আঞ্জুমান-ই হিমায়াত-ই-নিসওয়ান

আঞ্জুমান-ই হিমায়াত-ই-নিসওয়ান ('নারীর সুরক্ষার জন্য সমিতি') ছিল আফগানিস্তানের একটি নারী সংগঠন, যা ১৯২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। [১] [২] এটি ছিল আফগানিস্তানের প্রথম নারী সংগঠন। [৩]

এটি রাজার বোন রাজকুমারী সাহিরা বেগম সিরাজ আল-বানাত এবং রানী সোরায়া তরজি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং রাজার বোন প্রিন্সেস কুবরাহ এর সভাপতি ছিলেন। [৪] এটি সমাজ সংস্কারের জন্য রাজা এবং রাণীর আধুনিকীকরণ প্রকল্পের একটি অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, একটি নীতি যার মধ্যে নারীর মুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রিন্সেস কুবরাকে নারীর মুক্তির বিষয়ে এর কাজ "সমন্বয়, তত্ত্বাবধান এবং নির্দেশিকা" করতে হয়েছিল এবং কাবুলের অফিসে তাকে সহায়তা করার জন্য ১২জন সক্রিয় সদস্য ছিল। [৫]

এর উদ্দেশ্য ছিল রাজা আমানুল্লাহ খান কর্তৃক প্রবর্তিত নারীর অধিকারে নতুন সংস্কারকৃত আইন ব্যবহার করতে নারীদের উৎসাহিত করা, যেমন বহুবিবাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং নতুন বিবাহ ও তালাক আইন, এবং সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত নারীমুক্তির নীতি কার্যকর করা। নারীদেরকে রাণীর উদাহরণে পর্দা ও লিঙ্গ বিচ্ছিন্নতা প্রত্যাখ্যান করতে, সমাজে অবদান রাখার জন্য নিজেদের শিক্ষিত করতে এবং পেশাদার হতে উৎসাহিত করা হয়েছিল। সংস্থাটির কাবুলে একটি কার্যালয় ছিল, যাতে মহিলারা এসে রাজার নতুন সংস্কারকৃত আইনের আবেদন করে সহায়তা চাইতে পারে এবং তাদের স্বামী, ভাই এবং পিতার সাথে দুর্ব্যবহার করলে অভিযোগ জানাতে পারে। [৬]

যদিও মুক্তি নীতিটি অত্যন্ত বিতর্কিত এবং আফগান সমাজে প্রয়োগ করা কঠিন ছিল এবং রাজা আমানুল্লাহ খান ও রাণী সোরিয়া তরজি ১৯২৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন। ক্ষমতা থেকে তাদের অপসারণের পর তাদের উত্তরাধিকারী হাবিবুল্লাহ গাজীর অধীনে নারীর অধিকারের উপর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, যিনি মেয়েদের জন্য স্কুল নিষিদ্ধ করেছিলেন, পর্দার পুনঃপ্রবর্তন করেছিলেন এবং নারীদেরকে লিঙ্গ বিচ্ছিন্নতায় ফিরিয়ে আনতে বাধ্য করেছিলেন। [১] উইমেন অ্যাসোসিয়েশন আঞ্জুমান-ই হিমায়াত-ই-নিসওয়ান এবং সেইসাথে মহিলাদের ম্যাগাজিন ইরশাদ-ই নাসওয়ান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং তুরস্কে পড়ার অনুমতি দেওয়া ছাত্রীদের আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছিল এবং ঘোমটা পরে আবার পরদায় প্রবেশ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। [৭]

এভাবেই চলতে চলতে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ইতিমধ্যে আর কোন নারীদের জন্য কাজ বা নারী সংগঠন আফগানিস্তান মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে নি। অবশেষে ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মহিলা কল্যাণ সমিতি, তখন থেকে নারী আন্দোলন আফগানিস্তানে নতুন করে আবার শুরু হয়। [৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Julie Billaud: Kabul Carnival: Gender Politics in Postwar Afghanistan
  2. Fahima Rahimi (১৯৮৬)। Women in Afghanistan। Stiftung Bibliotheca Afghanica। পৃষ্ঠা 42। 
  3. Emadi, Hafizullah, Repression, resistance, and women in Afghanistan, Praeger, Westport, Conn., 2002
  4. N. Inayatullah, R. Riley: Interrogating Imperialism: Conversations on Gender, Race, and War
  5. Emadi, Hafizullah, Repression, resistance, and women in Afghanistan, Praeger, Westport, Conn., 2002
  6. Emadi, Hafizullah, Repression, resistance, and women in Afghanistan, Praeger, Westport, Conn., 2002
  7. "History of education in Afghanistan - Afghanistan" 
  8. Rahimi, Wali Mohammad: Status of women: Afghanistan, UNESCO Principal Regional Office for Asia and the Pacific (Thailand). Regional Unit for the Social and Human Sciences in Asia and the Pacific (1991) BKSS/91/277.1000