আবদুর রসুল

বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ

আবদুর রসুল (১০ এপ্রিল ১৮৭২ - ৩১ জুলাই ১৯১৭) ছিলেন একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ, আইনজীবী।

ব্যারিস্টার

আবদুর রসুল
আবদুর রসুল
জন্ম১০ এপ্রিল ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দ
মৃত্যু৩১ জুলাই ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দ
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা গভর্নমেন্ট স্কুল, মিডল টেম্পল
পেশাআইনজীবী, রাজনীতিবিদ
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস,
নিখিল ভারত মুসলিম লীগ

জন্ম ও শৈশব সম্পাদনা

আবদুর রসুল ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার গুনিয়াউক গ্রামের একটি জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলভী গোলাম রসুল ও মা লংজান বিবি। তার বাবা মৌলভী গোলাম রসুল ও দাদা মৌলভী গোলাম আলী দুজনেই জমিদার ছিলেন। শৈশবে তার বাবা মারা যান।[১]

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

আবদুর রসুল তার গৃহশিক্ষক মহেশ চৌধুরীর কাছে শিক্ষাগ্রহণ শুরু করেন। ১৮৮৮ সালে তিনি ঢাকা গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করেন। সে বছর তিনি উচ্চশিক্ষার্থে ব্রিটেন যান। তিনি ১৮৯৬ ও ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে যথাক্রমে বিএ ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তার দুই বছর পর ১৮৯৮ সালে তিনি মিডল টেম্পল থেকে ব্যারিস্টার হন। সেসাথে তিনি বিসিএল ডিগ্রিও অর্জন করেন। বাঙালিদের মধ্যে তিনি প্রথম বিসিএল ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।[১]

কর্মজীবন সম্পাদনা

শিক্ষার্জন শেষে আবদুর রসুল দেশে ফিরে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এছাড়া তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক আইনের অবৈতনিক প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলার জাতীয় শিক্ষা কাউন্সিলে তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[১] দি মুসলমান নামে ১৯০৬ সালে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।[২]

রাজনীতি সম্পাদনা

আবদুর রসুল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের সদস্য ছিলেন এবং সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী‌র অণুসারী ছিলেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত হলে তিনি এর বিরোধিতা করেন। মূলত বঙ্গভঙ্গের সময় তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। তিনি হিন্দু মুসলিম ঐক্যের সমর্থক ছিলেন। ১৯০৭ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের বরিশালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি সভাপতি ছিলেন। ১৯০৬ সালে তিনি আবদুল হালিম গজনবী, আবুল কাসেম ও মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সাপ্তাহিক মুসলমান নামক পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯০৭ সালে লর্ড মিন্টোর সাথে সাক্ষাৎকারী প্রতিনিধি দলে তিনি সদস্য ছিলেন। এই দলের অন্যান্যরা ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী‌, মহারাজা আমীর হোসেন, আশুতোষ চৌধুরী, নওয়াব স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা ও আরো অনেকে। ১৯০৯ সালে তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগে যোগ দেন। তিনি দীর্ঘদিন এতে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।[১]

চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার মুসলিম নির্বাচনী এলাকা থেকে তিনি ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু এই পদে বহাল ছিলেন। ১৯১৭ সালে আবদুর রসুল বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সম্পাদক নির্বাচিত হন। কলকাতা ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশনে তিনি ১৯১৬ থেকে ১৯১৭ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্বপালন করেছেন। ১৯১২ সালে তিনি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে সভাপতি হন। এর দুই বছর পর চব্বিশ পরগণায় অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের সম্মেলনেও সভাপতির দায়িত্ব পান।[১]

মৃত্যু সম্পাদনা

আবদুর রসুল ১৯১৭ সালের ৩১ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. http://bn.banglapedia.org/index.php?title=রসুল,_আবদুর
  2. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, দ্বিতীয় মুদ্রণঃ নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৬২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