তারানেহ আলিদুস্তি

ইরানী অভিনেত্রী এবং অনুবাদক

তারানেহ আলিদুস্তি (ফার্সি: ترانه عليدوستی, জন্ম: ১২ জানুয়ারি ১৯৮৪) একজন ইরানি অভিনেত্রী এবং অনুবাদক। ১৭ বছর বয়সে আ'ম তারানেহ, ১৫ (২০০২) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি অভিনয় শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে দা বিউটিফুল সিটি (২০০৪), মডেস্ট রিসেপশন (২০১২) প্রভৃতি চলচ্চিত্রের জন্য প্রশংসা লাভ করেছিলেন। সানেট সিনেমা ম্যাগাজিনের ১৩০ জন চলচ্চিত্র সমালোচকদের মধ্যে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় তাকে দশকের সেরা ইরানি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছিল। এছাড়াও তিনি ইরানের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী হিসাবেও বিবেচিত হয়েছেন। ২০১২ সালে, ফিল্ম মাসিক ম্যাগাজিনের অনুরূপ একটি পোলও তাকে দশকের সেরা অভিনেত্রী হিসাবে নির্বাচন করেছিল।[১][২] ২০১৭ সালে, আলিদুস্তি ৮৯তম একাডেমি পুরস্কার বর্জনের ঘোষণা দেন।

তারানেহ আলিদুস্তি
ফার্সি: ترانه عليدوستی
একজন নারীর আবক্ষ আলোকচিত্র
মে ২০১৬ সালে শাহজাদ'র প্রথম প্রদর্শনী সমাপনি অনুষ্ঠানে আলিদোস্তি
জন্ম (1984-01-12) ১২ জানুয়ারি ১৯৮৪ (বয়স ৪০)
জাতীয়তাইরানি
পেশা
  • অভিনেত্রী
  • অনুবাদক
কর্মজীবন২০০২–বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীআলি মানসুর (বি. ২০০১)
সন্তান
পিতা-মাতা

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

তারানেহ আলিদুস্তি ১২ জানুয়ারি ১৯৮৪ সালে ইরানের তেহরানে জন্ম নেন। তার বাবা হামিদ আলিদুস্তি ইরান জাতীয় ফুটবল দলের একজন অবসরপ্রাপ্ত খেলোয়াড়, যিনি বিদেশী দলের হয়ে খেলা প্রথম ইরানি এবং বর্তমানে পেশাদার ফুটবল কোচ।[৩] তার মা নাদেরেহ হাকিমেলাহি, একজন ভাস্কর এবং শিল্প শিক্ষক।

কর্মজীবন সম্পাদনা

আলিদুস্তি ১৭ বছর বয়সে আ'ম তারানেহ, ১৫ (২০০২) চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রে কাজ করা মধ্য দিয়ে অভিনয় কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সমালোচকরা ১৫ বছর বয়সী মেয়ে হিসাবে তার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন, যে একটি ব্যর্থ সম্পর্কের পরে দারিদ্র্য এবং সামাজিক কলঙ্কের সাথে লড়াই করতে নিজের শিশু প্রতিপালনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়। ২০০২ সালে তিনি লকার্নো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য ব্রোঞ্জ চিতা জিতেছিলেন।[৪] পাশাপাশি ২০তম ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য ক্রিস্টাল সিমোরোঘ লাভ করেন। স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আরো একটি রেকর্ড গড়েন, তার প্রথম তিনটি চলচ্চিত্রের জন্য ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভের মাধ্যমে। এরপর থেকে তিনি মঞ্চ এবং চলচ্চিত্র উভয় ক্ষেত্রেই বাছাইকৃত কাজের মাধ্যমে কর্মজীবনের প্রবাহ বজায় রেখেছেন। তিনি বেশিরভাগ চ্যালেঞ্জিং, নাটকীয় ভূমিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে তার পছন্দসই মানদণ্ডের জন্য পরিচিত, উদাহরণস্বরূপ অস্কার বিজয়ী পরিচালক আসগর ফরহাদির সাথে দীর্ঘকালীন সহযোগিতা, তাকে তার প্রজন্মের অন্যতম প্রশংসিত অভিনেত্রীতে পরিণত করেছে। আলিদুস্তি, ইরানের একজন বিশিষ্ট অভিনেত্রী হিসাবে অনেক পুরস্কার এবং প্রশংসা অর্জন করেছেন।

জনপ্রিয় ইরানি টেলিভিশন ধারাবাহিক শাহরজাদ-এর তিনটি মৌসুমে আলিদোস্তি নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

