মিসিং জনগোষ্ঠী
মিসিং জনগোষ্ঠী হচ্ছে বড়ো-কাছাড়িদের পরেই আসাম-এর ভৈয়ামের জনজাতিসমূহের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম জনজাতি। মিসিংরা মূলত মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর মান-তিব্বতী শাখার অন্তর্গত। ভৈয়ামত থাকা মিসিংরা সাধারণত নদীর পারে চাংঘর তৈরি করে গ্রাম করে বাস করেন। মিসিংরা আদিতে আসামের উত্তর-পূর্ব দিকের পাহাড়ে ছিল এবং বর্তমান অরুণাচলের চিয়াং জেলায় থাকা "মিয়ং" এবং "দাম্ র" নামের দুই জাতির থেকেই এসেছে। আসামের ধেমাজি, তিনসুকিয়া, লখিমপুর, ডিব্রুগড়, শিবসাগর, গোলাঘাট, যোরহাট, দরং, শোণিতপুর জেলায় মিসিংরা প্রধানভাবে বাস করেছে। সাধারণত নদীর পারে চাংঘরে বাস করা জন্য মিসিংদের জীবন-ধারণের পদ্ধতি নদীর উপর ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত।
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
---|---|
আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, ভারত: | |
ভাষা | |
মিসিং ভাষা, অসমিয়া, ইংরাজী, হিন্দী | |
ধর্ম | |
হিন্দু ধর্ম,[১] ইত্যাদি |
মিসিং ভাষা
সম্পাদনাআসামের জনজাতীয় ভাষাসমূহ বৃহৎ চীন-তিব্বতীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। এই ভাষা পরিবারটি দুটি ভাগে বিভক্ত - তিব্বত-বর্মী এবং থাইচীন শাখা। মিসিং ভাষা তিব্বত-বর্মীর অন্তর্গত আসাম-বর্মী শাখার অন্তর্গত একটি ভাষা। মিসিংদের বিষয়ে খুব বেশি পুরানো ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় না। তাঁদের মৌখিক সাহিত্য, কিম্বদন্তি এবং বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকা দুই-একটি লেখার তথ্য থেকে কিছু আভাস পাওয়া যায়। সেইমতে, পূর্বে আসামের উত্তরে থাকা পাহাড়সমূহে তাঁদের বাসস্থান ছিল। পরে বিভিন্ন কারণে তাঁরা ভৈয়াম পর্যন্ত নামি আসেন। বর্তমান আসামের ব্রহ্মপুত্র নদীর উত্তরপারে ধেমাজি, লখিমপুর, দরং, শোণিতপুর জেলার সাথে শদিয়া এবং ব্রহ্মপুত্রের দক্ষিণপারে তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, শিবসাগর, যোরহাট, গোলাঘাট, মাজুলী, নগাঁও এবং গুয়াহাটিতে মিসিংভাষীর বসতি আছে। মিসিং ভাষায় উচ্চারিত ধ্বনিসমূহকে স্বরধ্বনি এবং ব্যঞ্জন ধ্বনি – এই দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ভাষাটিতে মোট সাতটা স্বরধ্বনি উচ্চারিত হয়। প্রতিটি স্বরধ্বনির হ্রস্ব এবং দীর্ঘ – দুটি রূপ পাওয়া যায়। হ্রস্ব এবং দীর্ঘ দুটি রূপ ধরলে স্বরধ্বনির সংখ্যা হবে চোদ্দটি।