আজান ফকীর সাহেব

২০০৮-এর চলচ্চিত্র

আজান ফকীর সাহেব (অসমীয়া: আজান ফকীৰ চাহেব) হল বাণী কলিতা পরিচালিত ও আসিফ ইকবাল হুসেইন প্রযোজিত একটি অসমীয়া চলচ্চিত্র। ২০০৮ সালের ২৫ এপ্রিল তারিখে চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেওয়া হয়। বাগদাদ থেকে অসমে আসা সুফী সন্ত আজান ফকীরএর জীবনের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়।[১][২]

আজান ফকীর সাহেব
চলচ্চিত্রটির একটি দৃশ্য
পরিচালকআসিফ ইকবাল হুসেইন
প্রযোজকবাণী কলিতা
প্রবীণ লহকর (কার্যকরী)
রচয়িতাপ্রভাত গোস্বামী
কাহিনিকারপ্রভাত গোস্বামী
শ্রেষ্ঠাংশেবিষ্ণু খারঘরীয়া
পৃথ্বীরাজ রাভা
অরুণ নাথ
মলয়া গোস্বামী
সুরকারদ্বিজেন কোঁয়র
হাফিজা বেগম চৌধুরী
তুলিকা লহকর
চিত্রগ্রাহকপরেশ বরুয়া
পরিবেশকসমন্বয় ফিল্মস
মুক্তি২৫ এপ্রিল, ২০০৮
দেশভারত ভারত
ভাষাঅসমীয়া

আজান ফকীর সম্পাদনা

১৬৩৪ সালে ইছলাম ধর্ম প্রচারক সন্ত আজান ফকীর (প্রকৃত নাম - শাহ মীরান) তার ভাই নবী পীরের সাথে বাগদাদ থেকে অসম-এ প্রব্রজন করেছিলেন। বলা হয় যে, তাকে প্রথমে দিল্লীনিয়ে আসা হয়েছিল এবং তারপর তিনি সুফী সন্ত শেখ নিজামুদ্দিন আউলিয়ার শিষ্য হয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি এসে হাজার গরুড়াচল পাহাড়এর ওপরে থাকা পীর গিয়াসুদ্দিন আউলিয়ার দরগাহের কাছে থাকতেন। হাজা সেই সময়ে অসমে মোগলদের মুখ্য স্থান ছিল। তারপরে তিনি আহোম রাজধানী শিবসাগরএর কাছে চূণপোরা নামক একটি মুসলমান গ্রামে থাকার জন্য যান । সেই সময়ে কিছু ধর্মবিরোধী রীতি-নীতিতে লিপ্ত থাকা মুসলমানদের মধ্যে তিনি ইসলাম ধর্মের প্রাথমিক ধারণাসমূহ ও মৌলিক কর্তব্যসমূহ প্রচার করেন। তিনি গ্রামেতে একটি মসজিদও প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মসজিদে প্রথম আজান তিনি দেন ও সেইজন্য চূণপোরা গ্রামের মুসলমান সম্প্রদায় তাকে আজান ফকীর নাম দেয়। রংপুরের খণ্ডকার গ্রামের সৈয়দ উসমান গণি নামে একজন ব্যক্তির মেয়েকে তিনি বিয়ে করেন। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে ইসলাম ধর্মের বাণীসমূহ প্রচার করার সাথে ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরানকে অসমীয়ায় অনুবাদ করেন। জিকির নামে তিনি কিছু ভক্তিমূলক গান লেখেন ও সুর দেন। জিকিরে তিনি ইসলাম ধর্মের বাণীসমূহ বর্ণনা করার সাথে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ববোধর প্রয়োজনীয়তা দেখান।[১]

আহোম রাজা গদাধর সিংহর বিষয়ী রূপাই গঞা নামে একজন অসমীয়া মুসলমান আজান ফকীরের ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। ১৬৮৫ সালে সে স্বর্গদেউ গদাধর সিংহর কাছে গিয়ে জানায় যে, আজান ফকীর একজন মোগল গুপ্তচর ও তিনি গোপনে মোগল সৈন্যর সাথে যোগাযোগ রাখেন। গদাধর সিংহ প্রথমে এ কথা কর্ণপাত না করলেও বহুবার আপত্তি করার পর তিনি রূপাই গঞাকে নিজে বিবেচনা করে বিহিত ব্যবস্থা করার অনুমতি দেন। কিন্তু সাথে এইবলেও সাবধান করেন যে,এর দ্বারা মুসলিম অনুভূতিতে যেন কোনো ধরনের আঘাত না লাগে ও আহোম রাজত্বের প্রতি যেন কারো ভুল ধারণা না জন্মে। রাজার আদেশ পেয়ে রূপাই গঞা আজান ফকীরকে ধরে আনে ও চক্ষু দুটি উপড়ে ফেলে। গদাধর সিংহ নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাকে মুক্তি দেন এবং রূপাই গঞাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।[১]

আজান ফকীর পরে দিখৌ নদীর পাড়ে হুয়াগুরি নামক স্থানে চলে যান৷ তাকে বিনামূল্যে ভূমি ও বিষয়-সম্পত্তি প্রদান করা হয়। ১২০ জন শিষ্যের সাথে তিনি সেখানে বাকী জীবন ছিলেন। আনুমানিক ১৬৯০ সালে তার মৃত্যু হয়।[১]

অভিনয়-শিল্পী সম্পাদনা

পুরস্কার সম্পাদনা

চিত্রলেখা পুরস্কার (২০০৮) (ইউনাইটেড টি ভি এণ্ড ফিল্মমেকার্স এসোসিয়েশনের দ্বারা)[৩]

  • শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র
  • শ্রেষ্ঠ পরিচালক - আসসি ইকবাল
  • শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক - দ্বিজেন কোঁয়র
  • শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার - প্রভাত গোস্বামী
  • শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রী - মলয়া গোস্বামী

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ahmed, Dr Syed। "An Assamese Film on the Life of Azan Fakir" (ইংরেজি ভাষায়)। Radiance। ২০১০-০১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারী ২০১৩ 
  2. "An ode to a preacher" (ইংরেজি ভাষায়)। The Telegraph। মে ৯, ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারী ২০১৩ 
  3. Das, Apurba Kumar। "Roving Eye" (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১০