আলী বিতচিন মসজিদ

আলজেরিয়ার একটি মসজিদ

আলী বিতচিন মসজিদ (আরবি: مسجد علي بتشين, বা জাওজ ইউয়ুন মসজিদ (আরবি: جامع زوج عيون) আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সের একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। মসজিদটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান আলজিয়ার্সের কসবাহ-এর অভ্যন্তরে অবস্থিত। এটি বাব আল-ওয়াদি স্ট্রিট এবং নিম্ন কাসবাহ-এর সংযোগস্থলে অবস্থিত।

আলী বিতচিন মসজিদ
২০১৬ সালের আলী বিতচিন মসজিদের মিনারের কাজ চলমান
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
অবস্থান
অবস্থানআলজিয়ার্স
 আলজেরিয়া
আলী বিতচিন মসজিদ আলজেরিয়া-এ অবস্থিত
আলী বিতচিন মসজিদ
আলজেরিয়ায় অবস্থান
স্থানাঙ্ক৩৬°৪৭′১৩″ উত্তর ৩°০৩′৪৩″ পূর্ব / ৩৬.৭৮৭০৩৩৭° উত্তর ৩.০৬১৯১০৬° পূর্ব / 36.7870337; 3.0619106
স্থাপত্য
ধরনমসজিদ

ইতিহাস সম্পাদনা

প্রথম জীবনে আলী বিতচিন পিকানিনো নামক একজন অমুসলিম ছিলেন। তিনি ১৬৩০ সাল থেকে ১৬৪৬ সাল পর্যন্ত আলজেরিয়ার নৌবাহিনীর বহরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৫৯৯ সালে তিনি জাহাজের মালিক ফতুল্লা খোজার মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং আলী বিতচিন নামটি বেছে নিয়েছিলেন। এরপরে তিনি ১৬২২ সালে উসমানীয় স্থাপত্য রীতি অনুসারে মসজিদটি নির্মাণের নির্দেশ দেন। মসজিদটিতে একটি ১৫ মিটার উঁচু মাগরিবি স্থাপত্য রীতি (মুরিশ স্থাপত্য) অনুসারে নির্মিত একটি মিনার ছিল।[১]

প্রথমদিকে মসজিদটির আয়তন ছিল ৫০০ বর্গমিটার। তৎকালীন তিনতলা বিশিষ্ট ওই মসজিদটিতে ছিল তিনটি নামাজের কক্ষ, একটি বেকারি, হাম্মাম, কারখানা এবং একটি সরাইখানা। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ রাজনীতিবিদ এবং ধর্মীয় নেতারা এই সরাইখানাটি ব্যবহার করেছিলেন। এই মসজিদের হাম্মামটি বিশেষত জনপ্রিয় ছিল এবং আলজেরিয়ায় ফরাসী দখলদারিত্ব শুরুর দু'বছর অবধি এটি সক্রিয় ছিল। মসজিদটি কাসবাহ-এর বাণিজ্যিক অঞ্চলে অবস্থিত। মসজিদটির চারপাশে অনেকগুলি দোকান ছিল। ১৭০৩ সালে তৎকালীন গভর্নর এর নাম অনুসারে মসজিদটির সংক্ষিপ্ত নাম রাখা হয় সিদি আল-মাহদী মসজিদ[১]

ফরাসি দখলদারিত্বের সময় মিনারটির উচ্চতা হ্রাস করে ১২ মিটার করা হয়।[২] ফরাসিরা ১৮৩৩ সালে মসজিদটিকে চার্চে পরিণত করার আগে একে সামরিক ফার্মাসি সেন্টারে রূপান্তরিত করেছিল। এর ফলে ইসলামি স্থাপত্য শৈলীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য মসজিদটি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ফরাসী দখলদাররা কেতচাউয়া মসজিদের একটি দরজা অপসারণ করে এই গির্জায় রূপান্তরিত মসজিদের সাজসজ্জা কাজে ব্যবহার করেছিল।[১][৩] কাসবাহের অন্যান্য ২১টি মসজিদের সাথে এই মসজিদটিরও কিছু ইসলামি বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন ও রূপান্তরিত করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ মসজিদটির ওযুখানা বাদ দেওয়া হয়েছিল এবং এর মিহরাব পরিবর্তন করা হয়েছিল।[২] আলজেরিয়ার স্বাধীনতার পর মসজিদের মিনার থেকে খ্রিস্টান ক্রুশ অপসারণের মাধ্যমে একে পুনরায় মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে।[১]

ধারণক্ষমতা সম্পাদনা

প্রথমদিকে মসজিদটিতে মোট ৫০০ জন মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পারতো। ২০১০ সালে মসজিদটি সংস্কারের সময় মসজিদটি ধারণক্ষমতা আরও ৩০০ জনে বাড়ানো হয়েছে; অর্থাৎ বর্তমানে মোট ৭০০ জন মানুষ একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "مسجد علي بتشين .. حكاية إسلام أميرال إيطالي بالجزائر"আল ওয়াতান (আলজেরীয় আরবি ভাষায়)। মে ২, ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৭, ২০১৯ 
  2. ترميم مسجد علي بتشين (الجزائر): إعادة فتح القاعة المخصصة للصلاة ابتداء من أول أيام شهر رمضان . Dhazairess. Retrieved January 8, 2018.(আলজেরীয় আরবি ভাষায়)
  3. المساجد والقصور العثمانية في الجزائر...ماذا بقي منها؟. টার্কি প্রেস. Retrieved January 8, 2018. (আলজেরীয় আরবি ভাষায়)
  4. مسجد علي بتشين وسيدي رمضان يلمَّان شمل المصلين بعد غياب طويل. Djazairess. Retrieved January 7, 2018.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  •   উইকিমিডিয়া কমন্সে Ali Bitchin Mosque সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।