ভঙ্গিল পর্বত
'ভঙ্গিল পর্বত' মূলতঃ ভূ-পৃষ্ঠের কোনো অংশে প্রবল পার্শ্ব চাপের ফলে ভু-ভাগে মাঝখানের অংকটি উঁচু হয়ে ওঠে এবং সৃষ্টি হয় ভঙ্গিল পর্বত।
সৃষ্টির কারণ
সম্পাদনাভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির কারণ হলো ভূ-ত্বকের শিলারাশিতে প্রবল পার্শ্ব চাপ। তবে এই পার্শ্ব চাপের উদ্ভব ঠিক কীভাবে ঘটেছে সেই সম্পর্কে অবশ্য ভূ-ত্ত্ববিদগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। এই সম্পর্কিত প্রধান প্রধান ধারণাগুলো হলোঃ
- পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থঃ শিলাসমূহের তাপ হ্রাসের হারের পার্থক্য -
উত্তপ্ত পৃথিবীর শীতলতা লাভের সময় এর শিলাসমূহের গাঠনিক ও ভৌতগুণাবলীর ভিন্নতার কারণে কোনো কোনো শিলা বা স্থান অধিক দ্রুত শীতল হলেও এর পার্শ্ববর্তী শিলা বা স্থানগুলো তখনও উত্তপ্ত অবস্থায় থাকার ফলে তাদের মধ্যে একপ্রকার টানের সৃষ্টি হয়; যার ফলে এধরনের স্থানগুলোতে অসমান ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।
- ভাসমান ভূ-ভাগ বিষয়ক মতবাদ -
আলফ্রেড ওয়েগনার তার ভাসমান ভূ-ভাগ বিষয়ক ধারনায় এই মতবাদ ব্যক্ত করেন যে, পৃথিবীর প্রধান প্রধান প্লেটগুলো সর্বদা সচল থাকার ফলে যখন সেগুলো পরস্পর সন্নিকটবর্তী হয় তখন তাদের পার্শ্ব-সীমাস্থঃ ভূ-ভাগ প্রবল চাপে উথ্খিত ও অবনত হয়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি করে।
- ভূ-আন্দোলনের ফলে -
ভূ-অভ্যন্তরে বা এর বহিঃভাগে নানাবিধ কারণে ভূ-আলোড়নের সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো এসকল প্রবল ভূ-আন্দোলনের ফলে শিলা সমূহে প্রবল চাপ পড়ে, ফলে সেসব স্থানের ভূ-ভাগে উন্নতি-অবনতির দ্বারা ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়।
- ভূ-অভ্যন্তরে বিভিন্ন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফলে -
ভূ-অভ্যন্তরে বিভিন্ন তেজষ্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি, পানির প্রবেশ, তাপমাত্রার হ্রাস বা বৃদ্ধি, চাপের হ্রাস বা বৃদ্ধি প্রভৃতি কারণে সাম্যাবস্থার বিপর্যয় ঘটে এবং এর ফলে ভূ-পৃষ্ঠের উর্দ্ধাংশে ভাজের সৃষ্টি হয়।
- পাললিক শিলার সঞ্চয়নের ফলে -
নিম্নভূমিতে পাললিক শিলার সঞ্চয়নের ফলে কালক্রমে সেখানে বায়ু-পানির প্রবাহ ও তাপ ও চাপের প্রভাবে ভূমির উন্নতি ও অবনতি ঘটার মাধ্যমে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও পাত সংস্থান তত্ত্ব কে সর্বগ্রাহ্য মনে করা হয় ।
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনা1.নামকরনের তাতপর্য-পাললিক শিলাস্তরে ভাজ পড়ে উচু হয়ে এই শিলাস্তর সৃষ্টি বলে একে ভঙ্গিল পর্বত বলে।
2: এটি নীচের দিকে দল বেঁধে গেছে ।
3: সমুদ্র থেকে উৎপত্তি হয় বলে ভঙ্গিল পর্বতে অনেক জীবাশ্ম থাকে।
উদাহরণ
সম্পাদনাভারতের হিমালয়, ইউরোপ এর আল্পস, ঊত্তর আমেরিকার রকি, দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