আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজ
আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রাচীনতম শীর্ষস্থানীয় একটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শিবগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৬ কি.মি পশ্চিম দিকে মনাকষা ইউনিয়নের দাদনচক -এ অবস্থিত।
নীতিবাক্য | জ্ঞানই শক্তি |
---|---|
ধরন | সরকারি কলেজ |
স্থাপিত | ১৯৩৮ খ্রিঃ |
অধ্যক্ষ | অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোঃ মোজাহারুল ইসলাম |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ২৬ |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ১২০+ |
শিক্ষার্থী | ১৮০০০ জন[১] |
স্নাতক | বিএ (সম্মান), বিএসএস (সম্মান), বিএসসি (সম্মান), বিএ (পাস), বিএসএস (পাস), বিএসসি (পাস) |
অন্যান্য শিক্ষার্থী | উচ্চ মাধ্যমিক |
অবস্থান | |
শিক্ষাঙ্গন | দাদনচক-৬৩৪০, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, বাংলাদেশ |
সংক্ষিপ্ত নাম | আদিনা |
অধিভুক্তি | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী, এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ক্রীড়া | ফুটবল, ক্রিকেট |
ওয়েবসাইট | https://adinacollege.edu.bd |
ইতিহাস ও পটভূমি
সম্পাদনাব্রিটিশ শাসনকালে ভারতবর্ষের মুসলিমরা শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে ছিল। এছাড়া মফস্বল অঞ্চল ছিল শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে আরও পিছিয়ে। এতদসত্ত্বেও নিজ প্রচেষ্টা ও মেধার গুণে অনেক মেধাবী মুসলিম ব্যক্তি শিক্ষা অর্জন করেছিল এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল। দাদনচক গ্রামের প্রয়াত কর্মবীর ইদ্রিশ আহম্মেদ মিঞা ছিলেন তেমনি একজন ব্যক্তি। তিনি সেই সময় শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন এবং জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব উপলদ্ধি করে সকলের মধ্যে জ্ঞানের বিকাশ ঘটানোর প্রয়াস লাভ করেছিলেন। দাদনচক গ্রামে অবস্থিত আজকের আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজ সেই প্রয়াসেরই ফল। তিনি উপলদ্ধি করেছিলেন যে শোষিত,বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষকে জমিদার, জোতদার, ঋনদাতা মহাজন ও গ্রাম্য চণ্ডালদের অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে মুক্ত করতে এবং তাদের যাবতীয় কুসস্কার, ভীরুতা দূর করে একটি আত্মপ্রত্যয়শীল সমাজ গড়ে তুলতে হলে সর্বদা শিক্ষার প্রয়োজন। কারণ তিনি উপলদ্ধি করেন যে শিক্ষাই সকল উন্নতি ও উৎকর্ষ সাধনের মূল চাবিকাঠি। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মালদহ জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও প্রতিস্থাপক ইদ্রিশ আহমেদ মিঞা তাঁর নিজ গ্রাম দাদনচকে বিশ শতকের প্রথম দিকেই প্রতিষ্ঠা করেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা। এছাড়া তিনি একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠার মানসে তাঁর সংগ্রাম অব্যাহত রাখেন। ১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইনে প্রাদেশিক স্বায়ত্ব শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করার ফলে ১৯৩৭ সনে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টির প্রার্থী হিসাবে ইদ্রিশ আহমেদ মিঞা মনোনয়ন পান এবং ভোটে জয়লাভ করেন। ঐ সময় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক বাংলার মূখ্যমুন্ত্রী হন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার প্রথম অধিবেশনে ইদ্রিশ আহমেদ মিঞা শিক্ষায় অনগ্রসর মালদহ জেলায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন এবং অত্যন্ত- বলিষ্ঠ, যুক্তিপূর্ণ ও আবেগময় ভাষায় তিনি উচ্চ শিক্ষার বিকাশের পক্ষে তার বক্তব্য তুলে ধরেন। ঐ সভায় তাঁর প্রস্তাবটি পাশ হয়ে যায়। এবং শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক -এর সহযোগিতায় ১৯৩৮ সালে আদিনা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।[২]
উত্তর মালদহের আদিনা শশহাজারি ওয়াকফ স্টেটের মতওয়াল্লি বেগম শাসনুন্নাহার কলেজের উন্নতি কল্পে তিনশত বিঘা জমি দান করেছিলেন। কিন্তু ঐসব জমি কলেজের উন্নয়নে ব্যবহার করেছিল কিনা তা জানা যায়নি। তবে কলেজের নামের সাথে আদিনা শব্দটি থেকে যায় এছাড়া কলেজের প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক -এর অবদান অনস্বীকার্য বলে ইদ্রিশ আহমেদ মিঞা হক সাহেবকে স্মরণীয় করে রাখার মানসে কলেজের নাম দেন আদিনা ফজলুল হক কলেজ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটিকে প্রথমেই স্থায়ী এফিলিয়েশন দান করে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বাংলা, ইংরেজি, আরবী, উর্দু, ফার্সী, সংস্কৃত, ইতিহাস, পৌরনীতি, যুক্তিবিদ্যা ও গণিত এই দশটি বিষয় পড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অণুমোদন দেন।
কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ জনাব মো: সানাউল্লাহ এম.এ (আরবী) বলেন ১৯৩৮ সনে আদিনা ফজলুল হক কলেজ ইন্টারমিডিয়েট কলেজ হিসাবে যাত্রা শুরু করলেও আজ এটি একটি পূর্ণাঙ্গ স্নাতক কলেজে রূপ নিয়েছে। ১২ একর জমির আম্রবীথির মনোরম পরিবেশে ১৪ টি সুদৃশ্য ভবনের সমন্বয়ে আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজ ইতিহাসের একটি অংশ হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।
ভবন সমূহ
সম্পাদনা- প্রশাসনিক ভবন-১টি
- একাডেমিক ভবন-৩টি
- কম্পিউটার ল্যাব-১টি
- বিজ্ঞানাগার-১টি
- লাইব্রেরী ভবন-১টি
- শিক্ষক মিলনায়তন-১টি
- বিএনসিসি ভবন-১টি
- অন্যান্য-৫টি
আবাসিক হলসমূহ
সম্পাদনা- ছাত্র হোস্টেল-১টি
- ছাত্রী হোস্টেল- নির্মাধীন
নথীভুক্ত শিক্ষার্থী
সম্পাদনা১৫৩৪৮জন[৩]
বর্তমান অনুষদ ও বিভাগসমূহ
সম্পাদনাকলা অনুষদ | সমাজবিজ্ঞান অনুষদ | বিজ্ঞান অনুষদ |
---|---|---|
ইংরেজি | রাষ্ট্রবিজ্ঞান | গণিত |
ইতিহাস | - | উদ্ভিদবিজ্ঞান |
দর্শন | - | -প্রাণিবিজ্ঞান |
অর্জন, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
সম্পাদনাআদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজের অর্জন হিসেবে ২০১১ সালে ৫ জন ছাত্র-ছাত্রী সাধারণ মেধা কৌটায় বৃত্তি পায় এবং উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রী ৭০ জন।
চিত্রমালা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://monakashaup.chapainawabganj.gov.bd/node/1107118/আদিনা-ফজলুল-হক-সরকারি-কলেজ-[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ http://monakashaup.chapainawabganj.gov.bd/node/1001929/আদিনা-ফজলুল-হক-সরকারি-কলেজ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "মনাকষা ইউনিয়ন-"। monakashaup.chapainawabganj.gov.bd।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]