আখতারউজ্জামান

বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ

আখতারউজ্জামান (জন্ম: ২৩ জানুয়ারি, ১৯৫৩) বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং গাজীপুর ৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। ১৯৮০ দশকের সামরিক এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্ববায়ক হিসেবে খ্যাতিমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) ছিলেন।[১] পরবর্তী কালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আখতারউজ্জামান
জন্ম(১৯৫৩-০১-২৩)২৩ জানুয়ারি ১৯৫৩
জাতীয়তাবাংলাদেশী
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশারাজনীতিবিদ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

শিক্ষা ও কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৫৩ সালের ২৩ জানুয়ারি গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সোম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আখতারউজ্জামান। তার বাবার নাম আতাউর রহমান এবং মায়ের নাম লিলি বিবি। আখতারউজ্জামান চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং জগন্নাথ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি ১৯৮৯-১৯৯০ সাল পর্যন্ত লন্ডন ইউনিভার্সিটির অধীনে স্কুল অফ আফ্রিকান অ্যান্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজে (এসওএএস) ‘দক্ষিণ এশীয় আধুনিক রাজনীতি’ বিষয়ে লেখাপড়া করে এম.এস.এস. ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৭১ সালে তিনি ভারতের উত্তর প্রদেশের দেরাদুনে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) বা মুজিব বাহিনীর প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং রণাঙ্গনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ জামাল ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মণি’র ছোটভাই শেখ মারুফ তার অধীনেই যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

আখতারউজ্জামানের রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয় স্কুলছাত্র অবস্থাতেই। তিনি ১৯৬৮-৬৯ সালে চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২-৭৩ সালে জগন্নাথ কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ এবং ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে পরপর দুইবার সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালে ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় একশত বছরের ইতিহাসে আখতারউজ্জামানই একমাত্র ছাত্রনেতা, যিনি ছাত্র সংসদ নির্বাচনে দুইবার জিএস এবং একবার ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আখতারউজ্জামান ১৯৭৯-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়ে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নির্বাচিত হয়ে তিনি এরশাদ পতনের একদফা দাবিতে পুরো ছাত্রসমাজকে নেতৃত্ব দেন। তাকে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কারণে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন তিনি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৯৩ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আখতারউজ্জামান। ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল, ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে একই পদে পুনর্নিবাচিত হন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ৭ম জাতীয় সংসদে গাজীপুর-৩ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।[২] একই সময়ে তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত গাজীপুর জেলা পরিষদ প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন।[৩] ২০১৬ সালে তিনি গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পুনর্নিবাচিত হন। [৪][৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. প্রতিদিন, বাংলাদেশ। "ডাকসু নির্বাচনে বাধা কোথায় | বাংলাদেশ প্রতিদিন"Bangladesh Pratidin। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৩ 
  2. আখতারউজ্জামন। "List of 7th Parliament Members"www.parliament.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৩ 
  3. BanglaNews24.com। "যে কেউ আমার কর্মী হতে ‍পারেন"banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৩ 
  4. ভোরের কাগজ। "গাজীপুর জেলা পরিষদ : বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হচ্ছেন আখতারুজ্জামান"www.bhorerkagoj.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৭-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৩ 
  5. "খণ্ডিত ইতিহাস জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে না"Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৩