জার্মানইংরেজি ভাষায় সাবলীল আলিদুস্তি, ইংরেজি থেকে ফারসি ভাষায় অ্যালিস মুনরো এবং নিকোল ক্রাউসের বই অনুবাদ করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

আলিদুস্তি ২০১১ সালে আলি মানসুরকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাাদের একমাত্র মেয়ে হান্না। চাহারশ্বে সুরির (ইরানের নববর্ষ উৎসব) এক দুর্ঘটনায় তার একমাত্র ভাই মারা গিয়েছিলেন।

একাডেমি পুরস্কার বর্জন সম্পাদনা

২৬ জানুয়ারি ২০১৭ সালে, আলিদুস্তি তার অভিনীত দ্য সেল্‌সম্যান চলচ্চিত্র সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য মনোনীত হলে তিনি ৮৯তম একাডেমি পুরস্কার বর্জনের ঘোষণা দেন,[৫] মূলত ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ইরানিদের উপর ভিসা ভ্রমণের কঠোর বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবনার প্রতিবাদে হয়েছিল।[৬]

চলচ্চিত্রের তালিকা সম্পাদনা

 
মে ২০১৬ সালে, দ্য সেল্‌সম্যান চলচ্চিত্রের সংবাদ সম্মেলনে আসগর ফরহাদি এবং সাহেব হোসাইনির সাথে আলিদুস্তি।
শিরোনাম বছর চরিত্র টীকা সূত্র
মান, তারানেহ, পাঞ্জদাহ সাল দারাম ২০০২ তারানেহ পার্নিয়ান শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী - ফজর চলচ্চিত্র উৎসব
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী - লকার্নো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
শাহার-এ-জিবা ২০০৪ ফিরুজেহ
জামশিদ অ্যান্ড খোরশিদ ২০০৫ খোরশিদ ফারসি সংস্করণে খোরশিদের চরিত্রে কণ্ঠ প্রদান
চাহারশানবে-সূরি ২০০৬ রুহি
কেনান ২০০৮ মিনা
শিরিন তারনেহ আলিদুস্তি
তারডিড ২০০৯ মাহতাব
ডারবারেয়ে এলি এলি
Raz Dasht Taran ২০১০ পরিষেবক
জান্দেগি বা চেশমানে বাস্তে পারাস্তও
হোয়াটেভার পড ওয়ান্টস পারমিডা
পাজিরেই সাদেহ ২০১২ লেইলা
অ্যাট দ্য এন্ড অফ এইটথ স্ট্রিট নিলুফার
আসেমানে জারদে কাম অমঘ ২০১৩ ঘজাল
দ্য ওয়েডলক ২০১৪ সাঁজ
মাদার-এ ঘাইব আতোমি ২০১৫ অরিনেহ
এস্তেরাহাতে মোতলাঘ সামিরা
ফ্রুশান্ডে ২০১৬ রানা এতেসামি

টেলিভিশন সম্পাদনা

বছর শিরোনাম চরিত্র নেটওয়ার্ক
২০১৫–২০১৮ শাহরজাদ শাহরজাদ সা'দাত শিল্প নেট

পুরস্কার ও মনোনয়ন সম্পাদনা

পুরস্কার এবং মনোনয়নের তালিকা
সংগঠন অনুষ্ঠানের তারিখ বিভাগ কাজ ফলাফল সূত্র
ফজর চলচ্চিত্র উৎসব ২০০২ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী মান, তারানেহ, পাঞ্জদাহ সাল দারাম বিজয়ী
লকার্নো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বিজয়ী
ফজর চলচ্চিত্র উৎসব ২০০৪ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী শাহার-এ-জিবা মনোনীত
সিনেফ্যান ফেস্টিভ্যাল অব এশিয়ান অ্যান্ড আরব সিনেমা ২০১২ প্রতিযোগিতা পুরস্কার পাজিরেই সাদেহ বিজয়ী
ভেসুল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৩ আন্তর্জাতিক জুরিদের বিশেষ উল্লেখ বিজয়ী
ফজর চলচ্চিত্র উৎসব শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী দ্য স্যালো ইয়ালো স্কাই মনোনীত
১৬৩ম হাফেজ পুরস্কার ২০১৬ শাহরজাদ মনোনীত

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Film Magazine"। ১২ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৯ 
  2. "Caffecinema"। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৯ 
  3. "Profile: Hamid ALIDOUSTI"। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৯ 
  4. "Locarno holds up a mirror to the Middle East"। Swissinfo। ২০১৩-১২-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০১ 
  5. "Taraneh Alidoosti boycotts the Oscars to protest Trump's Muslim visa ban"The Independent। ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  6. Dehghan, Saeed Kamali। "Iranian Oscar contender: I'll boycott awards over Trump's 'racist' visa ban"। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা