আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী

ভারতের রাজস্থান রাজ্যে অবস্থিত পর্বতমালা
(আরাবল্লী পর্বত থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী হল ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিকে বিস্তৃত একটি পর্বতশ্রেণী, যেটি প্রায় ৬৯২ কিমি (৪৩০ মাইল) লম্বা। এটি উত্তর ভারতের দিল্লি থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ হরিয়ানা পার হয়ে,[১] পশ্চিম ভারতের রাজস্থান রাজ্য পার হয়ে গুজরাতে গিয়ে শেষ হয়েছে।[২][৩] মাউন্ট আবু হল এই পর্বতশ্রেণীর সর্বোচ্চ চূড়া। এর উচ্চতা ৫৬৫০ ফুট

আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী
রাজস্থানের আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী
সর্বোচ্চ বিন্দু
শিখরগুরু শিখর, আবু পর্বত
উচ্চতা১,৭২২ মিটার (৫,৬৫০ ফুট)
স্থানাঙ্ক২৪°৩৫′৩৩″ উত্তর ৭৪°৪২′৩০″ পূর্ব / ২৪.৫৯২৫০° উত্তর ৭৪.৭০৮৩৩° পূর্ব / 24.59250; 74.70833
মাপ
দৈর্ঘ্য৬৯২ কিলোমিটার (৪৩০ মাইল)
নামকরণ
উচ্চারণহিন্দুস্তানি উচ্চারণ: [ aa ra vli]
ভূগোল
ভারতের স্থান বিষয়ক মানচিত্রে আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী
দেশভারত
রাজ্যরাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লি এবং গুজরাত
অঞ্চলউত্তর ভারত, পশ্চিম ভারত
নদী সমূহবানস, লুনি, সখী এবং সবরমতী
জনবসতিদিল্লি, গুরুগ্রাম, আবু পর্বত
রেঞ্জের স্থানাঙ্ক২৫°০০′ উত্তর ৭৩°৩০′ পূর্ব / ২৫° উত্তর ৭৩.৫° পূর্ব / 25; 73.5
ভূতত্ত্ব
পর্বতবিদ্যাআরাবল্লী-দিল্লি ওরোজেন
শিলার বয়সপ্রাক্-ক্যাম্ব্রিয়ান
শিলার ধরনভূত্বকীয় পাত সংস্থান তত্ত্ব থেকে ভঙ্গিল পর্বত

ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা

আরবল্লী কথাটি, সংস্কৃত শব্দ "আরা" এবং "ভালি" থেকে এসেছে, এর আক্ষরিক অর্থ "শিখরের শ্রেণী"[৪][৫]

প্রাকৃতিক ইতিহাস সম্পাদনা

ভূতত্ত্ব সম্পাদনা

 
ভারতের শীর্ষস্থানীয় পর্বতমালার মানচিত্র, উত্তর-পশ্চিম ভারতে আরাবল্লী

আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী, প্রাচীন একটি ক্ষয়িষ্ণু পর্বত, এবং ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত মালার একটি।[৬] আরাবল্লী পর্বতশ্রেণীর প্রাকৃতিক ইতিহাস অনেক প্রাচীন সময়ের, যখন ভারতীয় পাত, ইউরেশীয় পাত থেকে, সমুদ্র দ্বারা পৃথক হয়ে যাচ্ছিল। উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রোটেরোজিক আরাবল্লী-দিল্লির অরোজেনিক বলয়টি, উপাদান অংশ হিসাবে, মেসোজোইক - সেনোজোইক যুগের (ফ্যানেরোজোইকের) হিমালয় জাতীয় পর্বতের অরোজেনিক বলয়ের সমান, এবং মনে হয় একটি প্রায়-সুশৃঙ্খল উইলসন সুপার মহাদেশীয় চক্রের ঘটনাগুলির মধ্য দিয়ে গেছে। পর্বতমালাটি প্রাক্-ক্যাম্ব্রিয়ান সময়ে বেড়েছে, যাকে আরাবল্লী - দিল্লি ওরোজেন বলা হয়। আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী একটি উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রবণ ওরোজেনিক বলয়, যা ভারতীয় উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি ভারতীয় সরক্ষা বলয়ের একটি অংশ যেটি ক্রেটনীয় সংঘর্ষের একটি ক্রম থেকেই গঠিত হয়েছিল।[৭] প্রাচীন কালে, আরাবল্লী অনেকটা উঁচু ছিল কিন্তু কয়েক কোটি বছরের মৃত্তিকা আবহবিকারে প্রায় সম্পূর্ণ ভগ্ন হয়ে পড়েছে, যেখানে তরুণ ভঙ্গিল পর্বতমালা হিমালয় এখনও অবিরত বাড়ছে। আরাবল্লী, পুরানো ভঙ্গিল পর্বতমালা হওয়ায়, এর বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে গেছে। এর নিচে পৃথিবীর ভূত্বকে ভূত্বকীয় পাতের চলাচল বন্ধ হওয়ার ফলে ঊর্ধ্বমুখী চাপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। প্রাচীন পৃথিবীর ভূত্বকের দুটি অংশকে মিলিয়েছে আরাবল্লী, যেটি বৃহত্তর ভারতীয় ক্রেটন তৈরী করেছে। পৃথিবীর ভূত্বকের মারওয়ার বিভাগ হল আরাবল্লী ক্রেটন, যেটি আরাবল্লী পর্বতমালার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এবং পৃথিবীর ভূত্বকের বুন্দেলকান্দ ক্রেটন অংশ আরাবল্লী পর্বতমালার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। ক্রেটনগুলি, সাধারণত ভূত্বকীয় পাতের অভ্যন্তরে পাওয়া যায়, এগুলি মহাদেশীয় অশ্মমণ্ডলের পুরানো এবং স্থিতিশীল অংশ। এগুলি মহাদেশগুলির একীকরণ এবং ফাটল ধরার চক্র চলাকালীন অপেক্ষাকৃত অপরিবর্তিত রয়েছে।

 
অন্ত: সাগরীয় অধোগমনের আগ্নেয়গিরির চাপ এবং ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া
 
আক্রমণে উদ্যত ভারতীয় চিতাবাঘ

জলবায়ু সম্পাদনা

দিল্লি এবং হরিয়ানায়, উত্তর আরাবল্লী পর্বতমালা অঞ্চলে আর্দ্র গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু এবং উত্তপ্ত অর্ধ-শুষ্ক মহাদেশীয় জলবায়ু রয়েছে। এখানে গ্রীষ্মকালে খুব গরম থাকে, এবং শীতকালে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকে।[৮] হিসারের জলবায়ুর মূল বৈশিষ্ট্য হল শুষ্কতা, চূড়ান্ত তাপমাত্রা এবং অল্প বৃষ্টিপাত।[৯] গ্রীষ্মের সময় দিনের সর্বাধিক তাপমাত্রা ৪০ এবং ৪৬ °সে (১০৪ এবং ১১৫ °ফা) এর মধ্যে পরিবর্তিত হয়। শীতের সময়, এটি ১.৫ এবং ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে ওঠানামা করে।[১০]

রাজস্থানে মধ্য আরাবল্লী পর্বতমালা অঞ্চলে রৌদ্রদগ্ধ ও শুষ্ক আবহাওয়া রয়েছে।

বাস্তুসংস্থান সম্পাদনা

বন্যজীবন সংযোগ সম্পাদনা

ভারতের সবুজ প্রাচীর সম্পাদনা

"আরাবল্লীর বিশাল সবুজ প্রাচীর" হল গুজরাত থেকে দিল্লি পর্যন্ত আরাবল্লী পর্বতমালা জুড়ে ১,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৫ কিলোমিটার প্রশস্ত সবুজ পরিবেশগত অঞ্চল, এটি শিবালিক পার্বত্য পরিসরের সাথে সংযুক্ত হবে এবং ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ১.৩৫ বিলিয়ন (১৩৫ কোটি) নতুন স্থানীয় গাছ লাগিয়ে এই অঞ্চলে বনাঞ্চলের পুনর্বাসন করা হবে। এটি আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির বিশাল সবুজ প্রাচীরের অনুরূপ ধারণার উপর বাস্তবায়িত, এটি দূষণের বিরুদ্ধে প্রাচীর হিসাবে কাজ করবে, যার ৫১% ঘটে শিল্প দূষণের কারণে, ২৭% যানবাহন দ্বারা, ৮% ফসল পোড়ানোর জন্য এবং দীপাবলির আতশবাজি দ্বারা ৫%।[১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Aravalli Biodiversity Park, Gurgaon"। ২৮ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. Kohli, M.S. (২০০৪), Mountains of India: Tourism, Adventure, Pilgrimage, Indus Publishing, পৃষ্ঠা 29–, আইএসবিএন 978-81-7387-135-1 
  3. Dale Hoiberg; Indu Ramchandani (২০০০)। "Aravali Range"Students' Britannica India। Popular Prakashan। পৃষ্ঠা 92–93। আইএসবিএন 978-0-85229-760-5 
  4. George Smith (১৮৮২)। The Geography of British India, Political & Physical। J. Murray। পৃষ্ঠা 23। 
  5. "Aravali Range"। Britannica.com। 
  6. Roy, A. B. (1990). Evolution of the Precambrian crust of the Aravalli Range. Developments in Precambrian Geology, 8, 327–347.
  7. Mishra, D.C.; Kumar, M. Ravi. Proterozoic orogenic belts and rifting of Indian cratons: Geophysical constraints. Geoscience Frontiers. 2013 March. 5: 25–41.
  8. "Climate of Hisar"। PPU। ৫ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১২ 
  9. "Climate of Hisar"। District Administration, Hisar। ২৭ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১২ 
  10. "More snowfall in Himachal"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৬ 
  11. Want govt to build 1600 km green wall along Aravalli, Indian Express, 24 December 2019.

আরো পড়ুন সম্পাদনা

  • Watershed Management in Aravali Foothills, by Gurmel Singh, S. S. Grewal, R. C. Kaushal. Published by Central Soil & Water Conservation Research & Training Institute, 1990.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:GeoSouthAsia