আইএসআইএল কর্তৃক শিয়া নিপীড়ন

ইসলামিক স্টেট (বা আইএসআইএল) দ্বারা ২০১৪ সালের জুন মাসে তাদের দখলকৃত ইরাক এবং সিরিয়ায় শিয়া গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল।[২]

আইএসআইএল দ্বারা শিয়া গণহত্যা
স্থান ইরাক  সিরিয়া
[১]
তারিখজুন ২০১৪-ডিসেম্বর ২০১৭
লক্ষ্যশিয়া মুসলিম, বেসামরিক নাগরিক
হামলার ধরনগণহত্যা জনিত ধ্বংস, জাতিগত নির্মূল, জোরপূর্বক রুপান্তর
কারণধর্মীয় নিপীড়ন, মানব পাচার, এবং জোরপূর্বক রুপান্তরs to সুন্নি ইসলাম[২]

ইরাকে শিয়ারা সংখ্যাগুরু হওয়া সত্ত্বেও আইএস কর্তৃক গণহত্যার শিকার হন। ২০১৪ এর জুনে আইএস প্রায় নিয়োগপ্রাপ্ত ১৭০০ শিয়া ইরাকি বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাকে হত্যা করে।.[৩] আইএসআইএল শিয়া বন্দিদেরও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে।.[৪] প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আইএস মিলিশিয়া কর্তৃক মসুল দখলের পর তারা সুন্নি বন্দিদের থেকে শিয়া বন্দিদের আলাদা করে।.[৪] প্রায় সাড়ে ছয় শত শিয়া বন্দিকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় যাদের আর পাওয়া যায় নি।.[৪]

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উত্তর ইরাকে জাতিগত ও ধর্মীয় নিপীড়ন ও নিধনের জন্য আইএসকে দায়ী করেছে।. ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ এর বিশেষ রিপোর্টে বলা হয় যে আইএস ২০১৪ এর ১০ জুনের পর থেকে তার দখলকৃত এলাকায় অমুসলিমদের বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে এবং তাদের হত্যা ও আহত করে। এসব গোষ্ঠী সহ হাজার হাজার শিয়া অনুসারী তাদের নিজেদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সবথেকে বেশি ক্ষতির শিকার হন নিনেভাহ প্রদেশের তুর্কমেন ও সাবাক শিয়াগণ। [৫]

মসুলের পতন (২০১৪) সম্পাদনা

দখলকৃত মসুল অংশে বসবাসকারী শিয়াদের সম্পত্তি দখল করে নেওয়া হয় এবং তা আইএস এর সমর্থকদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। শিয়াদের সবকিছু গণিমত হিসেবে গণ্য করা হয়।.[৬] হাজার হাজার তুর্কমেন ও সাবাক শিয়া মুসল ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

বশির - এ শিয়াদের বিরুদ্ধে আক্রমণ সম্পাদনা

সালাউদ্দিনকিরকুক প্রদেশ থেকে সহস্রাধিক শিয়া পাশ্ববর্তী গ্রামে পালিয়ে যান। কিন্তু আইএস সেসব গ্রামে আক্রম করে এবং শিশুসহ অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক বশির শহরের কাছে হত্যা করে।[৬][৭]

শিয়া মাজার ও উপাসনালয় ধ্বংস সম্পাদনা

আইএস এর দৃষ্টিতে শিয়া মুসলমানগণ বিপথগামী ও মুশরিক। তাই তারা দখলকৃত এলাকার সকল শিয়া মাজার ও উপসানলয় ধ্বংস করা শুরু করে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে মুসল ও তেল আরাফ যা আইএস দখলকৃত অংশ, প্রায় ১০ শিয়া মাজার ইমামবাড়া ধ্বংস কিংবা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। [৮]

গণহত্যা অভিযোগ সম্পাদনা

১৭ মার্চ ২০১৬, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সিরীয়া ও ইরাকে শিয়া মুসলাম ও অন্যান্যদের প্রতি আইএস কর্তৃক সৃষ্ট সহিংসতাকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেন। [৯][১০]

”আমার মতে, দায়েশ তার নিয়ন্ত্রণাধীন এলকার ইয়াজিদ, খ্রিস্টান, শিয়া গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য দায়ী" - জন কেরিএকই সপ্তাহে জন কেরির বিবৃতি মার্কিন হাউসে বিল আকারে তোলা হয় এবং তা ৩৮৩-০ ভোটে পাস হয়।[৯][১০][১১]

আরোও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. https://edition.cnn.com/2016/03/17/politics/us-iraq-syria-genocide/index.html
  2. "Islamic State Killed 500 Yazidis, Buried Some Victims Alive"Huffington Post। ১০ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Terrifying execution images in Iraq; U.S. Embassy in Baghdad relocates some staff"CNN। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-২২ 
  4. Harding, Luke; Irbil, Fazel Hawramy in। "Isis accused of ethnic cleansing as story of Shia prison massacre emerges"the Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-২২ 
  5. "Iraq crisis: Islamic State accused of ethnic cleansing"। BBC News। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  6. "Iraq: ISIS Abducting, Killing, Expelling Minorities"Human Rights Watch। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 
  7. Abigail Hauslohner (২৩ জুন ২০১৪)। "Shiite villagers describe 'massacre' in northern Iraq"Washington Post। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 
  8. "ISIS demolish ancient mosques and temples in western Iraq"Mail Online। ৭ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 
  9. "Remarks on Daesh and Genocide"U.S. Department of State। ২৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 
  10. Amanda Holpuch। "John Kerry: Isis is committing genocide in Syria and Iraq"the Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 
  11. http://europe.newsweek.com/isis-genocide-kerry-yazidis-christians-shia-437944?rm=eu