দারবারিয়ি এলি

(অ্যাবাউট এলি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

দারবারিয়ি এলি (ফার্সি: درباره الی), ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, আসগর ফরহাদি পরিচালিত একটি ইরানি নাট্য চলচ্চিত্র[২] এটি ফরহাদির চতুর্থ চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি ইরানের মধ্যবিত্ত সম্পর্ক নিয়ে রচিত।

দারবারিয়ি এলি
চলচ্চিত্রটির পোস্টার
পরিচালকআসগর ফরহাদি
প্রযোজকআসগর ফরহাদি
রচয়িতাআসগর ফরহাদি (চিত্রনাট্য)
আজাদ জাফরিয়ান (কৃতজ্ঞতা)
শ্রেষ্ঠাংশেগোলশিফতেহ ফারাহানি
তারানেহ আলিদুস্তি
শাহাব হোসেইনী
মানি হাঘিঘি
মেরিলা যারেই
পেইমান মা'দি
আহমদ মেহরানফর
রানা আজাদিওয়ার
সাবের আবর
চিত্রগ্রাহকহোসেন জাফরিয়ান
সম্পাদকহায়েদেহ সাফিয়ারি
পরিবেশকড্রিমল্যাব ফিল্মস (আন্তর্জাতিক)
এক্সিওম ফিল্মস (যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ড)
মুক্তি৬ জুন, ২০০৯
স্থিতিকাল১১৯ মিনিট
দেশইরান
ভাষাফার্সি
নির্মাণব্যয়$১.৩৫ মিলিয়ন
আয়$৭ মিলিয়ন[১]

ফরহাদি চলচ্চিত্রটির জন্য ৫৯ তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে রৌপ্য ভল্লুক জিতেছেন। চলচ্চিত্রটি তেহরানের ২৭ তম ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ১০ টি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল, যেখানে ফরহাদি শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে ক্রিস্টাল সিমর্‌গ জিতেছিলেন। দারবারিয়ি এলি, একাডেমি পুরস্কারের ৮২ তম আসরে, শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে, ইরান কর্তৃক নিবেদিত হয়েছিলো।

কাহিনীসংক্ষেপ সম্পাদনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের প্রাক্তন সহপাঠী, একদল মধ্যবিত্ত ইরানী: সেপিদেহ, তার স্বামী আমির এবং তাদের ছোট মেয়ে; শোহরেহ ও তার স্বামী পেইমান এবং আরাশসহ তাদের দুই সন্তান, এবং নাজি ও তার স্বামী মানুচেহ্‌র, তিন দিনের ছুটি কাটাতে কাস্পিয়ান সাগরে যায়। এই ভ্রমণের পরিকল্পনাকারী সেপিদেহ, জার্মানি থেকে আসা তার এক তালাকপ্রাপ্ত বন্ধু, আহমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে, তার মেয়ের কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক এলিকে তাদের সাথে নিয়ে যায়।

সেপিদেহ সমুদ্রতীরবর্তী যে বাড়িটিতে থাকার পরিকল্পনা করে, তার দায়িত্বে থাকা মহিলা তাদের জানায় যে ঐ বাড়ির মালিকেরা পরের দিনই ফিরে আসবে এবং এর পরিবর্তে তাদেরকে একটি নির্জন সৈকত-সংলগ্ন বাড়ীতে থাকার পরামর্শ দেয়। সেপিদেহ এলি এবং আহমেদের সম্পর্ক সম্পর্কে বৃদ্ধার কাছে মিথ্যা বলে। সে বলে যে তারা বিবাহিত এবং তাদের মধুচন্দ্রিমা উপলক্ষ্যে সেখানে গিয়েছে।

এলি একটু লাজুক, কিন্তু সে তার প্রতি আবেগ প্রদর্শনকারী আহমেদের প্রতি আগ্রহ অনুভব করতে শুরু করে। সে তার মাকে ফোন করে মিথ্যা বলে যে সে তার সহকর্মীদের সাথে সমুদ্রের ধারের একটি রিসোর্টে আছে এবং জানায় যে সে পরের দিন তেহরানে ফিরে যাবে। কিন্তু সেপিদেহ তাকে চলে যেতে দিতে চায় না, তাই তার মালপত্র লুকিয়ে রাখে। তাদের মধ্যে একজন এলিকে সমুদ্রের ধারে খেলতে থাকা শিশুদের ওপর নজর রাখতে বলে। পরবর্তীতে, আরাশকে সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায় কিন্তু এলিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। আরাশের জ্ঞান ফিরে আসে কিন্তু এলি কি ডুবে গেছে নাকি তেহরানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে তা কেউই বুঝে উঠতে পারে না। সবাই এলিকে খুঁজতে শুরু করে এবং পুলিশকেও খবর দেয়া হয়। দলের সদস্যরা এলির অন্তর্ধান এবং ভ্রমণে তার উপস্থিতির জন্য একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করে।

যাইহোক, পরিস্থিতি যেমনটা মনে হয় ঠিক তেমন নয়, দেখা যায় যে সেপিদেহ শুরু থেকেই মিথ্যা বলছে এবং সে জানে যে এলি আগেই আলিরেজা নামের একজনের সাথে বাগদান করেছিলো। যেহেতু এলি, আলিরেজাকে বিয়ে করতে অনিচ্ছুক ছিল, তাই সেপিদেহ জোর দিয়ে তাকে আহমাদের সাথে দেখা করাতে নিয়ে আসে। শুরুতে একজন বাগদত্তা হিসেবে আমন্ত্রন প্রত্যাখ্যান করলেও সেপিদেহ জোর করায় এলি আসতে রাজী হয়। আলিরেজা এসে আহমেদকে আক্রমণ করে, তারপর সেপিদেহকে জিজ্ঞেস করে যে এলি তাদের সাথে যাওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলো কিনা। সেপিদেহ এলির সম্মান রক্ষার্থে সত্য বলতে চায় কিন্তু অন্যদের চাপের মুখে সে মিথ্যা বলে যে, এলি বিনা দ্বিধায় তাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।

চূড়ান্ত দৃশ্যে, আলিরেজাকে একটি মর্গে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এলিকে শনাক্ত করতে দেখা যায়।[৩]

কুশীলব সম্পাদনা

অভ্যর্থনা সম্পাদনা

চলচ্চিত্রটি এর নিজ দেশে মুক্তির পর সমালোচকদের দ্বারা চরমভাবে প্রশংসিত হয়। মুক্তির এক বছর পর, এটি ন্যাশনাল সোসাইটি অফ ইরানিয়ান ক্রিটিক্স কর্তৃক সর্বকালের সেরা ইরানি চলচ্চিত্রের তালিকায় চতুর্থ তম নির্বাচিত হয়।[৪] সমালোচনা পর্যালোচনাকারী ওয়েবসাইট রটেন টম্যাটোসে ৭০ টি রিভিউ এর ওপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্রটির রেটিং ৯৯% এবং ৮.১/১০।[৫] মেটাক্রিটিকে, ২৮ টি পর্যালোচনার উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্রটি ১০০ এর মধ্যে ৮৭ স্কোর অর্জন করেছে।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "«علي سرتيپي» در گفت‌وگو با فارس: فروش تهران «درباره الي» هم ميلياردي شد"। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২০ 
  2. Bradshaw, Peter (সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১২)। "About Elly – review"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৫ 
  3. About Elly Review - The Guardian
  4. Brady, Tara (সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১২)। "About Elly"The Irish Times। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৫ 
  5. "About Elly (2015)"Rotten Tomatoes। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৫, ২০২০ 
  6. "About Elly Reviews"Metacritic। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৫, ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা