ইসলামিয়া কলেজ (পাকিস্তান)
ইসলামিয়া কলেজ, পাকিস্তানের পেশাওয়ারের খাইবার পাখতুনখোয়ার মাঝখানে অবস্থিত একটি পাবলিক সেক্টর ইউনিভার্সিটি।[১]
নীতিবাক্য | رَبِّ زدْنيِ عِلْماً |
---|---|
বাংলায় নীতিবাক্য | হে আল্লাহ, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা হচ্ছে ... |
ধরন | পাবলিক |
স্থাপিত | ১৯১৩ |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | পাকিস্তানের উচ্চ শিক্ষা কমিশন |
আচার্য | খাইবার পাখতুনখওয়ের গভর্নর |
উপাচার্য | অধ্যাপক ড হাবিব আহমেদ |
ডিন | পাঁচটি ডিন |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | প্রায় ৩২৫ |
অবস্থান | , , = ৩৩°৫৯′৫৮.৫″ উত্তর ৭১°২৮′৩৩.৩১″ পূর্ব / ৩৩.৯৯৯৫৮৩° উত্তর ৭১.৪৭৫৯১৯৪° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে |
পোশাকের রঙ | নীল, মরুন |
ওয়েবসাইট | www |
১৯১৩ সালে স্যার এস এ কয়িউম এবং স্যার জর্জ রুস-কেপেলের নেতৃত্বে ব্যক্তিগত উদ্যোগ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, এটি পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষার প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি এবং এর ঐতিহাসিক শিকড় আলীগড় আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় থেকে পাওয়া যায়।[২] বিশ্ববিদ্যালয়টি কলা, ভাষা, মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান এবং আধুনিক বিজ্ঞান এর মত উচ্চতর শিক্ষা প্রদান করে।[২]
ধারণা
সম্পাদনাখাইবার পাখতুনখোয়ার (পূর্ববর্তী এনডব্লিউএফপি) নতুন প্রদেশটি পাঞ্জাব থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে ১৯০১ সালে গঠিত হয়েছিল, পুর্বে সেখানে পুরো প্রদেশে মাত্র একটি কলেজ ছিল, এডওয়ার্ডস কলেজ। মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই অভাবগুলো স্থানীয় যুবকদের উচ্চ শিক্ষার প্রেক্ষিতে দেশের দূরবর্তী অঞ্চলে, ব্রিটিশ ভারত ভ্রমণ করতে বাধ্য করেছিল। এ অঞ্চলে শিক্ষাগত সুযোগের একই অভাব নওয়াব স্যার সাহেবজাদা আবদুল কাইয়ুম এবং স্যার জর্জ রুস-কেপেলকে এমন একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল যা শুধুমাত্র এই অঞ্চলের একাডেমিক প্রয়োজনগুলোই পূরণ করবে না বরং এ অঞ্চলের মানুষকে সুশিক্ষিত ভালো মানুষ ও নেতা হিসেবে তৈরি করবে।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯০৯ সাল নাগাদ, নবাব স্যার সাহেবজাদা আবদুল কাইয়ুম এবং স্যার জর্জ রুস-কেপেল উভয়ে মনের মধ্যে এই প্রদেশের একটি কলেজের ধারণা একেছিলেন এবং একই বছরে তাদের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সফরের মাধ্যমে এটি আরো শক্তিশালী হয়। নবাব সাহেব শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করলেন, বিশেষ করে এনওয়এফপি থেকে যারা সেখানে অধ্যয়নরত ছিল, সেখানে তারা কী সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল এবং কীভাবে তিনি তাদের সাহায্য করতে পারেন সে বিষয়ে। শিক্ষার্থীরা তাকে বলেছিল যে তাদের একটি হোস্টেল দরকার। নবাব সাহেব তাদেরকে জানান, আলীগড়ে তাদের একটি হোস্টেল নির্মাণের পরিবর্তে তিনি পেশাওয়ারে তাদের একটি কলেজ নির্মাণ করবেন।
ফলস্বরূপ, ১২ এপ্রিল, ১২১১ খ্রিষ্টাব্দে পেশোয়ার নবাব সাহেব পেশোয়ার শহরের ঠিকাদার, আবদুল করিমের বাসভবনে সমমনস্ক ব্যক্তিদের একটি বৈঠক আয়োজন করেছিলেন, এতে তেহকলের আরবব গোলাম হায়দার খান খলিল, হাবিবুল্লাহ খান, খুশল খান, সেতি করিম বখশ, স্যার সাহেবজাদা আবদুল কাইয়ুম, খান সাহেব আবদুল মজিদ খান এবং অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। স্যার সাহেবজাদা আবদুল কাইয়ুম দান সংগ্রহের জন্য গতি তরান্বিত করতে পেরেছিলেন, যাতে অবিলম্বে সকল উপস্থিত ব্যক্তিদের নগদ দান দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয়েছিল। মিঞা রহিম শাহ কাকা সভায় নগদ দান করেন, এছাড়াও ছাত্রদের জন্য একটি হোস্টেল তৈরি করারও প্রতিশ্রুতি দেন, যেটি তিনি করেছিলেন এবং এখনও ক্যাম্পাসে 'রহিম শাহ ওয়ার্ড' নামে রয়েছে।
