আলাউদ্দিন আল আজাদ

বাংলাদেশি সাহিত্যিক

আলাউদ্দিন আল আজাদ (জন্ম : ৬ মে, ১৯৩২ - মৃত্যু : ৩ জুলাই, ২০০৯) বাংলাদেশের খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, কবি, নাট্যকার, গবেষক ও অধ্যাপক। আশাবাদী সংগ্রামী মনোভাব তাঁর রচনার বৈশিষ্ট্য। বর্তমান নাগরিক জীবনের বিকার উপস্থাপনে আগ্রহী।[১] তিনি ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস তেইশ নম্বর তৈলচিত্র ১৯৬০ সালে ছাপা হয়।

আলাউদ্দিন আল আজাদ
Alauddin Al Azad.jpg
জন্ম৬ মে, ১৯৩২
মৃত্যু৩ জুলাই, ২০০৯
জাতীয়তাবাংলাদেশি
নাগরিকত্ববাংলাদেশ Flag of Bangladesh.svg
পরিচিতির কারণঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, কবি, নাট্যকার, গবেষক
পুরস্কারএকুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার

জীবনীসম্পাদনা

আলাউদ্দিন আল আজাদ ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের ৬ মে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা : গাজী আব্দুস সোবহান; মাতা : মোসাম্মাৎ আমেনা খাতুন; স্ত্রী : জামিলা আজাদ। প্রবেশিকা : নারায়ণপুর শরাফতউল্লাহ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়, রায়পুরা (১৯৪৭)। উচ্চ মাধ্যমিক (কলা) : ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (১৯৪৯) তিনি ১৯৫৩ ও ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি সরকারি কলেজের অধ্যাপনা পেশায় যুক্ত হন। তিনি নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ (১৯৫৫), ঢাকা জগন্নাথ কলেজ (১৯৫৬-৬১), সিলেট এমসি কলেজ (১৯৬২-৬৮) এবং চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ (১৯৬৪-৬৭)-এ অধ্যাপনা করেন। তিনি ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন এক বছর (১৯৭৪-৭৫) এবং পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। পেশাগত জীবনে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসে সংস্কৃতি উপদেষ্টা, শিক্ষা সচিব, সংস্কৃতিবিষয়ক বিভাগ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ঈশ্বরগুপ্তের জীবন ও কবিতা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৯ এর ৩রা জুলাই শুক্রবার রাতে ঢাকার উত্তরায় নিজ বাসভবন রত্নদ্বীপে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।

লেখার ধরণসম্পাদনা

আলাউদ্দিন আল আজাদ একজন শাণিত ভাষার লেখক ছিলেন। তিনি ছিলেন বাস্তব জীবনের রূপকার। বাস্তবতার রূপ পরিগ্রহ করেছে তার ভাষা নির্মাণে। সংস্কৃতাশ্রয়ী শব্দ তিনি পরিহার করেছেন বলা চলে। তিনি প্রধানত মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের রূপকার। তার গল্প নাতিদীর্ঘ। [২]

গ্রন্থ তালিকাসম্পাদনা

উপন্যাসসম্পাদনা

  • তেইশ নম্বর তৈলচিত্র (১৯৬০)
  • শীতের শেষরাত বসন্তের প্রথম দিন (১৯৬২)
  • কর্ণফুলী (১৯৬২)
  • ক্ষুধা ও আশা (১৯৬৪)
  • খসড়া কাগজ (১৯৮৬)
  • শ্যাম ছায়ার সংবাদ (১৯৮৬)
  • জ্যোৎস্নার অজানা জীবন (১৯৮৬)
  • যেখানে দাঁড়িয়ে আছি (১৯৮৬)
  • স্বাগতম ভালোবাসা (১৯৯০)
  • অপর যোদ্ধারা (১৯৯২)
  • পুরানা পল্টন (১৯৯২)
  • অন্তরীক্ষে বৃক্ষরাজি (১৯৯২)
  • প্রিয় প্রিন্স (১৯৯৫)
  • ক্যাম্পাস (১৯৯৪)
  • অনূদিত অন্ধকার (১৯৯১)
  • স্বপ্নশীলা (১৯৯২)
  • কালো জ্যোৎস্নায় চন্দ্রমল্লিকা (১৯৯৬)
  • বিশৃঙ্খলা (১৯৯৭)

গল্পসম্পাদনা

  • জেগে আছি (প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ)
  • ধানকন্যা
  • মৃগণাভি
  • অন্ধকার সিঁড়ি
  • উজান তরঙ্গে
  • যখন সৈকত
  • আমার রক্ত স্বপ্ন আমার

কবিতাসম্পাদনা

  • মানচিত্র
  • ভোরের নদীর মোহনায় জাগরণ
  • সূর্য জ্বালার স্বপন
  • লেলিহান পান্ডুলিপি
  • স্মৃতিস্তম্ভ

নাটকসম্পাদনা

  • নরকে লাল গোলাপ : মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক
  • এহুদের মেয়ে
  • মরোক্কোর জাদুকর
  • ধন্যবাদ
  • মায়াবী প্রহর
  • সংবাদ শেষাংশ

রচনাবলীসম্পাদনা

  • শিল্পের সাধনা

স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর লেখা বইসম্পাদনা

  • ফেরারী ডায়েরী (১৯৭৮)

গ্রন্থসূত্রসম্পাদনা

  • বাঙলা একাডেমী লেখক অভিধান, ২০০৭, ঢাকা।

পুরস্কারসম্পাদনা

  • বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৬৪
  • ইউনেস্কো পুরস্কার ১৯৬৫
  • জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ১৯৭৭
  • আবুল কালাম শামসুদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৩
  • আবুল মনসুর আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৪
  • লেখিকা সংঘ পুরস্কার ১৯৮৫
  • রংধনু পুরস্কার ১৯৮৫
  • অলক্তা সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৬
  • একুশে পদক ১৯৮৬
  • শেরে বাংলা সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৭
  • নাট্যসভা ব্যক্তিত্ব পুরস্কার ১৯৮৯
  • কথক একাডেমী পুরস্কার ১৯৮৯
  • দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ স্বর্ণ পদক ১৯৯৪

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবু জাফর ও আবুল কাসেম ফজলুল হক সম্পাদিত; কবিতা সংগ্রহ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; জুলাই ১৯৯০; পৃষ্ঠা- ৪৮৩- ৪৮৪।
  2. আলাউদ্দিন-আল আজাদ -বাংলাদেশের ছোট গল্প। ঢাকা: সৈয়দ জাকির হোসাইন। ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭। পৃষ্ঠা ২৩১–২৩৩। 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা