আত্মজীবনী
আত্মজীবনী হচ্ছে লেখকের স্বরচিত জীবনচরিত বা আত্মকথা। আত্মজীবনী বিশ্বের অন্যান্য সাহিত্যের মতো বাংলা সাহিত্যেও একটি বিশেষ স্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। উনিশ শতকের আগে বাংলা ভাষায় কোনো আত্মজীবনী লেখা হয়নি।[১]
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/c/c4/Amasa_Holcomb_autobiography_1867.jpg/220px-Amasa_Holcomb_autobiography_1867.jpg)
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রাচীন ও মধ্যযুগের গীতিকবিতায় ভণিতার মাধ্যমে আত্মপরিচয় তুলে ধরার প্রয়াস লক্ষিত হয়। কাহিনীকাব্যে আত্মপরিচয় অনেকটা বিস্তৃত আকারে লেখা হয়েছে। চন্ডীমঙ্গল কাব্যে মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ও পদ্মাবতী কাব্যে আলাওল এভাবে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু এগুলো আধুনিক ধারার আত্মজীবনীর মধ্যে পড়ে না।
সাহিত্য হিসেবে আত্মজীবনীর উপযুক্ত প্রকাশ ঘটে উনিশ শতকের গোড়ার দিকে। দেওয়ান কার্তিকেয়চন্দ্র রায় প্রথম আত্মজীবনী রচনা করেন। উনিশ শতকের মধ্যভাগে কতিপয় সামাজিক-রাজনৈতিক বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবোধ ও স্বাধিকার চেতনা জাগ্রত হলে আত্মচরিত রচনার প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পায়। তবে সকল আত্মজীবনী এক মাপের ও এক চরিত্রের নয়। কেউ কেউ আত্মজীবনী রচনার ক্ষেত্রে বাল্যস্মৃতির ওপর অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ গুরুত্ব দিয়েছেন কর্মজীবনের ওপর। কিছু কিছু আত্মজীবনী আছে যেগুলির রচয়িতা সমকালীন আর্থ-সামাজিক সম্পর্কের ওপর অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছেন।
আত্মজীবনী রচনা করতে গিয়ে বাল্যস্মৃতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন এমন বিশিষ্ট কয়েকজন লেখক ও তাদের জীবনীগ্রন্থের নাম হলো: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর জীবনস্মৃতি ও ছেলেবেলা, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর বাল্যস্মৃতি, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর এর আমার বাল্যকথা, গিরিশচন্দ্র বিদ্যারত্ন এর বাল্যজীবন, মন্মথনাথ মজুমদার এর আদর্শ ছাত্রজীবন ইত্যাদি। এ ছাড়া অনেক পূর্ণাঙ্গ আত্মজীবনীতেও বাল্যস্মৃতি উল্লেখযোগ্য।