আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদ

আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদ (জন্ম: ১৬ জুলাই, ১৯৪৭) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। []

অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদ
জন্ম১৬ জুলাই, ১৯৪৭
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
দাম্পত্য সঙ্গীডা. কামরুন্নেসা

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদের জন্ম শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া গ্রামে। তিনি পেশায় চিকিৎসক। বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন। তার বাবার নাম মফিজল হক এবং ময়ের নাম রোকেয়া হক। তার স্ত্রীর নাম কামরুন্নেসা। তাদের দুই মেয়ে এক ছেলে। []

কর্মজীবন

সম্পাদনা

আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদ ১৯৭১ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্থানীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে তাদের সঙ্গে ভারতের ঢালুতে আশ্রয় নেন। এখানে তারা নিজেদের চেষ্টায় একটা প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

সম্পাদনা

১৯৭১ সালের জুন মাসের পর ভারতের ঢালু এলাকায় আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু হয় আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদ এবং দলে থাকা অন্যান্যদের। আগস্ট মাসে তাকে ১১ নম্বর সেক্টরের ঢালু সাব-সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদকে। এই সাব-সেক্টরের অপারেশনাল এলাকা ছিল হালুয়াঘাট, ঢালু, ময়মনসিংহ সড়ক পর্যন্ত। এসব এলাকায় আগস্ট মাস থেকে অনেক যুদ্ধ হয়। এর তিনি সরাসরি অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ৩ অক্টোবর ছিলো রোজার মাসে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার তেলিখালীতে ছিলো পাকিস্তানিদের দুর্ভেদ্য একটি ঘাঁটি। তেলিখালী বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম। প্রতিরক্ষায় ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ১২৫ জনসহ রেঞ্জার্স ও রাজাকার। সব মিলিয়ে প্রায় ২৩৭ জন। দূরে বাঘাইতলীতে ছিল তাদের গোলন্দাজ বাহিনীর একটি দল। সেদিন রাত সাড়ে তিনটায় একসঙ্গে গর্জে উঠল শত শত অস্ত্র। গুলি-গোলার শব্দে গোটা এলাকা প্রকম্পিত। চারদিকে বারুদের উৎকট গন্ধ। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে যাচ্ছেন শত্রুর বাংকার লক্ষ্য করে। তাদের সঙ্গে আছে মিত্রবাহিনীর রাজপুত রেজিমেন্ট। সব মিলিয়ে প্রায় ৮০০ জন। আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদ একটি দলের নেতৃত্বে। তিনি কাট অব পার্টির দায়িত্বে। সম্মিলিত আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিরোধ সেদিন একে একে ভেঙে পড়তে থাকে। একপর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি যুদ্ধ। পাকিস্তানিদের পালিয়ে যাওয়ার পথ ছিল রুদ্ধ। ভোর পাঁচটার দিকে তাদের দিক থেকে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। সেদিন যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর একজন ছাড়া সবাই নিহত হয়। অন্যদিকে মুক্তিবাহিনীর ১৯ জন ও মিত্র বাহিনীর ৫৬ জন শহীদ হন। []

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], দৈনিক প্রথম আলো, তারিখ: ১০-০৫-২০১১
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৬২৭। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৬৫। আইএসবিএন 9789843338884 

বহি:সংযোগ

সম্পাদনা