আপং
মিসিং লোকদের মধ্যে বহুলভাবে প্রচলিত পানীর নাম আপং৷ মিসিংরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা ছাড়াও উৎসব-পরব, ধর্মীয় কাজ এবং অপদেবতার নৈবেদ্য হিসাবেও ব্যবহার করে আসছে৷
উৎপাদনকারী | মিসিং সম্প্রদায় |
---|---|
উৎপত্তির দেশ | ভারত |
রং | বগা |
প্রকারভেদ | নগজিন বা নগিন আপং (বগা মদ) পঃরব আপং (ছাই মদ) |
প্রকার
সম্পাদনাআপং বিশেষভাবে দুধরনের:
- নগজিন বা নগিন আপং (বগা মদ)
- পঃরব আপং (ছাই মদ)
প্রস্তুত প্রণালী
সম্পাদনাআপং মূলত চাল থেকে প্রস্তুত করা হয়৷ বরা, জহা, বাও ইত্যাদি চাল থেকে তৈরী আপং অতি উৎকৃষ্ট হয়৷ কোনো কোনো কঁাঠাল, কণীধান, ভীমকল ইত্যাদি থেকেও আপং প্রস্তুত করা হয়৷ আপং তৈরি করতে প্রথমে চাল ভাতের মতো ভিজিয়ে একটি ডলাতে ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত মেলে দিয়ে হাবি থেকে সংগ্রহ করা ঔষধি গুণসম্পন্ন বনপাতা এনে গুড়ো করে রোদে শুকিয়ে পিঠা গুড়িতে জল মিশিয়ে তৈরি করা অৗপপ (বাখর) সিদ্ধ করে রাখা ভাতের সাথে মিশিয়ে শুকান কলসিতে ধান খেরে চাপা দিয়ে রাখার তিন চার দিন পরে সেটি পেকে ওঠে৷ নির্দিষ্ট সময়ে পেকে ওঠা ভাতটি কলসী থেকে তুলে পরিমাণ মত জল ঢেলে ছাঁকলে যে বগা পাতলা গোলাপী রস নিঃসৃত হয় তা হল নগিন আপং৷
পঃরব আপঙ-এর প্রস্তুত প্রণালী এমনধরনের – প্রথমে চালটি জলে ভিজিয়ে কিছুসময় ডলায় মেলে দিয়ে ধানখের এবং তুঁষ গুড়ির ছাইয়ে ভাতটি চাপা দিয়ে পুনর্বার ঔষধিযুক্ত অৗপপের গুড়ি দিয়ে মিশিয়ে পোড়া কলসীতে কাঁচা কলাপাতায় ঢাকা দিয়ে দশ-পনেরো দিন ভালভাবে বেঁধে রেখে পেকে ওঠার পরে ভাতটি (এবঙ্গ) তুলে বাঁশের জুলকিতে (তাঃচুগা) ভরে অল্প অল্প করে জল ঢেলে ছাঁকলে যে কালো-কাজল-লাল রঙের রস নিঃসৃত হয় তা পঃরব আপং বা ছাই মদ৷
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- অসমীয়া সংস্কৃতির কণিকা – সম্পাদনা- ড০ পরমানন্দ রাজবংশী, ড০ নারায়ন দাস (পৃষ্ঠা- ৪৩)