আবদুস সালাম (জেনারেল)
আবদুস সালাম (জন্ম: ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ। তিনি ময়মনসিংহ-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।[১][২] ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[৩]
মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম আরসিডিএস, পিএসসি (অব.) | |
---|---|
বাংলাদেশের সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী | |
পূর্বসূরী | এম. এ. মান্নান |
ময়মনসিংহ-৯ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ জুন, ১৯৯৬ – ২০০১ | |
পূর্বসূরী | জহুরুল ইসলাম খান |
উত্তরসূরী | খুররম খান চৌধুরী |
কাজের মেয়াদ ২০০৮ – ২০১৪ | |
পূর্বসূরী | খুররম খান চৌধুরী |
উত্তরসূরী | আনোয়ারুল আবেদীন খান |
কাজের মেয়াদ ১০ জানুয়ারি ২০২৪ – ৫ আগস্ট, ২০২৪ | |
পূর্বসূরী | আনোয়ারুল আবেদীন খান |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ময়মনসিংহ জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত। (বর্তমান বাংলাদেশ) | ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
পিতামাতা | আব্দুল ওয়াহেদ (পিতা ), নূরজাহান খানম (মাতা) |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | বাংলাদেশ |
শাখা | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
পদ | মেজর জেনারেল |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাআবদুস সালাম ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলের কুমারুলির রসুলপুরে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তার পিতা আব্দুল ওয়াহেদ ও মাতা নূরজাহান খানম।
কর্মজীবন
সম্পাদনাআবদুস সালাম সামরিক চাকুরী জীবনে ট্রেনিং, ইন্টেলিজেন্স ও লজিষ্টিকস সার্ভিসে বিভিন্ন উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৬২ সালের ২১ এপ্রিল তৎকালীন পাকিস্তান আর্মিতে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৮২ সালে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন।
১৯৯২ সালে তৎকালীন সরকার তাকে বাধ্যতামূলক অবসের পাঠায়।
বিবিসি বাংলা তাদের এরশাদের পতন: পর্দার আড়ালে যা ঘটেছিল ফিচারে আমিন আহমেদ চৌধুরী কে উদ্ধৃত করে বলে "পদত্যাগের কথাটা জেনারেল সালামই প্রথম সরাসরি বলেন। অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। আর্মি অধৈর্য হয়ে যাচ্ছে," ।[৫]
সামরিক বাহিনীতে দায়িত্ব
সম্পাদনা- পরিচালক, অস্ত্র, সরঞ্জাম ও পরিসংখ্যান পরিদপ্তর, সেনাসদর
- ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও ষ্টাফ কলেজের গ্র্যাজুয়েট
- পরিচালক, সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তর, সেনাসদর
- কমান্ড্যান্ট, বাংলাদেশ মিনিটারী একাডেমী
- একাধিক ডিভশানের অধিনায়ক (জিওসি)
- মহাপরিচালক সশস্ত্র বাহিনী গোয়েন্দা পরিদপ্তর
- মাষ্টার জেনারেল অফ অর্ডন্যান্স
- কর্ণেল কমান্ড্যান্ট অফ আরমার্ড কোর
- প্রিন্সিপ্যাল ষ্টাফ অফিসার টু সি-ইন-সি (পরবর্তীতে সুপ্রিম কমান্ড হেডকোয়ার্টারস)
- প্রিন্সিপ্যাল ষ্টাফ অফিসার টু সুপ্রিম কমান্ডার (পরবর্তীতে আর্মড ফোর্সেস ডিভিশান)
- যুক্তরাজ্য রয়েল কলেজ অফ ডিফেন্স সার্ভিসের গ্র্যাজুয়েট
বেসামরিক দায়িত্ব
সম্পাদনা- চেয়ারম্যান চিটাগং হিলট্র্যাক্টস ডেভেলপমেন্ট বোর্ড
- ভাইস চেয়ারম্যান ইন্টারন্যাশান্যাল সেন্টার ফর ইন্টেগ্রেটেড মাউন্টেইন জেভেলপমেন্ট (ICIMOD)
- বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত (Ambassador Extraordinary Plenipotentiary)
- জাতীয় সংসদ সদস্য
- চেয়ারম্যান বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি
- চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
- চেয়ারম্যান যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
- সদস্য পাবলিক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
- চেয়ারম্যান, সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ড
- সদস্য, বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশান
- প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশান
- ভাইস প্রেসিডেন্ট, ভাটিয়ারী গল্ফ এ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাব
- সদস্য, কুর্মিটোলা গল্ফ ক্লাব
- সদস্য, আর্মি গল্ফ ক্লাব
- সদস্য, রয়েল মিডসারে গল্ফ ক্লাব, যুক্তরাজ্য
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাআবদুস সালাম চাকুরি থেকে অবসরের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
তিনি দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ২০০৪ সাল থেকে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে।[৬]
১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ সালের নবম এবং ৭ জানুয়ারী ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ময়মনসিংহ-৯ আসন থেকে ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি একই আসন থেকে পরাজিত হন।
৪ ডিসেম্বর ২০০৮ সালের ময়মনসিংহ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ঋণখেলাপির দায়ে আবদুস সালামের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেলে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। উচ্চ আদালত ইসির আদেশ স্থগিত করে প্রার্থিতা গ্রহণের নির্দেশ দেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে তার পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়। ২২ নভেম্বর ২০১৩ সালে ঋণখেলাপির দায়ে সংসদ সদস্য পদ অবৈধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ হাইকোর্ট সে কারণে দশম জাতীয় নির্বাচনেও মনোনয়ন হারান তিনি।[৭][৮][৯]
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ময়মনসিংহ-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১] ১১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ম মন্ত্রিসভায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।[২][১০] ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[৩]
সম্মাননা
সম্পাদনা- সাউদার্ন ক্রসের অর্ডার[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "নান্দাইলে বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী আব্দুস সালাম"। amarsangbad.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৯।
- ↑ ক খ প্রতিবেদক, বিশেষ (২০২৪-০১-১১)। "মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-১১।
- ↑ ক খ "জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা"। দৈনিক জনকণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৬।
- ↑ "Constituency 154, Mymensingh-9, Major General Abdus Salam, reds, psc(Retd.)"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০২০-০৫-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২০।
- ↑ "এরশাদের পতন: পর্দার আড়ালে যা ঘটেছিল"। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৯।
- ↑ প্রতিনিধি (২০২২-১২-০১)। "নান্দাইল আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৯।
- ↑ "মেজর জেনারেল সালামের সংসদ সদস্য পদ অবৈধ ঘোষণা"।
- ↑ "আব্দুস সালামের সংসদ সদস্য পদ অবৈধ ঘোষণা"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২১ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২০।
- ↑ "আবদুস সালামের সংসদ সদস্য পদ অবৈধ ঘোষণা"। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২২ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২০।
- ↑ "স্বাধীনতার পর প্রথম মন্ত্রী পেল নান্দাইলবাসী"। Jugantor (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-১১।
- ↑ "নান্দাইলে নৌকার মনোনীত প্রার্থীর জীবনীর সারসংক্ষেপ"। Dhaka Protidin (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১২-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৯।