছিলেন চার ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড়। [৩] ফকনারের বয়স যখন পাঁচ, তখন তার পরিবার মিসিসিপির অক্সফোর্ড শহরে চলে আসেন। এই শহরেই ফকনার তার জীবনের অধিকাংশ সময় কাটান।[৪]

শিক্ষা ও কর্ম জীবন সম্পাদনা

ফকনার হাইস্কুল শেষ করতে পারেননি। যদিও তিনি একজন বিশেষ ছাত্র হিসেবে মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন, তিনি শিক্ষা সমাপ্ত করতে পারেননি। তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রয়াল এয়ার ফোর্সের কানাডীয় শাখায় স্বল্প সময়ের জন্য যোগ দেন। এর আগে তিনি মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে ওজন ও উচ্চতার অভাবের কারণে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। তবে তিনি যুদ্ধে অংশ নেবার আগেই যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়। যুদ্ধের পর তিনি বিভিন্ন জায়গায় কেরানিগিরি ও বাড়ি নির্মাণের কাজে আয় উপার্জন করতেন।

সাহিত্যিক জীবন সম্পাদনা

ফকনারের সাহিত্যিক জীবন শুরু হয় কবিতা লিখে। এদের কিছু প্রকাশিতও হয়। ১৯২১ সালে তার লেখা একটি নাটক মঞ্চায়িত হয়। ১৯২৪ সালে তার প্রথম কবিতার বই প্রকাশিত হয়। ১৯২৫ সালে তার সাথে শেরউড অ্যান্ডারসনের সাক্ষাৎ হয়। অ্যান্ডারসন তাকে কল্পকাহিনী লিখতে উদ্বুদ্ধ করেন।অন্যান্য মার্কিন লেখকদের অণুসরণ করে ১৯২৫ সালে ফকনার ছয় মাসের জন্য ইউরোপ সফর করে আসেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে তিনি মনোযোগ দিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। ১৯২৬ সালে তার প্রথম উপন্যাস বেরোয়, ১৯২৭ সালে বের হয় দ্বিতীয়টি। সার্টোরিস নামের তৃতীয় উপন্যাসটি ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয়।১৯৩০ ও ১৯৪০—এর দশকের শুরুর দিকে ফকনার চিত্রনাট্যলেখক হিসেবে হলিউড গিয়েছিলেন। জীবনের বাকী সময় তিনি অক্সফোর্ডেই গল্প ও উপন্যাস লিখে কাটিয়ে দেন।

ফকনারের পূর্বপুরুষেরা ১৮শ শতকে স্কটল্যান্ড থেকে আমেরিকায় এসেছিলেন। প্রপিতামহ উইলিয়াম ক্লার্ক ফকনার ছিলেন তরুণ লেখক ফকনারের প্রেরণার উৎস। উইলিয়াম ক্লার্ক মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময় একজন কর্নেল ছিলেন। তিনি রেলপথ নির্মাণ করেন এবং ১৮৮১ সালে একটি জনপ্রিয় রোমান্টিক উপন্যাস লেখেন যার নাম ছিল দ্য হোয়াইট রোজ অভ মেমফিস। এক ব্যবসায়ী অংশীদার তাকে রাস্তায় হত্যা করে। এই ঘটনাটি ফকনার তার সাহিত্যে বিভিন্নভাবে পুনরাবৃত্ত করেছেন। ফকনার তার ১৯২৯ সালে উপন্যাস সার্টোরিস-এর চরিত্র কর্নেল জন স্যান্টোরিসের মডেল হিসেবেও তার প্রপিতামহকে ব্যবহার করেছেন।

ফকনারের সাহিত্যকর্ম সম্পাদনা

ফকনার মোট ১৯টি উপন্যাস ও বহু ছোট গল্প লেখেন। তার বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থও আছে। তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাসগুলি হল দ্য সাউন্ড অ্যান্ড দ্য ফিউরি (১৯২৯), অ্যাজ আই লে ডাইং (১৯৩০), লাইট ইন অগাস্ট (১৯৩২), আবসালোম, আবসালোম! (১৯৩৬), এবং দি আনভ্যাংকুইশ্‌ড (১৯৩৮)।

উপন্যাস সম্পাদনা

ছোট গল্প সম্পাদনা

কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

১৯২৯ সালেই তিনি তাঁর স্কুলজীবনের বান্ধবী লিডা এস্টেল ওল্ডহ্যাম ফ্র্যাংকলিনকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে দুই মেয়ে হয়। এদের একটি শিশু অবস্থায় মারা যায়। ফকনার সৎ ছেলেমেয়েদেরও ভরণপোষণ করতেন।

পুরস্কার সম্পাদনা

১৯৪৯ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। [৫] ১৯৫৫ সালে আ ফেবল নামে প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন ফ্রান্সের উপর লেখা উপন্যাসটির জন্য জাতীয় বই পুরস্কার এবং পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেন। [৬]

মৃত্যু সম্পাদনা

ফকনারের স্বাস্থ্য দুর্বল হতে থাকে এবং বেশ কয়েকবার ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে অনেকগুলি আঘাত পান। এমনই এক আঘাতের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হবার পর হার্ট অ্যাটাকে ১৯৬২ সালের ৬ জুলাই তিনি মারা যান।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Faulkner, William"লেক্সিকো ইউএস ডিকশনারি (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস 
  2. "Faulkner"মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারি (ইংরেজি ভাষায়)। 
  3. MWP: William Faulkner (1897–1962) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে, OleMiss.edu; accessed September 26, 2017.
  4. "Gulf, Mobile and Ohio Railroad"American-Rails.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-২৯ 
  5. Obituary Variety, July 11, 1962.
  6. "Fiction". Past winners & finalists by category. The Pulitzer Prizes. Retrieved 2012-03-28.