আল মাদ্রাসাতুল জামহুরিয়া কামিল মাদ্রাসা
আল মাদ্রাসাতুল জামহুরিয়া কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার সদর উপজেলার একটি আলিয়া মাদ্রাসা। তৎকালীন পাবনা জেলার মহকুমা কর্মকর্তা পিএ নাজির ১৯৫৭ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসাটির দাখিল ও আলিম স্তর সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে এবং ফাজিল ও কামিল স্তর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচালিত হয়ে থাকে।[১] মাদ্রাসার ইআইআইএন কোড হলো ১২৪২১১, এমপিও কোড হলো ৮৪০৫০১২৪০১ এবং মাদ্রাসা কোড হলো ১৩১৫৯ যা মাদ্রাসাকে সরকার কর্তৃক চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।[২] মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মো. আখতার হোসেন এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১৫০ জন। মাদ্রাসাটি প্রায় ৫.৯০ একর জমির উপরে অবস্থিত।
ধরন | এমপিও ভুক্ত |
---|---|
স্থাপিত | ১ জানুয়ারি ১৯৫৭ |
প্রতিষ্ঠাতা | পিএ নাজির |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া (২০০৬- ২০১৬) ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান) |
অধ্যক্ষ | মো. আখতার হোসেন |
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তি | বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড |
শিক্ষার্থী | আনু. ১১৫০ |
ঠিকানা | পটুয়াপাড়া , , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে, ৫.৯০ একর |
EIIN সংখ্যা | ১২৪২১১ |
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাটমিন্টন |
ওয়েবসাইট | http://124211.ebmeb.gov.bd/ |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৫০ দশকে নাটোর জেলা পাবনা জেলার অধীনে একত্রিত ছিলো, সেই সময় পাবনা জেলার প্রধান মহকুমা কর্মকর্তা ছিলেন পিএ নাজির। তিনি নাটোর অঞ্চলে ইসলামি শিক্ষা বিস্তারের চিন্তা করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৭ সালে তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেন স্থানীয় পটুয়াপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল কাদের। এবং গ্রামের সকলে মিলে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতা করেন। প্রাথমিক অবস্থায় এই মাদ্রাসাটি একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা হিসাবে যাত্রা শুরু করে, যেখানে শুধু কুরআন শুদ্ধ করে তিলাওয়াত শেখানো হতো। পরে ধীরে ধীরে আলিয়া সিলেবাস অনুসরণ করতে শুরু করে এবং একটি আলিয়া মাদ্রাসায় রূপান্তরিত হয়।[৩]
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পরে দ্রুতই পূর্ব পাকিস্তান মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে। এরপরে ১৯৬২ সালে মাদ্রাসাটি দাখিল স্তরের মাদ্রাসা হিসাবে যাত্রা শুরু করে। এরপরে তৎকালীন অধ্যক্ষ সরকারি অফিসারের প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটি ১৯৬৭ সালে একবারে আলিম ও ফাজিল স্তরের অনুমোদন লাভ করে। এরপরে ২০০০ সালে মাদ্রাসাটি কামিল শ্রেণীর অনুমোদন লাভ করে ও ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়। এরপরে ২০০৬ সালে সরকার ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করার জন্য আলিয়া মাদ্রাসা অধিভুক্ত করে। এরপরে মাদ্রাসাটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬ সংশোধনী অনুসারে ফাজিল ও কামিলের অধিভুক্তি লাভ করে। এরপরে ২০১৬ সালে মাদ্রাসাটি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানান্তরিত হয়।
শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনামাদ্রাসাটিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিশু শ্রেণী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ শ্রেণী কামিল পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। মাদ্রাসাটি দাখিল ও আলিম পর্যায়ে সাধারণ ও বিজ্ঞান বিভাগ চালু রয়েছে। ১৯৮৩ সালে দাখিল স্তরে ও ১৯৮৫ সালে আলিম স্তরে বিজ্ঞান বিভাগ চালুর অনুমতি পায়। মাদ্রাসার ফাজিল স্তরে কুরআন, হাদিস বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে এবং কামিল স্তরে হাদিস ও তাফসীর বিভাগ চালু রয়েছে। মাদ্রাসাটিতে ৩২ জন শিক্ষক, ১০ জন কর্মচারী এবং ১১৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
মাদ্রাসাটিতে রোভার স্কাউট চালু রয়েছে,[৪] বিতর্ক প্রতিযোগিতা, খেলাধুলায় অংশগ্রহণসহ নানা সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আয়োজনে অংশগ্রহণ করে থাকে। মাদ্রাসাটি থেকে প্রাইভেটভাবে আলিম বা ফাজিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়।[৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জামহুরিয়া মাদ্রাসায় নোটিশ" (পিডিএফ)। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। ৭ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২৩।
- ↑ "আল মাদ্রাসাতুল জামহুরিয়া কামিল মাদ্রাসা, নাটোর সদর, নাটোর"। সহপাঠি ওয়েবসাইট। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২৩।
- ↑ "AL MADRASATUL JAMHURIA KAMIL MADRASAH"। 124211.ebmeb.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৯।
- ↑ "১১৩২ নং আল-মাদ্রাসাতুল জামহুরিয়া কামিল মাদ্রাসা রোভার ইউনিট | বাংলাদেশ স্কাউটস"। service.scouts.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৯।
- ↑ "প্রাইভেটভাবে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ মাদ্রাসার তালিকা - বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড" (পিডিএফ)। দৈনিক শিক্ষা ওয়েবসাইট। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২৩।