আর্মেনীয় গির্জা

আর্মেনীয় গির্জা পুরান ঢাকার একটি প্রাচীন খ্রিস্টধর্মীয় উপাসনালয়। এটি ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি পুরানো ঢাকার আর্মানিটোলায় অবস্থিত।ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকে ঢাকায় অনেক আর্মেনীয় ব্যক্তির আগমন ঘটে। গীর্জা নির্মাণের পূর্বে ঐ স্থানে ছিলো আর্মেনীয়দের একটি কবরস্থান। এই গির্জার জন্য জমি দান করেন আগা মিনাস ক্যাটচিক। ১৮৮০ সালে আর্থিক অনটনে পড়ে গির্জার ঘণ্টাটি বাজানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে গির্জার ঘড়িঘর বিধ্বস্ত হয়। গির্জার অঙ্গনে আর্মেনীয়দের কবরস্থান অবস্থিত।[১]

আর্মেনীয় গির্জা বা আর্মেনিয়ান চার্চ, ২০১৭।
১৭৮১ সালে নির্মিত গির্জাটির ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক

নির্মাণকালসম্পাদনা

আর্মেনীয় গির্জাটি আরমানিটোলাস্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এর মাঝে চার্চ রোডে অবস্থিত। অষ্টাদশ শতকে পুরান ঢাকার আর্মেনীয় বসতি থেকেই গির্জাটি আর্মেনীয় গির্জা নামে পরিচিত হয়। একটি প্রাচীন প্রতিষ্ঠাফলক থেকে জানা যায় গির্জাটি ১৭৮১ সালে নির্মিত হয়েছিল। গির্জার ঘণ্টাঘরের পাশে ক্লক টাওয়ার হিসেবে একটি সুদৃশ্য গির্জাচূড়া ১৮৩৭ সালে নির্মাণ করা হয় যা ১৮৯৭ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ভেঙে পড়ে।

ইতিহাসসম্পাদনা

১৭৮১ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে গির্জার স্থানটিতে একটি কবরস্থান ছিল। আগা ক্যাটচিক মিনাস (Aga Catchick Minas) গির্জার জন্য এই জমিটি দান করেন। তাঁর স্ত্রী সোফি ১৭৬৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে গির্জায় সমাধিস্থ করা হয়। লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডেভিডসন ১৮৪০ সালে গির্জাটি পরিদর্শন করেন এবং সেখানে বড়দিন উদ্‌যাপন প্রত্যক্ষ করেন।[২]

গঠনশৈলীসম্পাদনা

গির্জার মূল ভবনটিতে ১৪ ফুট প্রশস্ত আঙিনা রয়েছে। আয়তাকার ভবনটি তিনটি অংশে বিভক্ত- একপাশে রেলিংবেষ্টিত উচ্চ বেদী, একটি কেন্দ্রীয় প্রার্থনাগৃহ এবং নারী ও শিশুদের জন্য সংরক্ষিত গ্যালিরিযুক্ত একটি অংশ। ১০ ফুট উঁচু বেদীটি সম্ভবত কাঠের তৈরি। বেদীটি দেয়াল থেকে ৪ ফুট দূরবর্তী অর্ধবৃত্তাকার গম্বুজবিশিষ্ট ছাদের নিচে স্থাপিত। [৩]

চিত্রশালাসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. মামুন, মুনতাসির। ঢাকা - স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী। ঢাকা: আগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৩১। 
  2. Bengal Past and Present, Volume 8, 1931, page 39-41
  3. BUILDINGS OF THE BRITISH RAJ IN BANGLADESH, by Najimuddin Ahmed, edited by John Sanday, THE UNIVERSITY PRESS LIMITED, November1986 first edition, page number 33-34