তার তাৎক্ষণিক নগদ দান ছাড়াও, নবাব আরও ৪০০টি গাছের পাশাপাশি ৫ লাখ রুপি এবং ৫ কেজি স্বর্ণের প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়াও নবাব আম্ব ও নবাব মুহাম্মদ খান জামান, সৈয়দ আবদুল জব্বার শাহের অনুরোধে অবদানস্বরূপ নগদ ১০০,০০০ টাকা দেন।
পরবর্তীতে, তেহালালের খলিলের (আরবাব) থেকে কলেজের ভবনটির জন্য একটি বৃহৎ অনুদান নেয়া হয়েছিল। হায়দরাবাদের নিজামের কাছ থেকে সৈয়দ আবদুল জব্বার শাহ সাহেবের মারফত আবদুল কাইয়ামকে কলেজের জন্য দান হিসেবে ১,৫০,০০০ টাকা পাঠানো হয়েছিল।
এই সময়ের সবচেয়ে বিখ্যাত পুখতুন ধর্মীয় নেতা তুরঙ্গজাইয়ের হাজী সাহেবকে, ইসলামিয়া কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার জন্য নওয়াব স্যার সাহেবজাদা আবদুল কাইয়ুম অনুরোধ করেছিলেন। হাজী সাহেব এই অনুরোধে সম্মত হন, তবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তার ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপের জন্য, তাকে ব্রিটিশ কর্তৃক ঘোষিত অপরাধী ঘোষণা করা হয় এবং ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে তার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। তিনি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে বসবাসকারী উপজাতি অঞ্চলে বসবাস করছিলেন, তাই নবাব সাহেব, স্যার জর্জ রুস-কেপেল এবং ব্রিটিশদের, হাজী সাহেবকে একদিনের জন্য ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য রাজী করাতে সমর্থ হন, যাতে তিনি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারেন। ইসলামিয়া কলেজটির জন্য এভাবে অনেকে অনেক রকম প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে অবদান রাখেন। ব্রিটিশরাও এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিলেন যে, হাজী সাহেব ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করার পরে উপজাতীয় অঞ্চলে ফিরে আসবেন। হাজী সাহেব অনুষ্ঠানের জন্য ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে প্রবেশের অনুমতি পান এবং রাতে তেহকলের 'পোখ' মসজিদে কাটিয়েছিলেন। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে স্যার রুশ কেপেল এবং অন্যান্য ব্রিটিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন, তাই হাজী সাহেব তাদের কাছ থেকে, চাদর দিয়ে তার মুখ লুকিয়ে রাখেন এবং তার পরিবর্তে শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিম সেস্থানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার পর হাজী সাহেব তেহকলে যান এবং তারপর উপজাতি অঞ্চলে ফিরে যান।
কয়েদ-ই-আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ইচ্ছা
সম্পাদনা... আমার সমস্ত অবশিষ্ট সম্পত্তি জীবনযাত্রার অবসান বা অন্য কোন অংশে বিভক্ত হওয়ার পরে তিন ভাগে বিভক্ত করা হবে - এবং আমি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অংশ দান করেছি - ইসলামিয়া কলেজ পেশোয়ারের এক অংশ এবং করাচিতে সিন্ধু মাদ্রাসার এক অংশ ...
কায়েদে-আজম এর ইচ্ছায়, বোম্বে, ৩০ মে, ১৯৩৯
১২ এপ্রিল, ১৯৪৮ সালে কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "আমি আপনাদের বলতে চাই, পেশোয়ারের মতো জায়গায় সংস্কৃতি এবং শেখার একটি মহান কেন্দ্রের চেয়ে আমার হৃদয়ের কাছে আরও কিছু নেই, যেখান থেকে জ্ঞান ও সংস্কৃতির বিকিরণ মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়াজুড়ে বিস্তৃত হতে পারে।"
লব্ধ সম্পত্তি
সম্পাদনাট্রাস্টি বোর্ডের মতে, ৩০০ একর জমিতে বিস্তৃত কলেজটি হরিচাঁদ, রায় কিলি ও টার্নাব (জেলা চরসাদ্দ) মধ্যে ১০৯৮ জারীব চাষযোগ্য জমি রয়েছে। এছাড়া খাইবার বাজার পেশোয়ার ও প্রধান বাজার চরসাদ্দায় ৩৯৫টি দোকান ও ফ্ল্যাট রয়েছে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Location and address of ICP"। ICP location। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ ক খ http://www.icp.edu.pk/page.php?abc=201412080154134। "History of Islamia College University"। History of Islamia College University। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৫।